শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

সময় শেষ হলেও ট্যানারি স্থানান্তর হয়নি

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ট্যানারি কারখানা স্থানান্তরের বিষয়ে সরকারের দেয়া ডেডলাইন পার হলেও এ ক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট এবং গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। গতকাল সরকারের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডিআরইউ গোলটেবিল মিলনায়তনে “ট্যানারি স্থানান্তরে ব্যর্থ হলো সরকারি ডেডলাইন ২০১৬! বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরীসহ একাধিক নদী- করণীয় কি? শীর্ষক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ব্যাখ্যা দাবি করেন বক্তারা। ‘বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার’ নামে একটি সংগঠন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ হতে ট্যানারি শিল্প কারখানা স্থানান্তরের পূর্বঘোষণা বাস্তবায়ন না হওয়ায় জনসম্মুখে সরকারের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জবাবদিহিতার দাবি করেছেন পরিবেশবিদরা। সেই সঙ্গে তারা বলছেনÑ ‘ট্যানারি স্থানান্তরে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’
বিশিষ্ট কলামিস্ট, গবেষক ও বাপার সহ-সভাপতি সৈয়দ আবুল মকসুদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাপার জাতীয় পরিষদ সদস্য এম এ সিদ্দিকী, গ্রিন ফয়েসের সমন্বয়ক আলমগীর কবির ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা ও ‘বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার’-এর যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল।
বাপা ও ‘বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার’-এর যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বুড়িগঙ্গার ৬০ শতাংশ দূষণ হচ্ছে শিল্প কারখানার কারণে। হাজারিবাগে ৭ হাজার ট্যানারি শিল্প কারখানা রয়েছে। ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশনসহ সরকারের কারণে ৩০ শতাংশ দূষণ হচ্ছে। ১০ শতাংশ দূষণ হচ্ছে গৃহস্থালির কারণে। শ্যামপুরের ৪২ কারখানার বর্জ্য যাওয়ার লাইন সরাসরি বুড়িগঙ্গায়। সব মিলে প্রতিদিন ২ কোটি ১৬ লাখ লিটার বর্জ্য যাচ্ছে বুড়িগঙ্গায়।
তিনি বলেন, ২২০টি ট্যানারির কারখানার সরাসরি বর্জ্য ফেলছে বুড়িগঙ্গায়। পরিবেশ দূষণ বন্ধ ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে আদালত বিভিন্ন সময় নির্দেশনা দিলেও তা পালন হয়নি। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সে কমিটিতে নেই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি। শরীফ জামিল আরও বলেন, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ট্যানারি স্থানান্তরের ডেডলাইন ছিল ৩১ ডিসেম্বর। এর মধ্যে মাত্র ৩৪টি কারখানার আংশিক স্থানান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে বাকি সব কারখানা স্থানান্তর অকল্পনীয়। এমতাবস্থায় সরকারের কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, সরকার আদৌ নিজেদের করা ঘোষণা ও কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কি না তা স্পষ্ট করার আহŸান জানাচ্ছি।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ট্যানারি নিয়ে অনেক সংবাদ হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় প্রতিবাদ ও জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের আহŸান জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। সরকারের জবাবদিহিতা থাকতে হবে উল্লেখ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন-সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তা পালন হয় কি না তা দেখার দায়িত্ব সরকারের। আমরা নদী বাঁচাতে চাই। পরিবেশ রক্ষা করতে চাই। ঘোষণা অনুযায়ী আজকে সব ট্যানারি স্থানান্তর কাল্পনিক গল্পের দৈত্য দিয়েও সম্ভব নয়।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তাহলে সরকার ব্যর্থ। ডেডলাইন অনুযায়ী কেন ট্যানারি স্থানান্তর করা গেলো না? সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কি তা সুস্পষ্টভাবে জনসম্মুখে পরিষ্কার করতে হবে। বুড়িগঙ্গা দূষণ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষের। এজন্য উভয়কেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন