সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অনেক প্রাপ্তি নিয়ে সাবিনাদের ফেরা

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসরের সফল মিশন শেষে দেশে ফিরে এসেছে জাতীয় মহিলা ফুটবল দল। গতকাল রাতে তারা ভারতের শিলিগুড়ি থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছে। বিমান বন্দরে রানার্সআপ সাবিনা বাহিনীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা।
এবারের সাফে জাতীয় মহিলা দলের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনালে খেলা। কিন্তু তারা প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফল করে ফাইনালে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। যদিও অল্পের জন্য শিরোপার নাগাল পায়নি লাল-সবুজের মেয়েরা। বুধবার সাফের ফাইনালে তারা স্বাগতিক ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে। খুব কাছে গিয়ে স্বপ্নের ট্রফি ছোঁয়া না হলেও সাফে ইতিহাস সৃষ্টি করতে পেরেছে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। টুর্নামেন্টের চার আসরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ রানার্সআপ ট্রফি জিতে নেয় তারা। সেই ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরে এখন উৎফুল্ল সাবিনা বাহিনী।
এবারের সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়ণশিপে দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের গ্রæপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফুটবল খেলে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করে তারা। ‘বি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৬-০ গোলে আফগানিস্তানকে বিধ্বস্ত করে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শেষ চারের টিকিট কাটে। ওই ম্যাচে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ গোল করেন। অন্য গোলটি আসে স্বপ্নার পা থেকে। পরের ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজরা। আর সেমিফাইনালে মালদ্বীপকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় ফাইনালে। এ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব দেখান ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না। যদিও ফাইনালে এসে গতি হারিয়ে ফেলেন সাবিনা-স্বপ্না-কৃষ্ণারা। স্বাগতিক ভারতের কাছে হেরে ভেঙে যায় স্বপ্ন। তবে রানার্সআপ হলেও এ আসরে লাল-সবুজ মেয়েদের প্রাপ্তি অনেক। এক ম্যাচে দেশসেরা স্ট্রাইকার সাবিনার পাঁচ গোলসহ টুর্নামেন্টে তার সাত গোল। আর তিন ম্যাচে স্বপ্নার পাঁচ গোল বাংলাদেশ মহিলা ফুটবলের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
ফাইনালের হতাশা ছাপিয়ে অনেক পাওয়া সাবিনাদের দলের ২০ জনের ১৫ জনই বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ফুটবলার। এদের মধ্যে আবার পাঁচজন জাতীয় দলে একেবারেই নতুন। সাফ শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্ন ভেঙে গেলেও মেয়েদের ফুটবলে বাংলাদেশের সুন্দর আগামীর সম্ভাবনাটা ডালপালা মেলেছে এ টুর্নামেন্টেই। গত সাফে আফগানিস্তানকে ৬-১ গোলে হারানো ছিল বাংলাদেশের আগের সেরা শুরু। এবার অধিনায়ক সাবিনার দাপটে শুরুটা দাপুটে হয়েছে। আফগানদের ছয় গোল দিলেও কোনো গোল হজম করতে হয়নি। এবারই প্রথম ভারতকে রুখে দিয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ২০১০ ও ২০১৪ সালের পর এবার তৃতীয়বারের মতো সেমিফাইনালে ওঠে সিরাত জাহান স্বপ্নার হ্যাটট্রিকে মালদ্বীপকে উড়িয়ে দেয় লাল-সবুজরা। বলা যায়, স্বপ্নার হাত ধরেই প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। এর আগে কোনো গোল হজম না করে ফাইনালে ওঠার রেকর্ড ছিল ভারত (২০১০ ও ২০১২) ও নেপালের (২০১০ ও ২০১৪)। এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসায় বাংলাদেশ। ফাইনালে ওঠার পথে ১২ গোল করলেও একটা গোলও হজম করতে হয়নি সাবিনাদের। রক্ষণভাগ, মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগ, এই তিন বিভাগেই এবার বাংলাদেশ ছিল আগের তিন আসরের তুলনায় বেশি পরিপক্ব। পরিসংখ্যান তাই বলে। এবার বাংলাদেশ দিয়েছে সবচেয়ে বেশি (১৩) গোল, আর হজম করেছে মাত্র তিনটি এবং তা ফাইনালে। এর আগে ২০১০ সালে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশ ১১ গোলের বিপরীতে হজম করে ৯ গোল। ২০১২ সালে গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার পথে ৫ গোল খেয়ে লাল-সবুজরা দেয় ২ গোল। এবং ২০১৪ সালে ১০ গোলের বিপরীতে সাবিনারা হজম করে ৮ গোল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন