এক পার্লার কন্যা বান্ধবীর সহযোগীতায় সর্বনাশ হয়েছে সিলেটে দুই তরুণীর। নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে রাতভর গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ওই দু’জন। গত ২৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নগরীর পাঠানটুলাস্থ জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই তরুণী সিলেটের জালালাবাদ থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ মো.নাজমুল হুদা খান বলেন, ঘটনার ৫ দিন পর গত ২৮ আগস্ট দুই তরুণী জালালাবাদ থানায় দুইটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করলে রেকর্ড হয় মামলা। তবে এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতারর করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোহাইমিন রহমান রাহি, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ গ্রামের মৃত তহুর আলীর ছেলে জুবেল, পাঠানটুলা এলাকার আলী আকবরের ছেলে রানা আহমদ শিপলু ওরফে শিবলু, সুনামগঞ্জ সদর থানার হরিনাপাট গ্রামের ফরহাদ রাজা চৌধুরীর ছেলে নাবিল রাজা চৌধুরী ও সুজন এবং অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন ছাড়াও ধর্ষণ কাণ্ডে সহায়তাকারী পার্লার কন্যা তানজিনা আক্তার তানিয়া।
সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে আইএলটিএস কোর্স করতে সিলেট নগরীতে আসেন বালাগঞ্জ উপজেলার এক তরুণী। সে আরেক নাট্যশিল্পী তরুণীর সঙ্গে শাহজালাল উপশহরের একটি বাসায় থাকতেন। সে সুবাদে ওই এলাকার স্নেহা বিউটি পার্লারে গিয়ে তানজিনা আক্তার তানিয়া নামের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তানিয়া সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়সিদ্দি গ্রামের দবির মিয়ার মেয়ে। তিনি শাহজালাল উপশহরের এইচ ব্লকের ৪নং রোডের আলী ভিলা নামক বাসায় ভাড়া থাকেন।
পরিচয়ের এক পর্যায়ে তানিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে আইএলটিএস করতে আসা তরুণীর। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সুবাদে গত ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানিয়া ফোন করে ওই তরুণীকে বলে, তার ভাইয়ের জন্য এবি পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন। ওই তরুণীর এবি পজেটিভ রক্ত হওয়ায় তিনি যেন এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার জন্য যান রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে। এমন ফোন পেয়ে ওই তরুণী তার বন্ধবীকে নিয়ে যান রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালের সামনে। সেখানে গিয়ে তানিয়াকে দেখতে পেয়ে রক্ত দেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওই দুই তরুণীকে তিনি জানান, রক্ত দেয়ার আগে তার এক কাজিনের বাসায় একটু প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন শেষ করে হাসপাতালে যাবেন তারা। এ কথা বলে কৌশলে ওই দুই তরুণীকে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ৪র্থ তলায় নিয়ে যান তানিয়া এবং তাদের দুজনকে বসিয়ে রাখেন আলাদা কক্ষে। এসময় তানিয়ার সহযোগী কয়েকজন যুবক এসে ওই দুই তরুণীকে আটকে রাখেন এবং রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১০-১২ জন যুবক দুজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এছাড়াও ভুক্তভোগী এক তরুণীর কাছ থেকে তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যান তানিয়া ও ধর্ষকরা। পরদিন দুপুর ১টার দিকে দুই তরুণীকে একি কক্ষে নিয়ে তাদের কাছ থেকে ‘ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি’ এ মর্মে স্বীকারোক্তি নেয়া হয় এবং এ কথাগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন