চীনের কথিত গুপ্তচর বেলুন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইকে সতর্ক করে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তার আকাশসীমা লঙ্ঘন সহ্য করবে না। গত শনিবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ব্লিঙ্কেন চীনের সেন্ট্রাল কমিশন ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর ওয়াং ইয়ের সাথে এক বৈঠকে একথা বলেন। এ মাসের শুরুতে বেলুনটি আবিষ্কৃত হওয়ার পর এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনার উপকূলে মার্কিন সামরিক বাহিনী কর্তৃক ভূপাতিত হওয়ার পর এটি ছিল চীনা সরকারের সাথে মার্কিন প্রশাসনের প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাত।
ইতিমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বেলুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও তিক্ত হয়ে উঠেছে। মিউনিখ বৈঠক সম্পর্কে মার্কিন সরকারের একটি বিবৃতি অনুসারে, ব্লিঙ্কেন চীনা বেলুনে মার্কিন সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘনের বিষয়ে সরাসরি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজটি অবশ্য্যই আর কখনও ঘটানো যাবে না। ব্লিঙ্কেন পরে সংবাদ সংস্থা এনবিসি-কে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন যে, ওয়াং এ ঘটনার জন্য কোনো ক্ষমা চাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই উদ্বিগ্ন যে চীন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে তার আগ্রাসনে প্রাণঘাতী সহায়তা দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে এবং আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, এটি আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি ঘটাবে।’ ব্লিঙ্কেন বেইজিংকে সতর্ক করে বলেছেন যে, চীন যদি রাশিয়াকে বস্তুগত সহায়তা দেয় বা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর সময় মস্কোকে পদ্ধতিগত নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দিতে সহায়তা করে, চীনকে এর ফল ভোগ করতে হবে।
এদিকে, মিউনিখ সম্মেলনে ওয়াং প্রকাশ্যে বেলুনটির প্রতি মার্কিন প্রতিক্রিয়ার নিন্দা করেছেন, এটিকে দুর্বল ও অসুস্থ মাত্রার উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া হিসাবে অভিহিত করেছেন। চীনের তরফ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে তথাকথিত গুপ্তচর বেলুনের ঘটনাকে সামান্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এবং ওয়াং এটিকে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশি^ক উষ্ণায়নের জন্যও অভিযুক্ত করেছেন তিনি। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি বিবৃতি অনুসারে, ওয়াং বেলুন ধ্বংসের জন্য বাইডেন প্রশাসনের নিন্দা করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে পথ পরিবর্তন করার, তার অত্যধিক শক্তি প্রয়োগের ফলে চীন- যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কর যে ক্ষতি হয়েছে, তা স্বীকার করার এবং মেরামত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই মন্তব্যগুলি বলছে যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কম-বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও পক্ষই গুপ্তচর বেলুন ঘটনার পাশ কাটিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত নয়। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ব্লিঙ্কেন ৫-৬ ফেব্রুয়ারী বেইজিং-এ একটি পরিকল্পিত সফর স্থগিত করেছেন। সূত্র : পলিটিকো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন