স্টাফ রিপোর্টার : এডুকেশন গসিপ কোনো প্রথাগত পদ্ধতি নয়, বরং এটি একটি স্কুল ক্যাম্পাসকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার পদ্ধতি। এ পদ্ধতির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী হোমওয়ার্ক থেকে ক্লাসরুম, দাফতরিক কর্মকান্ড কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যাবে। জার্মান প্রবাসী তিন বাংলাদেশি তরুণের সহায়তায় এটি তৈরি করা হয়েছে। এ প্লাটফর্মের আওতায় একটি অ্যাপস, একটি ওয়েবসাইট ও একটি অ্যাটেনডেন্ট মেশিন রয়েছে। এর মাধ্যমে সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কাওরান বাজারের জনতা টাওয়ারে এ প্লাটফর্মের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ প্লাটফর্মের মূল উদ্যোক্তা তানভীর তাবাসসুম অভি জানান, এডুকেশন গসিপ কোনো প্রথাগত পদ্ধতি নয়। এটি শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার আধুনিক পদ্ধতি। শহর-গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার মানোন্নয়ন, ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করবে ‘এডুকেশন গসিপ’।
এ প্লাটফর্মের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় গমন নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার্থীর তথ্যসম্বলিত ডাটাবেজ তৈরি, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নির্ণয় ও বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়া, সোস্যাল নেটওয়ার্কিংসহ অ্যাপস ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব উপকরণ (সিলেবাস, রুটিন, ই-বুক, বেতন পরিশোধ, শিক্ষার্থীর অগ্রগতি নিরুপণ করা যাবে) নিশ্চিত করবে।
এ প্লাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করার একটি বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করাসহ শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার মানের তারতম্য দূর করতে সহায়তা করবে। এ প্লাটফর্ম তৈরিতে অভির নেতৃত্বে মোসাদ্দেক হোসেন, আহমেদ তারেক ও মো: রমজান নামে তিনজন জার্মান প্রবাসী তরুণ অংশ নিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাজীপুর কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হোসনেয়ারা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
সামাজিক নেটওয়ার্কের এই সিস্টেমটি কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ একটি সফটওয়্যার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। যা শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় সব কাজেই ব্যবহার করা যাবে। অন্যদিকে এই সিস্টেম বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করার একটি বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই পদ্ধতিতে একটি কেন্দ্রীয় তত্ত¡াবধানের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেগুলোতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের উপস্থিতির শতকরা হার নির্ণয় করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রতিটি ছাত্রের যাবতীয় তথ্যাবলীর ডাটাবেস তৈরি হবে। ঝরে যাওয়া ছাত্রদের সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। এতে করে শতকরা শিক্ষা বাস্তবায়ন করা খুব সহজ ও সুলভ হবে। পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণ কাস্টমাইজেবল হবে। এতে করে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সেবা পরিবর্তন করা, পরিমার্জন করা, পরিবর্ধন করা এবং সময়ের সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সুবিধা সংযোজন করা সম্ভব হবে।
এটেনডেন্টস রেকর্ড মেশিনটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্টাফদের দৈনন্দিন উপস্থিতি রেকর্ড করবে। এতে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। মেশিনটি ডিজাইন করেছে এভেলন টেকনোলজি। এটি অন্য সিস্টেমে রিয়েল টাইম ডাটা স্থানান্তর করতে সক্ষম। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার কথা বিবেচনা করে এই সিস্টেমটি ডিজাইন করা হয়েছে। যেন এটি বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় ইনস্টল এবং ব্যবহার করা যায় এবং পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে মনিটর করা সম্ভব হয়। ভবিষ্যতে মেশিনটি লেজার ভিশন ম্যাথডে আপগ্রেড করা যাবে এবং শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক কাজে তাদের আইডি কার্ড রিচার্জও করতে পারবে।
এমনকি কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিতে পারবে এবং অন্য সুবিধাগুলো হলো নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর সহজবোধ্য বিভিন্ন টিউটোরিয়াল সরবরাহ করে বাড়িতে বসে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা যা তাদের কোচিংমুখী করবে না। ফলে টাকা ও সময় দুটোরই সাশ্রয় হবে। এডুকেশন গসিপ প্লাটফর্ম শহর ও গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার মানের তারতম্য দূর করতে সহায়তা করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন