পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান নির্বাচনের জন্য সরকারের সাথে আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার একদিন পরে, দলের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘(প্রাদেশিক) বিধানসভা সদস্যদের তাদের নির্বাচনী এলাকায় ফিরে যাওয়ার এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন’।
গতকাল একটি টুইটে, চৌধুরী বলেছেন যে, ‘যদি পিডিএম নির্বাচন থেকে পালিয়ে যেতে থাকে,...আমরা পাঞ্জাব এবং (খাইবার) পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক নির্বাচনে যাব এবং জাতীয় পরিষদের নির্বাচন পরে অনুষ্ঠিত হবে’। পরে একটি টুইট বার্তায়, কেপি সরকারের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আলী সাইফ পিটিআই নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করেছেন যে ‘ইমরান খানের নির্দেশে খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভা ভেঙে দেয়া হবে’।
শনিবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহি এক টুইট বার্তায় আবারও ইমরানের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ‘আমরা পাঞ্জাব বিধানসভা ভেঙে দেয়ার জন্য ইমরানের সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা যাকে সমর্থন করি তার প্রতি আমরা অনুগত থাকি।’ এলাহিও ইমরানের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা ইমরান খানের পাশে আছি এবং তার পাশে দাঁড়াবো।’
পিটিআই মিত্র আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রধান শেখ রশিদ বলেছেন, ‘হয় ইমরান ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ পাবেন অথবা সংসদ ভেঙে দেবেন; তারা রাজনীতি করবে নাকি ভাঙবে বল সরকারের কোর্টে।’ তিনি ‘জনগণের মধ্যে যাওয়ার’ অবস্থায় না থাকার জন্য সরকারের নিন্দা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে, সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল ‘তাদের অর্থনীতির ময়নাতদন্ত পরিচালনা করেছেন’।
এর আগে ইমরান খানের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পিটিআই-কে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠায় পাকিস্তানের সরকার। তবে সেখানে কোনও ‘শর্ত’ রাখা যাবে না বলে জানিয়েছেন শাহবাজ শরিফ সরকার। শনিবার এ ইস্যুতে সাংবাদিক সম্মেলনে করেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। সেখানে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ঘোষণা নিয়ে বিরোধীদল পিটিআই-র সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত। আর এক্ষেত্রে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। তবে হুমকি আর আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।’ তাই কোনও রকম শর্ত ছাড়াই আলোচনা হতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০২৩-র এপ্রিলে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চলতি বছরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার পরই নির্বাচন এগিয়ে আনার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন ইমরান খান। সরকারের উপর চাপ বাড়াতে ইসলামাবাদ পর্যন্ত বিরাট মিছিলও করেছেন তিনি। সেই মিছিলে ইমরান গুলিবিদ্ধ হওয়ায় চাপ পড়ে যায় শাহবাজ শরিফ সরকার। এই আবহে শুক্রবার পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান ঘোষণা করে দেন, অবিলম্বে নির্বাচনের দিন ঘোষণা না হলে তার দলের সমস্ত বিধায়করা গণইস্তফা দেবেন। পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ইমরানের দলের সরকার রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পিটিআই-র বিধায়করা গণইস্তফা দিলে পাকিস্তানে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে দু’দু’টি প্রদেশে পড়ে যাবে সরকার। সেই কারণে এরকম বাধ্য হয়েই ইমরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছে শাহবাজ শরিফ সরকার। শনিবার এই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক বলেন, ‘সমঝোতা রাজনীতির অঙ্গ। জটিল সমস্যা সমাধানে এই পদ্ধতি বারবার ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ইমরানের দলকে এবার ঠিক করতে হবে, তারা কখন কথা বললেন এবং কী নিয়ে কথা বলবেন। আলোচনার টেবিলে এসে গুটিয়ে গেলে চলবে না। আমরাও খোলা মনে সবটা বুঝে নিতে চাই।’ সূত্র : ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন