ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দখল থেকে ইরাকের দ্বিতীয় প্রধান শহর মসুলকে পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার গত সোমবার এমন কথাই জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমকে। আগামী ২০ জানুয়ারির আগে মসুল পুনরুদ্ধার সম্ভব কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাশটন কার্টার বলেন, এটি অবশ্যই সম্ভব। তবে এটি অবশ্যই একটি কঠিন লড়াই হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অবশ্যই এখানে (মসুলে) আবহাওয়ার একটি বিষয় রয়েছে। ইরাকি বাহিনী যে কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মসুল উদ্ধারে সরকারি বাহিনীর অগ্রাভিযান রুখতে এরইমধ্যে ব্যাপক পাল্টা হামলা শুরু করেছে আইএস। মসুলের পাশাপাশি ইরাকের অন্য শহরগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে তারা। প্রসঙ্গত, কয়েক মাসের প্রস্তুতি শেষে গত ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে আইএসের সর্বশেষ শক্তিশালী ঘাঁটি মসুল উদ্ধারে অভিযানে নামে প্রায় এক লাখ ইরাকি যৌথবাহিনী ও কুর্দি পেশমেরগা যোদ্ধারা। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সেনা সরাসরি এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলেও দেশটির যুদ্ধবিমানগুলো অভিযানের শুরু থেকেই অব্যাহত হামলা চালিয়ে সরকারি বাহিনী সহায়তা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধাও সরকারের পক্ষ হয়ে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। চারপাশ থেকে আসা যৌথবাহিনীর হামলার ফলে বিশাল এলাকা হারিয়ে এরই মধ্যে শহরটিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আইএস। তারপরও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যাপক পাল্টা হামলা চালিয়ে সরকারি বাহিনীকে প্রতিরোধ করে যাচ্ছে জিহাদি গোষ্ঠীটি। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মসুল উদ্ধার অভিযানে একটি দীর্ঘ লড়াই হতে যাচ্ছে। তারপরও কার্টার ২০ জানুয়ারির আগেই মসুল পুনরুদ্ধারের কথা জানালেন। তবে আইএসের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ার পরও সরকারি বাহিনী ঠিক কীভাবে এই সময়ের মধ্যে উদ্ধার অভিযান শেষ করবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। কার্টার বলেন, ইরাকের মতো দেশগুলোতে যৌথবাহিনীতে সাহায্য দিয়ে যাওয়ার রীতি অব্যাহত রাখা জরুরি। পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ ও অভিযানও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এ ছাড়া ইতোমধ্যে আইএসের দখল থেকে মুক্ত করা অঞ্চলগুলোতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে স্থানীয় পুলিশ, সীমান্তরক্ষী ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেয়া দরকার। এর আগে গত শনিবার ক্যালিফোর্নিয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জোটবাহিনীর সেনারা চাইলে ইরাকে থেকে আইএস হটানোর পরও সেখানে আরও কিছুদিন থেকে যেতে পারে। কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহর মসুল ২০১৪ সালের জুন থেকে আইএসের দখলে রয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠীটির প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি তার খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়ার জন্য এই মসুলকেই বেছে নিয়েছিলেন। এ কারণেই মসুল পুনরুদ্ধারের একটি প্রতীকী মূল্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই অভিযানে এরই মধ্যে এক হাজারের বেশি আইএস সদস্য নিহত হলেও, ধারণা করা হচ্ছে মসুলে এখনো পাঁচ হাজারের বেশি জিহাদি সদস্য রয়েছে। রয়টার্স, আল-জাজিরা, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন