সুদসহ ঋণের টাকা পরিশোধ সত্ত্বেও ঢাকার লালবাগে ৬তলা ভবন নিলামে তোলার ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানি শেষে গতকাল বুধবার আবু তাহের মো: সাইফুর রহমান এবং বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিকে ২ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালত বলেন, উত্তরা ব্যাংক তাদের গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বড় ধরনের জালিয়াতি করেছে। মৃত ব্যক্তির নামে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে যা মেনে নেয়া যায় না। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তুষার কান্তি দাস। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।
সরকারের এই আইন কর্মকর্তা জানান, ২০১০ সালের ৩ অক্টোবর উত্তরা ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখা থেকে লালবাগের বাসিন্দা মো: হামিদ উল্লাহ ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। শর্ত অনুযায়ী তিনি ঋণের টাকা সুদসহ পরিশোধ করেন। এর মধ্যে গত বছর ২২ এপ্রিল মো: হামিদ উল্লাহ ইন্তেকাল করেন। তার ওয়ারিশ হিসেবে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। হঠাৎ গত বছর উত্তরা ব্যাংক মরহুম হামিদ উল্লাহর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা পাওনা বলে দাবি করে।
পরে ১০ লাখ টাকা আদায়ের জন্য মৃত হামিদ উল্লাহর কয়েক কোটি টাকা দামের লালবাগের ৬তলা ভবন নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয় উত্তরা ব্যাংক। নিলামের তারিখ ছিল গতকাল ১৬ নভেম্বর। এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৮ নভেম্বর হামিদ উল্লাহর পুত্র মো: রাসেল রিট করেন। রিট পিটিশনের পর ১৫ লাখ টাকা ঋণের সুদসহ ২৪ লাখ টাকা পরিশোধের সমস্ত নথি আদালতে দাখিল করেন। গত ১৩ নভেম্বর রিটের শুনানি শেষে ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখা ম্যানেজারকে তলব করেন আদালত।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ নভেম্বর ব্যাংকের ম্যানেজার আবু ইউসুফ পাটোয়ারি হাইকোর্টে হাজির হন। কিন্তু তিনি ঋণ পরিশোধের পরও ৬তলা ভবন নিলামে তোলার ঘটনার কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। পরে আদালত এ ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে নিলাম কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন