ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা চলমান নৈরাজ্যের কারণে একের পর এক শিরোনামে আসায় এবার সোচ্চার হচ্ছেন নীতিনির্ধারকরা। নানা অপরাধের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর অপরাধীদের বহিষ্কার করছেন কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও জারি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নেতাকর্মীদের এমনই ১০ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার দুপুরে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহীদের রক্তস্নাত সংগঠন, বাংলার ছাত্র সমাজের নির্ভরতার ঠিকানা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাণভোমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশা অপরিসীম। ইতিহাসের নানা বাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক সে দায়িত্ব পালন করেছে এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাতে নেতৃত্ব দেয়ার গৌরব অর্জন করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মৃতিধন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ছাত্র সমাজের কাছে অনুকরণীয়। দেশরত্নের পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ' বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা' বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ পথ দেখাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি স্মার্ট ক্যাম্পাস' হিসেবে পরিণত করতে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর জন্য অবশ্য পালনীয় ১০ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগ। নির্দেশনাগুলো হলো-
১. সাংগঠনিক কর্মসূচি ও নির্দেশনার বাহিরে ব্যক্তিগত ও দলবদ্ধভাবে যে কোন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলোতে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে হবে। পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন কোন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হওয়া যাবে না।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর দেশের শিক্ষা উন্নয়ন ও গবেষণা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও শিল্পচর্চার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। এরকম প্রতিটি উদ্যোগ-আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে ছাত্রলীগের কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্মল-মনোরম রাখতে সকল প্রকার ব্যক্তিগত ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. মোটর বাইক শোডাউন, উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, সাউন্ড সিস্টেমের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না।
৬. আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নতকরণে, সুশৃঙ্খল আবাসন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখতে হবে।
৭. বিশ্ববিদ্যালয় পরিমণ্ডলে ক্রিয়াশীল অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাস কমিটি প্রভৃতির সাথে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক ও সদ্ভাব বজায় রাখতে হবে।
৮. গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক বন্ধুদের দায়িত্ব পালনে সর্বাবস্থায় সহযোগিতা করতে হবে।
৯. ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো, অপরাধমূলক প্রবণতা, মাদক সংশ্লিষ্টতার সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে।
১০. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী, নিরাপত্তা বিঘ্নকারী, বেআইনী, ইভটিজিং, র্যাগিং ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের সাথে কোনভাবেই জড়িত হওয়া যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী এক একজন 'অনুকরণীয় এবং নির্ভরশীল বন্ধু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন