শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দেশের আদালতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

দেশের আদালত ও ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এর আগে বিচারাঙ্গনের ভেতরে-বাইরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করে প্রশাসন।

এ লক্ষ্যে গতকাল সোমবার হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সব অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনালের এজলাস, বিভাগ, প্রতিটি ফটক ও আদালতের বাইরে সিসিটিভি এবং আদালত সীমানার চারদিকে প্রাচীর দেয়ালে সিকিউরিটি পোস্ট স্থাপনসহ ১১ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নারী ও শিশু অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন সরকারদলীয় আইনজীবী নেতারা। তারা আদালত বর্জনসহ বিচারককে এজলাস থেকে নেমে যেতে বাধ্য করেন। অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। এজলাসের ভেতরকার এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত থেকে দুই বিচারক এবং সহায়ক কর্মচারিদের অপসারণের দাবিতে লাগাতার আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করেন আইনজীবীরা। এরই এক পর্যায়ে গত ২ জানুয়ারি কর্মসূচি চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগারের বিরুদ্ধে মিছিল করেন আইনজীবীরা। তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভাষায় শ্লোগান দেন। উভয় ঘটনার বিহিত চেয়ে দুই বিচারক প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানান। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে প্রেরণ করেন। এ প্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারি বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে সংশ্লিষ্ট ২১ আইনজীবীকে তলব করেন। আগামী ২৩ জানুয়ারি তাদের হাজির হতে বলা হয়েছে।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনাকে বিচার কার্যক্রমের ওপর হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বিচারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘বাংলাদেশ ওমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশন’। নজিরবিহীন এ ঘটনায় বিচারকগণ ব্যক্তিগতভাবে কেউ সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারছেন না। কিন্তু ভেতরে সঞ্চারিত হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। অন্যদিকে বিচার কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপ, বিচারকদের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং অশালীন আচরণের ব্যাখ্যা চেয়ে আইনজীবীদের তলব হাইকোর্ট তলব করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে আইনজীবীদের মাঝেও।

এছাড়া গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের বাক-বিতন্ডা, অশালীন আচরণের অন্তত: ২০টি ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির নেতৃস্থানীয় কয়েকজন আইনজীবীকে তলব করেন হাইকোর্ট। ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। আদালত তখন আইনজীবীদের ভর্ৎসনা করেন। পরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসব ঘটনায় আইনজীবী এবং বিচারকদের মাঝে স্থায়ু বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এ অবস্থার মধ্যে আদালতের ভেতর-বাইরে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তবে ১১ দফা নির্দেশনায় এসব ঘটনাবলীর কোনো উল্লেখ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন