ইরানের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলীয় সীমান্ত শহর জাহেদানে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে আন্দোলনকারীরা। এর জেরে রোববার পাকিস্তানের সাথে সীমান্তের প্রধান পথ বন্ধ করে দিয়েছে তেহরান।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ইরানের সিস্তান ও বেলুতিস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নামাজের পরে শহরের মাক্কী মসজিদ থেকে স্থানীয় এক সেনা কমান্ডারের বিরুদ্ধে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর এ আন্দোলন শুরু হয়।
ইরানের বিল্পবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রদেশীয় গোয়েন্দা প্রধান আলী মৌসাভী শুক্রবারের সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হন এবং হাসপাতালে মারা যান।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে উগ্রবাদী আল-আদল বাহিনী। তারা সিস্তান ও বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা এবং এই প্রদেশের প্রধান জাতিগোষ্ঠী বেলুচদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্থানের কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত সংস্থার এক কর্মকর্তা আরব নিউজকে জানিয়েছে, ইরানি কর্তৃপক্ষ জাহেদান থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে তাফতান বর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘তারা পাকিস্তান থেকে ইরানে কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘শনিবার বিদেশীসহ ৭৮০ জনকে পাকিস্থানে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু রোববার থেকে পথচারী পারাপার এবং সকল ধরণেল ব্যবসা বন্ধ রয়েছে।’
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সরদারজাদা উমায়ের মুহাম্মদ হাসানী বলেন, সীমান্ত বন্ধ হলে ইরান নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে ইরানে খাদ্য সরবরাহ করা হয়।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, সীমান্ত বন্ধের এ সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদের জন্য সুখকর হবে না।
তিনি আগের করা মন্তব্য থেকে সরে এসে বলেন, পাকিস্তান ও ইরানের সম্পর্ক আরো মজবুত করা উচিত। কারণ জাহেদানের হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের বেলুচ সম্প্রদায়কেও প্রভাবিত করেছে।
হোসাইনী বলেন, বেলুচরা সীমান্তের এপারে ওপারে দু’পাশেই বসবাস করছে। ইরানি বাহিনীর দ্বারা জাহেদানে নির্মমতায় বেলুচিদের আবেগ অনুভূতিতে আঘাত করেছে।
এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনে গোলাগুলিতে হতাহতদের নিয়ে ছুটাছুটি করছে। সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রশাসন বলছে, সহিংসতায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু প্রদেশের সাংবাদিকরা বলছেন, এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। এখনো সহিংসতা চলছে বলে জানান তারা।
তাফতানের সাংবাদিক অসিফ বুরহানজি আরব নিউজকে বলেন, জাহেদানের স্থানীয় সংবাদপত্রের তথ্যমতে, নিহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। কারণ গোলাগুলিতে আহতদের অনেকে ইরানি প্রশাসনের গ্রেফতারের আশঙ্কায় হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বেলুচ একটিভিস্ট ক্যাম্পেইন থেকে বলা হয়েছে, সহিংসতায় কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত আর ২৭০ জনের মতো আহত হয়েছে। সূত্র : আরব নিউজ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন