পূর্ব সুন্দরবন থেকে অপহৃত ১৫ জেলে ছয়দিন পরে ডাকাতদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার ভোররাতে পৃথক তিনটি জেলে নৌকায় করে তিনজন শরণখোলা উপজেলার দক্ষিন রাজাপুর ও চারজন সোনাতলা গ্রামে এবং আটজন মোংলার চাদপাঁই এসে পৌছায়। এদের মধ্যে ডাকাতের মারপিটে আহত তিনজনকে শরণখোলা থানা পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করিয়েছেন। চিকিৎসা নেয়া জেলেরা হচ্ছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা কাসিমপুর গ্রামের সোহেল মল্লিক (২৮), মোংলা উপজেলার বাজিকর খন্ডের আসাদুল শেখ (৩৫), রামপাল উপজেলার বেতকাঠা গ্রামের হানিফ হাওলাদার (৪৫)। এতিন জেলের মহাজনরা টাকা দিতে না পারায় ডাকতদল তাদের মারপিট করেছে বলে তারা জানায়। এছাড়া শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের জেলে সালাম হাওলাদার (৬৫), ইমাম খান (২৫), সোলেমান হাওলাদার (৩০) ও ইউসুফ হাওলাদার (৩৫) দশ হাজার টাকা মুক্তিপন দিয়ে ছেড়ে এসেছেন বলে তারা জানান। অপরদিকে মোংলার চাঁদপাই ফিরে আসা জেলেদের মোংলা পুলিশ উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়ে গেছে। এরা হচ্ছে, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বুঝবুনিয়া গ্রামের আকরাম শেখ (৪২), রফিকুল খান (৩৫), মোংলা উপজেলার দক্ষিন হলদিবুনিয়া গ্রামের মিলন শেখ (২৩), আনিস শেখ (২২), বৈদ্যমারী গ্রামের শুকুর আলী ব্যপারী (৩০), মনির ব্যপারী (৩৫), রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের বকতিয়ার ব্যাপারী (৩৫) এবং রূপসা উপজেলার আলি শিকদার (৪৮)। ফিরে আসা জেলেরা জানায়, মঙ্গলবার রাতে সুন্দরবনের হরিণটানা এলাকার একটি খালে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে তারা সারারাত নৌকা চালিয়ে বুধবার ভোরে লোকালয়ে এসে পৌছান। নয়ন বাহিনী নাম দিয়ে সাতজনের নতুন এ ডাকাত দলের কাছে দুইটি পাইপগান ও বেশ কয়েকটি দা রয়েছে। ডাকাত দলের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপনের দাবীতে এখনো একটি ট্রলারসহ কয়েক জেলে জিম্মি রয়েছে বলে তারা জানান।
এদিকে ডাকাতদের কবল থেকে জেলে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে শরনখোলায় প্রেস ব্রিফিং করেছেন বাগেরহট জেলা পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক। পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, সুন্দরবনে জেলে অপহরণের খবর জানার সাথে সাথে মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী সুন্দরবনকে ডাকাত মুক্ত রাখতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উদ্ধারকৃত জেলেদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ডাকাতদের গ্রেফতার করা হবে।
গত ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নতুন এ ডাকান বাহিনী সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের হরমাল খাল ও বেরির খালে কাকড়া শিকার করার সময় হামলা চালিয়ে এসব জেলেদের অপহরণ করে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন