মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় সাংবাদিকসহ রাজশাহী কলেজের ৩০ শিক্ষার্থীকে মারধর

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৩ এএম

ক্ষমা চেয়েছে ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় রাজশাহী কলেজের সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে এবং সম্পৃক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল থেকে বহিষ্কারের আশ্বাস দিয়েছে। গত বুধবার রাতে রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসের ই ও বি বøকের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে মারধর এবং কয়েকজনকে ছাত্রলীগের ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত এফ বøকের বারান্দায় নিয়ে মারধর করা হয়। সেখানে প্রত্যেককেই চড়-থাপ্পড় মারা হয়। রাজশাহী কলেজে পড়েন না, ছাত্রলীগের এমন নেতাকর্মীরা মারধরে অংশ নেন। কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা বহিরাগতদের সহায়তা করেন।
মারধরের শিকার গণমাধ্যমকর্মী শরিফুল ইসলাম বলেন, রাতে নিজ কক্ষে মোবাইল ফোনে একটি নিউজ লিখছিলেন। ছাত্রলীগের ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের মারধরও করা হচ্ছিল। শাহরুখ নামের এক ছাত্রলীগ নেতা কক্ষে ঢুকে ‘প্রোগ্রামে যায়নি ক্যান বলেই মারধর শুরু করেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আরো মারতে থাকেন। এ সময় তাকে কক্ষ থেকে বের করে ধাক্কাতে ধাক্কাতে এফ বøকে নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে আরেক গণমাধ্যমকর্মী নাজমুস সাকিবকেও মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতা তারিক। এ ভাবে গত বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত অন্তত ৩০ শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহরুখ ও তারিক রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেন না। শাহরুখের বাড়ি শহরের সাধুর মোড় এলাকায়। আর তারিক রাজশাহীর কাটাখালী পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক। ঘটনার পর রাতেই রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি কলেজ প্রিন্সিপাল মোহা. আবদুল খালেককে অবহিত করা হয়। তিনি ছাত্রাবাসে গেলে অভিযুক্ত তারিক ও শাহারুখ বলেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা তাদের পিটিয়েছেন।

রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম বলেন, রাতে এই ঘটনার কোনো সমাধান না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন। তখন প্রিন্সিপাল আবদুল খালেক তাদের অনুরোধ করে শিক্ষক পরিষদের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বসে আছেন। উপস্থিত ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্তও। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকসহ অন্য গণমাধ্যমকর্মীরাও যান সেখানে। তখন সেখানে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

আবদুল হাকিম বলেন, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহরুখ ও তারিক মারধরের শিকার দুই গণমাধ্যমকর্মীর হাত ধরে বলেন ‘স্যরি ভাই, ভুল হয়ে গেছে। এ রকম আর হবে না। ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত বলেছেন তিনি দায়িত্ব নিচ্ছেন। কলেজে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। তার ছেলেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাদেরও তো রাজনীতি করতে হয়। বিভিন্ন সংগঠনের চার থেকে পাঁচ জন করে যদি ২০ জন ছেলে চলে যায়, তাহলে তারা কীভাবে অনুষ্ঠানটা চালাবেন? তবে এরপর থেকে এমন হবে না।

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী কলেজ প্রিন্সিপাল অধ্যাপক মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, বিষয়টি ওপর মহলে জানানো হয়েছে। রাজশাহী কলেজের যে সুনাম আছে তা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার কারণে নষ্ট হতে পারে না।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘এটা তো কলেজের বিষয়, সে জন্য আগেই হয়তো আমাদের জানানো হয়নি। আমরা কলেজ থেকে কিছু জানতে পারিনি। থানায় কেউ যদি কোনো অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন