রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ৬৯টি রুশ জাহাজ কোনো পণ্য নিয়ে মোংলাবন্দরে প্রবেশ, নোঙর ও মাল আনা-নেয়া করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের পানিসীমায়ও ঢুকতে পারবে না ওই জাহাজগুলো। এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত জানিয়ে মোংলাবন্দরকে যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ৭টি কোম্পানির ৬৯টি জাহাজকে বন্দরে প্রবেশ, নিবন্ধন, জাহাজ বাঙ্কারিং (তেল সরবরাহ), শ্রেণিকরণ, সনদায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, পুনঃসরবরাহ, রিফুয়েলিং, বীমা এবং অন্যান্য সামুদ্রিক পরিসেবা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ পতাকা রেজিস্ট্রেশনকারী সংস্থা কর্তৃক জাহাজসমূহের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী যেকোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মোংলা বন্দরকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয় থেকে আসা চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ৭টি কোম্পানির ৬৯টি জাহাজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ৬৯টি জাহাজের তালিকা বন্দর সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ও ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এসব জাহাজ যাতে বন্দরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য জাহাজগুলো হলো, এম ভি স্পার্টা-১, স্পার্টা-২, বেলোমোরস্কাই, সিজহোবকা, ডিভিনস্কাই জালিভ, ইনযিনার টারবিন, ইনযিনার ভেসনিয়াকব, আইহোহান মাহমাসতাল, ক্যাপ্টেন কোকোভিন, রাইনসিন, মেখানিক আরভেস, মিকালইল লোমোনোসোভ, এস কুজনিসোভ, সাইয়ানি সেভারা, এস এমপি নোভোডিভিনেস্ক ও এস এমপি সেভারোডিভিনেস্ক।
প্রসঙ্গত, উরসা মেজর নামের রুশ একটি জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী বহন করে মোংলা বন্দরে ভিড়ার অপেক্ষায় ছিল গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে। তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজ। এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরে বিষয়টি যাচাই করে বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয়। এরপর জাহাজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে গিয়ে সরাঞ্জাম খালাসের চেষ্টা করে। কিন্তু জাহাজটি নয়াদিল্লির অনুমতি পেতে ব্যর্থ হলে পণ্য খালাস করতে পারেনি। এ অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি ভারত ছেড়ে যায় জাহাজটি।
অন্যদিকে, গত রোববার রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩৬৩৩ মেট্রিক টন মেশিনারি পণ্য নিয়ে রুশ পতাকাবাহী ‘এমভি কামিল্লা’ নামে একটি জাহাজ বন্দরে নোঙ্গর করেছে। বন্দর সূত্র জানায় এ জাহাজটি নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন