নারায়ণগঞ্জে বিএনপির শান্তিপূর্ণ র্যালীতে নির্বিচার গুলি চালিয়েছে পুলিশ। নবাগত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ ব্যাপক লাঠি চার্জ ও অজ¯্র গুলি বর্ষণে নিহত হয়েছেন যুবদল কর্মী। সে ফতুল্লার নবীনগর এলাকার মৃত শাহেদ আলীর ছেলে যুবদল কর্মী শাওন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি আজমীর ইসলামসহ পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক, বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। পুলিশের টিয়ার শেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় মর্গ্যান স্কুলের ছাত্রীরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার এলাকা পরিনত হয় রনক্ষেত্রে। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশকে এমন বেপরোয়া আও কখনো দেখা যায়নি বলে মন্তু করেছেন একজন বয়োজোষ্ঠ নগরবাসী ফরিদ বেপারাী। ঘটনাস্থলে শাওন নিহত হবার খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত নেতাকর্মীরা এবার পুলিশকে প্রতিরোধ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ অজ¯্র গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা শাওন হত্যায় মাঠ ছাড়েননি। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে বিএনপিকে এতটা নেতাকর্মীর মাঠে না
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে পুলিশ বিএনপি সংঘর্ষ। ওদিকে দুপুর ১২টায় খবর আসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাথায় গুলিবিদ্ধ সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হোসেন সুজন মারা গেছেন। এ খবর পৌছার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে দফায় দফায় সংঘর্ষ বেধে যায় পুলিশ-বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। একপর্যায়ে পুলিশ কিছুটা পিছু হটতে বাধ হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল) আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ। তিনি বলেন, শাওন মাহমুদকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার শরীরে গুলির চিহ্ন আছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, আমাদের ফতুল্লার নবীনগর ইউপি যুবদল নেতা শাওন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আমাদের জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রাকিব রাজসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শতাধিক।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, শাওন ফতুল্লা থানা যুবদলের সদস্য। গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. গোলমমাম ফারুক খোকন জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। এ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব থেকে যুবদলের একটি মিছিল বের করি। মিছিল নিয়ে সামনের দিকে যাওয়া মাত্রই পুলিশ আমাদের উপর অর্তকিতে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন নামে আমাদের এক কর্মী ঘটনা স্থলেই নিহত হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, অনুমতি ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা সকালে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ শুরু করেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে। ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন