প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি বলেছেন, বিগত ১৪ বছরে দেশের অর্থনীতিতে অকল্পনীয় অগ্রগতি হয়েছে। ২০০৮ সালে আমি চিন্তা করিনি ১০ বছর পর দেশ এ জায়গায় এসে পৌঁছাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তা আর পরিকল্পনার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি রোববার রাতে চট্টগ্রামের পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ-সিএসই ও বসুন্ধরা গ্রুপের এবিজি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সিএসইর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম ফারুক এবং এবিজি লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর চুক্তিতে সই করেন।
সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার মধ্য দিয়ে এবিজি এই পুঁজিবাজারের মালিকানায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো। এখন থেকে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে এবিজি লিমিটেড কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
দেশের পুঁজিবাজারে বসুন্ধরা গ্রুপকে স্বাগত জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, বসুন্ধরা সবসময় সাহসী উদ্যোগ নেয়। তারা যে উদ্যোগ নেয় পরবর্তীকালে তা অন্যরা অনুসরণ করে। সিএসই’র সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও বসুন্ধরা সফল হবে এবং অন্যরা তাদের অনুসরণ করবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাতের বিকাশে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। আর তাতে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা করোনার প্রভাব মোকাবেলা করেছি। তবে অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তড়িৎ পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিএসইর সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবিজি যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বাংলাদেশের অর্থনীতির একজন লিজেন্ডারি উদ্যোক্তা। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, দেশের উন্নয়নে বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময় দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেয়। সিএসই’র সঙ্গে যুক্ত হওয়া তেমনই এক দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। এর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় গোল্ড রিফাইনারির কথা বললেও কেউ সাহস করেনি। বসুন্ধরা তা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এটি পোশাক শিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে। বিদেশে অনেক বেশি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিশেষ অতিথি সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বসুন্ধরা সিএসই’র সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পুঁজিবাজারকে সমৃদ্ধ করবে। সিএসই’তে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, খাতুনগঞ্জ এবং চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী ট্রেডিং ব্যবসা সিএসই প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকে হয়ে আসছে। সেটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বর্তমান অর্থনীতিকে মানি মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেট এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যেও বিভিন্ন সময় দেশের অর্থনীতিকে নতুন নতুন প্রোডাক্ট ও স্টাডিজি দিয়ে প্রবৃদ্ধি ঠিকই ধরে রেখেছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। বক্তব্য রাখেন ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর পরিচালক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহান তানভীর, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিডিজি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আহমেদ ওয়ালিদ সোবহান, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন