গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে : ওবায়দুল কাদের
নতুন যাত্রাপথে নতুন বাস : ডিএসসিসি মেয়র
রুটপারমিটবিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হবে না : ডিএনসিসি মেয়র
স্টাফ রিপোর্টার :
রাজধানীতে গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, রিকশা-সিএনজির জট ও বাসের নৈরাজ্য ও তীব্র যানজট সমস্যা দীর্ঘদিনের। গণপরিবহনের এসব বিশৃঙ্খলা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে ঢাকা নগর পরিবহনের আরও ১০০ বাস নামছে সড়কে। এই বাস সার্ভিস চলাচলের ফলে নগরীতে বাসের নৈরাজ্য অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে কাঁচপুর থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত ঢকা নগর পরিবহনের বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। চালুর পর থেকে প্রথম দিকে সার্ভিসটি নগরবাসীর মন জয় করতে পারলেও পরবর্তী সময়ে তাদের সুনাম ধরে রাখতে পারেনি। রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমে যাওয়া, বাসের ভাড়া বেশি নেয়া ও সাধারণ যাত্রীদের শিক্ষার্থীর টিকিট দিয়ে ভাড়া বেশি নেয়াসহ নানা অনিয়ম দেখা যায়। দীর্ঘ সময় পর পর বাস আসার কারণেও আস্তে আস্তে যাত্রী কমে যায়। এছাড়াও একই রুটে আরও অন্য সার্ভিস চলু থাকায়ও এই পরিবহনের যাত্রী কমে যায়। এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর এলাকার বসিলায় বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের আওতায় ২২ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন বাস সেবা উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহনের শৃঙ্খলা, রাস্তার শৃঙ্খলা এটি আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। সিটি করপোরেশনের বাস রুট রেশনালাইজেশনের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই এবং সবাইকে বলব আমাদের স্বার্থে এই উদ্যোগকে সফল করবেন। জনস্বার্থে সফল করতে হবে। এই নগরীতে, বাংলাদেশের সড়কে এত স্থাপনা কোনও কিছুই সত্যিকারের সুফল দেবে না, যদি শৃঙ্খলা না থাকে, রাস্তায় যদি শৃঙ্খলা না থাকে, পরিবহনে যদি শৃঙ্খলা না থাকে আমাদের উন্নয়ন বৃথা হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আগামী দিনে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় পর্যায়ক্রমে ঢাকা নগর পরিবহনের সকল নতুন যাত্রাপথে নতুন বাস নামানো হবে বলে জানান।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ২১ নম্বর যাত্রাপথে শুরু করেছিলাম। আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রতিক‚লতা ছিল যে, কি ধরনের বাস আমরা দিবো। আমরা সে সময় ১৯ সালের যে বাসগুলো ছিল, সেই বাসগুলো দিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু এবার ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণকল্পে নতুন নির্মিত ৫০টি বাস দিয়ে ২২ নম্বর যাত্রাপথ শুরু করছি। এখান থেকে পিছনে যাওয়ার আর সুযোগ নেই। এখন থেকে নতুন বাসই ঢাকা শহরে নামবে। কোনও পুরাতন বাস নামার আর সুযোগ থাকবে না। ভবিষ্যতে যখনই আমরা একেকটি যাত্রাপথ শুরু করব, আমরা নতুন বাস দিয়েই সেই যাত্রাপথ শুরু করব।
নগর পরিবহনে সেবার মান ধীরে ধীরে আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, এই তিনটি যাত্রাপথ শুরু করতে অনেক প্রতিক‚লতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের পরীক্ষামূলক ২১ নম্বর যাত্রাপথ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, সেটার মাধ্যমে আমরা এবার দুটো যাত্রাপথ শুরু করলাম। আগামী নভেম্বরে ২৩ নম্বর যাত্রাপথ আমরা শুরু করতে পারবো। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আমরা ঢাকা শহরের সকল যাত্রাপথে এই নতুন বাস দিয়ে ঢাকা নগর পরিবহনকে একটি সুশৃঙ্খল গণপরিবহন পরিণত করব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রুটপারমিটবিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হবে না। এক রাস্তার গাড়ি আরেক রাস্তায় চলতে পারবে না। নিয়মিত সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে তদারকি করতে হবে উল্লেখ করে উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমাদের কঠোর হতে হবে। এই নগরীকে বাসযোগ্য নগরী করে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিতে হবে। এই বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজে যারা আসবেন তারা লাভবান হবেন। এই রুটগুলোতে অন্য বাস চলতে দেয়া যাবে না, এজন্য বিআরটিএ এবং ডিএমপির সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাদেক খান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদসহ ডিএমপি, রাজউক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন