বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো শিল্পকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কতটুকু সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারি। গ্রামে কোথাও কোথাও আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। জ্বালানি ঠিকমতো না পেলে লোডশেডিং ম্যানেজ করা সম্ভব নয়। জ্বালানি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ দরকার, সেই পরিমাণ অর্থ আমাদের কাছে নেই। সেই পরিমাণ অর্থ নিয়ে যদি ডলার কিনতে চাই, তবে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। সেখানে আমরা কন্ট্রোলে আছি।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের সঙ্কটে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সূচি করে লোডশেডিং দিচ্ছিল সরকার। অফিস সময়েও আনা হয় পরিবর্তন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জারি করা হয় বিভিন্ন নির্দেশনা। তারপরও গত কয়েকদিনে দেশে লোডশেডিং আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিন-রাতসহ প্রায় সময় হচ্ছে লোডশেডিং। গরম কমে চাহিদা কমলে বিদ্যুৎ ম্যানেজ অর্থাৎ লোডশেডিং কমবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী ওইসব কথা বলেন। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিস সময় পরিবর্তন করা হলো, এখন আরও বেশি লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় খারাপের দিকে যাচ্ছে এটা সত্য কথা। তবে বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদের ধারণা ছিলো অক্টোবরের দিকে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে। কারণ তখন আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যাবে। কমের মধ্যে আমরা এটা ম্যানেজ করতে পারবো। এছাড়া আমরা জ্বালানি আনতে পারছি না, আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে আছে। তাপমাত্রা কমলে চাহিদা কমে যাবে। চাহিদা কমলে বিদ্যুৎ ম্যানেজ করতে পারবো।
তিনি বলেন, গরমের যে অবস্থা তাতে বিদ্যুতের চাহিদা আগের মতোই রয়ে গেছে। এটা একটা বড় বিষয়। আমি আশা করেছিলাম গ্যাসের দাম কমে আসবে বিশ্বব্যাপী। যদিও কিছুটা কমেছে স্পট মার্কেটে। কিন্তু যে গ্যাস ৫ ডলারে কিনতাম সেটা এখন ২৮ ডলার হয়েছে। আগস্টে ছিল ৪৭ ডলার। কমার পরও আমার জন্য তো এটা বেশি। এছাড়া ডলারের দামও বেড়েছে।
নসরুল হামিদ বলেন, আমি মনে করি, একটু ধৈর্য ধরা দরকার। গত মাসে বলছিলাম, অক্টোবর থেকে হয়তো আমরা লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসবো। আমাদের সাত হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে যা তেলে চলে। ১১ হাজার মেগাওয়াট রয়েছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাকি সোলার বা বিদেশ থেকে আনছি। সবকিছু মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট। পুরো সিস্টেমের মধ্যে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট আমি গ্যাসে চালাতে পারছি। দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এখন গ্যাস নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্পট মার্কেট থেকে যেটা নিতাম সেটা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। লোডশেডিংয়ের কারণে সবার কষ্ট হচ্ছে। গতকাল আমার বাড়িতে রাত দেড়টার পর বিদ্যুৎ ছিল না। সবাই ধৈর্য ধরেন, এটা একটা বিশেষ পরিস্থিতি। সামনের বছর আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে। এটা আমাদের কথা নয়, জাতিসংঘের কথা। কৃষিতে সেচ ব্যবস্থা সচল রাখাই প্রধান লক্ষ্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন