স্টাফ রিপোর্টার : অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদসহ দু’টি বিধান সংবিধানের মূল ভিত্তি ও কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে অতি তাড়াতাড়ি তা সরাতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের আইন পেশায় ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমান সংবিধানের ১১৬ ও ১১৬ (এ) সংবিধানের মূল নীতির সাংঘর্ষিক।...এ দুটো বিধান যে সংবিধানের পরিপন্থী, এটি আমাদের এই পবিত্র বই (সংবিধান) থেকে অতি তাড়াতাড়ি সরিয়ে ফেলার জন্য এখানে উপস্থিত সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানাব। এটি থাকায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বেশ ব্যাঘাত হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, জাতীয় সংসদ চাইলেই অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে পারে কিন্তু সংবিধানের মূল স্তম্ভ বাতিল করতে পারবে না। আমি কোনো এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম এদেশে দ্বৈত শাসন চলছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আইনমন্ত্রী বললেন যে, চলে না। প্রধান বিচারপতি আইনের অভিভাবক। সংবিধানের অভিভাবক হয়ে বলছি, এটি যদি না হয়, তাহলে আজকে আমরা বিচারকদের ডিসিপ্লিন রুলস কে করবেন? সরকার করবে না আমরা বিচারকরা করব? তাদের কন্ট্রোল, বদলি কোনো কিছুই আমরা করতে পারছি না। তাই এ অসাংবিধানিক প্রভিশনগুলো তাড়াতাড়ি সরিয়ে দেয়া হবে বলে আমি আশা করি। প্রধান বিচারপতি বলেন, যখনই সংবিধানকে লাইনচ্যুত করে বাঁকাপথে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তখনই সুপ্রিম কোর্ট এটিকে সোজা করে দিয়েছে। পবিত্র সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত হওয়া থেকে সুপ্রিম কোর্ট সবসময়ই রক্ষা করেছে। তিনি বলেন, আইনজীবীদের প্রাথমিক জীবন অনেক সময় কষ্টের এবং দুর্দশাগ্রস্ত হয়। তবে টাকার জন্য না দৌড়িয়ে যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এবং সংবিধান রক্ষায় আইনজীবীদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে। বিচারকরা আইন পেশায় জড়িত থাকলেও তারা চাইলেই সব কথা বলতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আবদুল বাসেত মজুমদারকে দেশের ৫৭টি আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন