বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিমানবন্দর পার্কিংয়ে অব্যবস্থাপনা

মূল গেইট থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত যেতে লাগে কয়েক ঘণ্টা ঈদের আগে যানজট সমস্যা সমাধান হবে : মো. মোকাম্মেল হোসেন

একলাছ হক | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০২৩, ১২:০১ এএম

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে প্রতিদিনই সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। দেশি-বিদেশেী বিমান যাত্রীদের বিমান বন্দরে প্রবেশ করতে এবং বের হতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। বিদেশ থেকে যে বিনিয়োগকারীরা আসছেন তাদেরও পড়তে হচ্ছে যানজট ভোগান্তিতে। বিমানবন্দরে এ ভোগান্তি যেন নিয়তি হয়ে গেছে। এই বিমানবন্দর এলাকায় আসলে কারোই যেন নিস্তার নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সব সময়ই লেগে থাকে যানবাহনের জটলা। বিশেষ করে পার্কিং করা প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য গাড়ির কারণে এই জটলা সৃষ্টি হয়। এই যানবাহনের জটলা, অব্যবস্থাপনার পার্কিং ও দুর্ভোগ থেকে দ্রুত মুক্তি চান সাধারণ যাত্রীরা।

জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, এখন বিমানবন্দরে উন্নয়ন কাজ চলমান। যাত্রীদের চলাচলের সমস্যা হচ্ছে। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। আশা করি ঈদের আগে এসব সমস্যা সমাধান হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিমানবন্দর সড়কে এবং আশপাশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০ ঘন্টাই যানজট লেগে থাকে। বিদেশগামী যাত্রীদের গাড়ি করে বিমানবন্দরের মূল গেইট থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত যেতে লেগে যায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। একইভাবে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের টার্মিনাল থেকে মূল গেইট পর্যন্ত আসতে সময় লাগে এক থেকে দুই ঘণ্টা।

প্রতিদিনই শত শত গাড়ি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে পার্কিং করা হয় টাকার বিনিময়ে। প্রভাবশালীরা এই টাকা উঠান বলে জনা গেছে। গাড়ি প্রতি প্রথম তিন ঘণ্টার জন্য দিতে হয় ১০০ টাকা। আর পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য দিতে হয় ৩০ টাকা করে। নির্ধারিত টাকা দিয়েও অনেক সময় অতিরিক্ত সময় বসে থাকতে হয় ভাড়া চালিত প্রাইভেটকার ও মাক্রোবাস চালকদের। তারা বলছেন, পার্কিং সমস্যার কারণেই বিমানবন্দরসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিমানবন্দর এলাকায় পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গাড়ি পাকিং অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকলে মালামাল মাথায় নিয়ে যেতে হয় যাত্রীদের।

ভুক্তভোগী কয়েকজন বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে গাড়ি পার্কিং এলাকায় ইজারা প্রতিষ্ঠানের লাইনম্যানরা পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা চাহিদা মতো বখশিস না পেলে গাড়ি পাঠিয়ে দেন পেছনের সারিতে। এভাবে পুরো বিমানবন্দর এলাকায় গাড়ির লাইন পড়ে যায়।

বিমানবন্দরের সামনে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রাখার কারণে প্রতিদিনই এখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দেশের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর হলেও এখানে সবসময়ই দেখা যায় নানা অব্যবস্থাপনা। তার উপর এই বিমানবন্দরে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে যদি যানজট লেগে থাকে তাহলে ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের। এই যানজট দীর্ঘ হয়ে মূল সড়কে পর্যন্ত চলে যায়।

জানা যায়, প্রতিদিন শাহজালাল বিমানবন্দরে ওঠানামা করে ১৪০ থেকে ১৫০টি ফ্লাইট। যাত্রীর সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ হাজার। যাত্রীদের বিদায় ও অভ্যর্থনা জানাতে আসেন ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ। বছরে গড়ে ৬০ লাখ মানুষ এ বিমানবন্দরে আসা-যাওয়া করেন। ফলে পার্কিংসহ গমনাগমনের বিভিন্ন স্থানে চলছে বড় ধরনের বাণিজ্য। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জমজমাট গাড়ি পার্কিং বাণিজ্য। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো ফি আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে পার্কিংকারী গাড়ি ও চালকের সঙ্গে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা ঘটছে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের। এই পার্কিং বাণিজ্যের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের শক্তিশালী সিন্ডিকেটকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা। এখানে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসকে প্রথম তিন ঘণ্টার জন্য ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়া একটু বিলম্ব হলেই ৪০ টাকা অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে। নিয়মের বাইরে এখানে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত নিচ্ছেন ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। এই কার পার্কিংয়ের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে।

অন্যদিকে এয়ারপোর্ট কার রেন্টাল সার্ভিসের গাড়ি ভাড়া অনেক বেশি বলে অভিযোগ করেন একাধিক প্রবাসী ও তাদের স্বজনেরা। তারা বলেন, এয়ারপোর্ট কার রেন্টাল সার্ভিসের গাড়ি নিতে গেলে গন্তব্য অনুযায়ী স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে দুই-তিন গুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়। দেশে ফেরা প্রবাসীরা বলছেন, বিমানবন্দর থেকে উত্তরার যেকোনো স্থানে যেতে ২০০ টাকার মধ্যেই সিএনজিচালিত স্কুটার পাওয়া যায়। ট্যাক্সি ভাড়া নিলেও ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা লাগে। অথচ কার রেন্টাল কর্তৃপক্ষ এর তুলনায় বেশি ভাড়া ধার্য করে রেখেছে।

গাড়ি চালক খোরশেদ আলম জানান, বিমানবন্দরের ভিতরে গাড়ি প্রবেশ করালেই টাকা দিতে হয়। ১০০ টাকা করে গাড়ি প্রবেশ করেলে পড়ে ট্রিপ পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যপার। গাড়ি বসে থাকলেও ঘণ্টা হিসেবে টাকা দিতে হয়।
কাতার ফেরত যাত্রী আবুল কালাম বলেন, বিমান থেকে নামার পরেই পড়েছি বিপাকে। আমার পূর্ব থেকে গাড়ি নির্ধারিত করা না থাকার কারণে এখান থেকে গাড়ি নিতে হচ্ছে। এখন আমার সাথে জিনিসপত্র নিয়ে টার্মিনালের বাইরে ছুটছি। ভাড়া করা গাড়িতে এখন উঠতে হচ্ছে অনেক ভোগান্তির পর।

যানজট নিয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তরা বিভাগ) নাবিদ কামাল শৈবাল ইনকিলাবকে বলেন, মূলত উন্নয়ন কার্যক্রমের কারণে রাস্তা অনেকটা সরু হয়ে গেছে। এজন্য গাড়ি প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কিছুটা সময় লাগে। আর যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ###

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
মাহমুদুল হাসান মাছুম ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ বিমানবন্দরে কোনো শিক্ষিত লোকজন আছে বলে তো মনে হয় না। টাকা ভেট দিয়ে মূর্খরা চাকরিতে ঢুকে শাহানশাহ বনে গেছে।
Total Reply(0)
Md Harun ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৬ এএম says : 0
শুধু বিমানবন্দর কেন বাংলাদেশের এমন কোন সেক্টর আছে অব্যবস্থাপনা নেই বাংলাদেশে প্রশাসন এ যারা আছেন কর্মকর্তা তারা এগুলি লক্ষ করেন না দোষ শুধু আমাদের মত সাধারণ মানুষের
Total Reply(0)
মাহমুদুল হাসান মাছুম ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ বিমানবন্দরে কোনো শিক্ষিত লোকজন আছে বলে তো মনে হয় না। টাকা ভেট দিয়ে মূর্খরা চাকরিতে ঢুকে শাহানশাহ বনে গেছে।
Total Reply(0)
Jahangir Alam ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৭ এএম says : 0
ঘৃণাহয় ওদের নিয়ে মন্তব্য করতে।
Total Reply(0)
Jahangir Hossain ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৭ এএম says : 0
সিঙ্গাপুর কানাডার এয়ারপোর্টের চাইতে আমাদের এয়ারপোর্টের পরিবেশ ভালো। সরকারের ভিতর কিছু চামচা এটাই বলবে। এবং বলা হবে এটা বি এন পির আমলের ছবি।
Total Reply(0)
Md Ali Azgor ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৭ এএম says : 0
চুরি বাটপারি দুর্নীতিবাজ এবং অশিক্ষিত মানুষ দিয়ে এই বিমান বন্দরের কার্যকর চলানো হয়। আর এদের ব‍্যাবহার এতটাই খারাপ বিদেশিরা ও আমাদের সাথে এমন খারাপ আচরণ করে না। ঘুষখোরদের অবাদ বিচরন। জবাব দিহীতার কোন বালাই নেই। এমন একটা দেশের নাগরিক কথা বলার মতো কোন পরিবেশ নেই। স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও পরাধিনতার মতো জীবন জাপন করছে।
Total Reply(0)
Anisur Rahman ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বিশ্বমানের বিমান বন্দরে বিশ্বমানের সেবা। বিমান বন্দরের টপ টু বোটম ঘুষ দূর্নীতি আর অ ব্যবস্থাপনায় জর্জরিত। একটা প্রতিষ্ঠান এভাবে আর কত কাল চলবে। চালাতে না পারলে বন্ধকরে দিন।
Total Reply(0)
Anisur Rahman ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বিশ্বমানের বিমান বন্দরে বিশ্বমানের সেবা। বিমান বন্দরের টপ টু বোটম ঘুষ দূর্নীতি আর অ ব্যবস্থাপনায় জর্জরিত। একটা প্রতিষ্ঠান এভাবে আর কত কাল চলবে। চালাতে না পারলে বন্ধকরে দিন।
Total Reply(0)
Younus Ali ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বিমান বন্দরে যারা দায়িত্ব পালন করেন, তারা একটা কাজ খুব মনযোগ দিয়ে করেন। সেটা হলো কিভাবে পকেট ভারি করা যায়।
Total Reply(0)
মাহমুদুল হাসান মাছুম ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ বিমানবন্দরে কোনো শিক্ষিত লোকজন আছে বলে তো মনে হয় না। টাকা ভেট দিয়ে মূর্খরা চাকরিতে ঢুকে শাহানশাহ বনে গেছে।
Total Reply(0)
Md Jahirul Islam ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
শুধু এটা নয় আর পি টিতে ৬ ঘন্টা সময় লাগবে কেন?? এতো সময়ের কারণ কি??
Total Reply(0)
Younus Ali ৫ মার্চ, ২০২৩, ৭:২৮ এএম says : 0
বিমান বন্দরে যারা দায়িত্ব পালন করেন, তারা একটা কাজ খুব মনযোগ দিয়ে করেন। সেটা হলো কিভাবে পকেট ভারি করা যায়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন