শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

সোয়াতের কসাই খ্যাত মুসলিম খানকে ফাঁসি দিতে যাচ্ছে পাকিস্তান

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তানের একটি সামরিক আদালত সোয়াত অঞ্চলে পাকিস্তানি তালেবানের এক শীর্ষ স্থানীয় নেতাকে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গিদের সাবেক এই মুখপাত্র মুসলিম খানের বিরুদ্ধে ৩১ জনকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি যাদের হত্যা করেন তাদের মধ্যে বেসামরিক লোক ও নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া যে আট সন্ত্রাসীর মৃত্যুদ-াদেশ নিশ্চিত করেছেন তাদের মধ্যে মুসলিম খান অন্যতম।
৬২ বছরের মুসলিম খান ১৯৬০-এর দশকে বামপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ১৯৯০-র দশকে তার আদর্শগত পরিবর্তন ঘটে। পাকিস্তানের সোয়াত অঞ্চলে তিনি ইসলামি তালেবান আন্দোলনে যুক্ত হন।
২০০৭ সালে তিনি সোয়াত তালেবানের প্রধান মুখপাত্রে পরিণত হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত সোয়াত অঞ্চলে তালেবানের শক্ত ঘাঁটি থাকা পর্যন্ত তিনিই ছিলেন প্রকাশ্য নেতা। সোয়াত অঞ্চলের বিভিন্ন স্কুলে তার নির্দেশে পরিচালিত হত্যা, শিরñেদ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা- পরিচালিত হয়। এসব নৃশংস কর্মকা-ের পর তালেবান প্রধান মোল্লা ফজলুল্লাহ তাকে সোয়াতের কসাই উপাধি দেন।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে মুসলিম খানকে বেসামরিক নাগরিক হত্যাকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলাকারী সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মুসলিম খান দুই চীনা ও এক বেসামরিক নাগরিককে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগেও দ-িত করা হয়েছে। আসামী অভিযোগ স্বীকার করায় তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে।
বিবিসির উর্দু শাখার সাবেক প্রতিনিধি আব্দুল হাই কাকা ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে মুসলিম খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তিনি জানান, মুসলিম খান বেশ কয়েকটি ভাষায় কথা বলতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে উর্দু, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি ও মাতৃভাষা পশতু। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেছেন খান।
২০০৯ সালে সোয়াত অঞ্চল থেকে তালেবানকে উৎখাতের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিচালিত অভিযানের সময় মুসলিম খানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।
উল্লেখ্য, পেশাওয়ারে সেনা নিয়ন্ত্রিত একটি স্কুলে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সংবিধানের ২১তম সংশোধনীর আওতায় এ আদালত গঠিত হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে গঠিত সামরিক আদালতে সরকারিভাবে হওয়া ২৭৫টি সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার শুরুর কথা বলা হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম। ক্যামেরার সামনে চলে বিচার। দুই মাস পর প্রথম সাজা ঘোষণা করা হয়। প্রায় দুই বছরের বিচারকার্যকালীন এসব আদালতে ১৬১ জঙ্গিকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। আরও ১১৬ জনকে কারাদ- দেওয়া হয়েছে। এদের বেশিরভাগেরই যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর হয়েছে মাত্র ১২ জনের। সাজাপ্রাপ্তরা আল কায়েদা, তাহরীকে তালেবান পাকিস্তান, জামাআতুল আহরার, তাওহীদুল জিহাদ গ্রুপ, জায়শে মোহাম্মদ, হরকাতুল জিহাদে ইসলামী, লশকর-ই জাংভি, লশকর-ই-জাংভি আল-আলামী, লশকরে ইসলামী এবং সিপাহে সাহাবা’র সদস্য।
যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-এপিএস হত্যাকা-, সাফুরা বাস হামলা, সাবিন মেহমুদকে হত্যা, সাংবাদিক রাজা রুমির ওপর হামলা, রাওয়ালপিন্ডি প্যারেড লেন মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা। বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন