শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রমেকে রোগী হয়রানির অভিযোগ

রেহাই পাননি হাসপাতালের ডাক্তারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার চিকিৎসক কর্তৃক রোগী হয়রানী ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে হাসপাতালের প্রশাসনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী হয়রানীসহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতি চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে রোগী হয়রানী, রোগী ভর্তি করতে উৎকোচ গ্রহণ, লাশ নিতে উৎকোচসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের খবর প্রায়ই বিভিন্ন পত্র -পত্রিকায় শিরোনাম হচ্ছে। এসব অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে হাসপাতালটি সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালনার দাবি উঠলেও এ বিষয়ে ভ্রæক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বরং দিনে দিনে এসব অনিয়মের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে হাসপাতালটি একটি দালাল চক্রসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের হাতে বরাবরই লাঞ্ছিত হচ্ছেন রোগীর সাথে আসা অভিভাবকগণ। অতিসম্প্রতি এরকম ঘটনা ঘটেছে ঐ হাসপাতালেরই একজন চিকিৎসকের সাথে। বি,এম রাশেদুল আমীর নামের ঐ চিকিৎসক তার অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে গেলে ঐ সিন্ডিকেটের কাছে নাজেহাল হয়েছেন। রোগী ভর্তি করাতে গিয়ে তাদের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় তার স্বজনদের চরমভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। পরে বাধ্য হয়ে তাদেরকে টাকা দিয়ে স্বজনরা তার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
পরে সিসিউতে ওয়ার্ড বয়ের দাবিকৃত টাকা না দিতে চাওয়ায় তিনিও লাঞ্ছিত হন। হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এ বি এম রাশেদুল আমীর এ নিয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, রমেক অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও দেয়া হয়।
ডাক্তার রাশেদুল আমীর জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। এসময় দালাল সিন্ডিকেট ২৫০ টাকা দাবি করে।
স্বজনরা এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মা পরিচয় দিলেও তারা ভর্তি বাবদ ৫০ টাকা নেন। যদিও হাসপাতালে নির্ধারিত ভর্তি ফি ২৫ টাকা এবং সরকারি কর্মকর্তার মা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ভর্তি ফি না নেওয়র কথা। এছাড়াও ভর্তি পরবর্তী সিসিইউতে মাকে নেয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত দুজন জোরপূর্বক তার ব্যক্তিগত সহকারির কাছ থেকে ২০০ টাকা বকশিস নেন। এ সময় তার নাম-পরিচয় এবং রোগী সম্পর্কে জানানো হলে তারা বলেন, স্যারের মা হোক আর যেই হোক টাকা দিতেই হবে। পরবর্তীতে আমি রাতে আসার পর মায়ের শয্যাপাশে অবস্থানকালে সিসিইউতে কর্মরত ওয়ার্ড বয় পরিচয়ধারী মাসুদ আমার কাছে সরাসরি টাকা দাবি করে। এ সময় আমি সেই কথাবার্তার কিছু মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করি। এ ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত মানসিক পীড়াদায়ক এবং অপমানকর।
যে প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক হিসেবে আমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে যদি আমিই হয়রানির শিকার হই তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা হয়রানী শিকার হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। সে সাথে হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের হয়রানি বন্ধ এবং সেবারমান বৃদ্ধিতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। ডাক্তার রাশেদুল আমীরের এই অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন