শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

লুঙ্গিকান্ডে মারামারি: অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি

ইবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪:৫১ পিএম

লুঙ্গিকান্ডে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আলী হাসান ও প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকী দুজন হলেন ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন ও সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম।

প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক রিপোর্ট ভিসি স্যারকে প্রেরণ করেছি। তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

জানা যায়, গত মাসের ২৭ আগস্ট লুঙ্গি পরে ক্যাম্পাসে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল' এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হুজ্জাতুল্লাহ ভূইয়া। এ ঘটনায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহরুল ইসলাম রিংকু তাকে শাসায় ও মারধর করে বলে অভিযোগ করেন হুজ্জাতুল্লাহ।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩১ আগস্ট দিবাগত রাতে ১২-১৫ জন শিক্ষার্থী মিলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করে রিংকু।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর আল আমীনসহ তার বন্ধুদের মারধর করে রিংকু ও তার বন্ধুরা। এসময় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রিংকু, হামজা এবং লোক প্রশাসন বিভাগের জামিলসহ আরও কয়েকজন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন আল আমীন। পরে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মজুমদারসহ সিনিয়র কর্মীরা সবাইকে হলে পাঠিয়ে দেন।

এরপর সবাই হলে চলে গেলে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিংয়ে খেতে গেলে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক মারধরের শিকার হন। এসময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ্র ভৌমিক, অর্ক এবং আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সুমন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন আশিক।

এদিকে আশিককে মারধরের ঘটনা জানার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে তার বন্ধুরা লাঠি, রড, স্ট্যাম্প নিয়ে বের হন। এদিকে জিয়াউর রহমান হলে আল আমীন ও সিনিয়ররাও রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প নিয়ে মহড়া দিতে থাকে। পরে ছাত্রলীগের সিনিয়র কর্মীরা দুই পক্ষকে শান্ত করেন।

মারামারিতে আহত মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাসওয়ার খন্দকার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগ পত্রে তাসওয়ার বলেন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের জহিরুল ইসলাম রিংকু, হামজা, লোক প্রশাসন বিভাগের জামিল, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের আশিক, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আশিক কোরাইশি, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জিহাদ ও মিনহাজসহ কয়েকজন শুক্রবার নামাজ শেষে ফেরার পথে তার উপর আক্রমন করে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রক্টর বরাবর পালটা লিখিত অভিযোগ দেয় রিংকু। অভিযোগে হুজ্জাতুল্লাহ সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তার উপর হামলার অভিযোগ করেন।

এদিকে অভিযুক্ত লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জামিলের নামে রয়েছে সিনিয়রকে হেলমেট দিয়ে পেটানোর অভিযোগ। গত ডিসেম্বরে লেক সংলগ্ন রাস্তায় হাঁটছিল মার্কেটিং বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী তার দুই সহপাঠী। এমন সময় শাখা ছাত্রলীগ কর্মী লোক প্রশাসন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জামিল প্রচন্ড স্পিডে ওই রাস্তা দিয়ে বাইক চালাচ্ছিল। বাইক ওই শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুদের অতিক্রম করার সময় তারা জামিলকে ডেকে এত জোরে বাইক চালাচ্ছে কেন তা জানতে চায়। এসময় জামিল তাতে কি হয়েছে বলে তেড়ে আসে। ওইসময় প্রশ্নকারী সিনিয়র জামিলের পরিচয় জানতে চাইলে জামিল বলে আমাকে ক্যাম্পাসে সবাই চিনে, তুই চিনিস না কেন? এ কথার পরবর্তীতে জামিল ও তার বন্ধুরা মিলে ওই সিনিয়রকে হেলমেট দিয়ে পেটাতে থাকে। ওইসময় ওই শিক্ষার্থী নিজেকে একজন মাস্টার্স পড়ুয়া ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মজুমদারের সহপাঠী দাবি করলে তারা তাকে লেকের ধারের বাঁশ নিয়ে মারতে উদ্যোত হয়। এ ঘটনায় জামিলের বিরূদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এছাড়াও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হামজা নূরের নামে মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন