আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে দাম নিয়ন্ত্রণে একসঙ্গে পুরো মাসের পণ্য না কেনার জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ সময় রমজান মাসের জন্য প্রয়োজনীয় ৬ পণ্য যেমন- ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, ছোলা, খেঁজুর ও চিনি মজুত রাখার কথাও জানান তিনি। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য আমদানিতে এলসি খোলাসহ সবধরনের সহযোগিতা সরকার প্রদান করবে। গতকাল গতকাল বুধবার সচিবালয়ে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিাতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের পঞ্চম সভা শেষে তারা এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, দেশের মানুষের প্রয়োজনীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও স্বাভাবিক মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সতর্ক হতে হবে। যাতে ন্যায়সংগত মূল্য নিশ্চিত করা যায়। সরকার সার্বিক বিষয়ে অবগত আছে। নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য আমদানিতে এলসি খোলাসহ সবধরনের সহযোগিতা সরকার প্রদান করবে। সকল ব্যাবসায়ীকে সততার সাথে সঠিক ব্যবসা করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, মশুর ডাল, ছোলা, খেজুর ও চিনি রমজান মাসে দরকারি পণ্য। এ ৬ পণ্য মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হবে। তাই আগামী রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। চিনির দাম অন্যান্য পণ্যের তুলনায় একটু বেশি উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থাা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চিনির ওপর ডিউটি কমানোর জন্য একটি চিঠি পাঠানো হবে। পেঁয়াজ, ছোলা ও খেজুরের সার্বিক পরিস্থিাতি ভালো রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারেও এসব পণ্যের দাম তেমন একটা বাড়েনি।
সয়াবিন তেল ও পাম তেল নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম তেমন একটা বাড়েনি। তাই এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম বাড়বে না। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হলে হয়ত দামের ওপর প্রভাব পড়বে। আমরা লক্ষ্য করেছি, পণ্য দুটির দাম ভালো পরিস্থিাতিতে রয়েছে। এ সময় দাম নিয়ন্ত্রণে আসন্ন রমজানে একসঙ্গে পুরো মাসের পণ্য না কেনার জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রোজা শুরু হওয়ার প্রথম সাতদিন পণ্য কেনায় যে উপচেপড়া ভিড় থাকে, তা দরকার নেই। সবাই ভাবে এক মাসের পণ্য একসঙ্গে কিনবেন, তা দরকার নেই। এ মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলা নিয়ে সমস্যার বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, এলসি খোলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, আমরা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলব। এ সমস্যা শিগগিরই সমাধান হবে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা কী পরিমাণ পণ্য কী দামে কিনেছে সেটির গড় মূল্য ধরেই রমজানে পণ্য মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তা ছাড়া পণ্যের যে দাম নির্ধারণ করা হবে, সেটি বাজারে কার্যকর করার জন্য মনিটরিং করা হবে। পণ্য আমদানি ও সরবরাহের সঙ্গে সমন্বয় করে যে দাম নির্ধারণ হবে, তা খুচরা বাজারে যেন মেনে চলা হয়, এ জন্য তদারকি করা হবে।
এসময় বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের খন্দকার নাজমূল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. আব্দুল হক, এফবিসিসিআই’র মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, ক্যাবের কাজী মো. আব্দুল হান্নান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা, ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী কোম্পানীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন