দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জমি নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে দুই যুবক নিহতের ঘটনায় ৩০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত দুই যুবকের দাফন শেষ করার পর চুনিয়াপাড়া ও হঠাৎপাড়া গ্রামের ৩০ বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (বিরামপুর সার্কেল) একেএম ওহিদুন্নবী। তিনি বলেন, সেখানে ঘোড়াঘাট থানার পাশাপাশি ফুলবাড়ী ও বিরামপুর থানা এবং জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স থেকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগুনের ঘটনায় বাড়িতে থাকা আসবাবপত্র, মোটরসাইকেল ও খড়ের পালা সহ অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের বাড়িতে আগুন লাগানোর পাশাপাশি বাড়িতে থাকা টিভি, ফ্রিজ এবং গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই গ্রামের ভুক্তভোগী মোসলেমা বেগম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাড়ির সব পুড়িয়ে দিয়েছে। বাড়িতে গরু ও ফ্রিজ ছিল। সেগুলো নিয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় থাকব?
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জোহরা বেগম বলেন, দুই যুবকের মরদেহ দাফন করার পর ওই এলাকার বেশ কিছু ছেলে ধারালো অস্ত্র, লাঠি নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে পেট্রোল দিয়ে বাড়িতে আগুন দেয়। ঘটনার দিন আমরা বাড়িতে ছিলাম না। অন্য লোকের সঙ্গে জমি নিয়ে এই ঘটনা। আমাদের কোনও দোষ নেই। জরিনা বেগম বলেন, আমরা বাড়িতে ছিলাম না। বাড়ির সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একটি লাল গরু, দুটি ছাগল লুট করে নিয়ে গেছে। রাতে থাকবো কোথায় জানি না।
ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ নিরঞ্জন সরকার বলেন, দুটি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এখনি বলা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে উপজেলার ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের খোদাদাদপুর-চুনিয়াপাড়া গ্রামে সংঘর্ষে দুজন যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক এক নারী সহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন