৫ দাবি আদায়ে লক্ষ্যে সিলেটে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করেছে সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। এতে অচল হয়ে পড়ে সিলেট। সেই সাথে সৃষ্টি হয়েছে চরম দুর্ভোগে। কিন্তু এই জনদুর্ভোগের জন্য সরাসরি সিলেটের প্রশাসনকে দায়ী করেছেন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি হাজী মইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সিলেটের প্রশাসন, কিসের জন্য কোন লোকের জন্য সরকারের ক্ষতি করছে, আপনারা আ.লীগ সরকারকে ভালো পান না, ভালো চান না, আমাদেরকে ঢেলে দিচ্ছে সরকারের বিরোধীতায়। তিনি আরো বলেন, সিএনজি অটোরিকশাকে কেন্দ্র করে টোকেন বাণিজ্য চালাচ্ছে পুলিশ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা রাজপথ ছাড়বে না। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে বন্ধ রয়েছে সব ধরণের যান চলাচল। জেলা ও আন্তঃজেলা সড়ক সম্পূর্ণ ফাঁকা। সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন মোড়ে ও নগরের প্রবেশ পথে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন পরিবহন শ্রমিকরা। ব্যক্তিগত গাড়ি, পন্যবাহি গাড়ি এমনকি বিআরটিসি বাস চলাচলেও বাধা দেয় তারা। শ্রমিকদের পিকেটিংয়ের কারণে কোন গাড়িই সড়কে চলাচল করতে পারছে না। বন্ধ রয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশাও। ফলে চরম দুর্ভোগে পরেছেন যাত্রীরা। দূর-পাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি নগরী ভেতরে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
এদিকে, সিলেটে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখে প্রশাসনের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। আজ দুপুরে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের আহ্বানে তার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন এ তথ্য জানান।
পরিবহন শ্রমিকদের ৬টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ’ সিলেট জেলায় এই কর্মবিরতির ডাক দেয়। দাবি পূরণ না হলে আজ থেকে পুরো বিভাগে কর্মবিরতি শুরুর হুমকি দিয়েছে তারা। কয়েকদিন ধরেই পাঁচ দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে পরিবহন শ্রমিক সংগঠন। দাবি পুরণ না হওয়ায় গতকাল থেকে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি।
এদিকে গতকাল দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত ধর্মঘটের বিষয়ে কোনো সুরাহা করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন জানান, আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মানলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব। গতকাল শুধু সিলেট জেলায় ধর্মঘট পালন করা হয়েছে। দাবি মানা না হলে আজ থেকে বিভাগজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।
অপরদিকে, ৫ দফা দাবি আদায়ের সাথে সংযুক্ত হয়েছে আরো একটি দফা। এখন ৬ দফার দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকরা। নতুন দাবি সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়ির ড্রাইবার ছাড়ার অন্য কাউকে আসামি করা যাবে না। কারণ গাড়ি চালায় ড্রাইবার। সেখানে হেলপার, মালিক বা অন্য কারো সক্রিয় ভূমিকা নেই, তাহলে বাকীদের আসামি করা হবে, সেই সাথে জামিনযোগ্য ধারায় ড্রাইবারের মামলা নিতে হবে বলেও তাদের দাবি।
গতকাল সকালে সিলেট ঢাকা-মহাসড়কের অতিরবাড়ি, চন্ডিপুল, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, কদমতলী সহ বিভিন্ন উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পিকেটিং করে পরিহন শ্রমিকরা। এতে কোনো ধরণের গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়ি চলতে পারেনি। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা এবং চাকরিজীবীরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েন ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন