নাইমুর রহমান নাবিল : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ক্লাসরুমের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম। এ কারণে সেশনজটের কবলে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
এদিকে, চলতি শিক্ষাবর্ষে চালুকৃত ল্যান্ড ল, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিক্যুলার বায়োলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এই ৩টি বিভাগের কোনো ক্লাসরুমই নেই। শুধু তাই নয়, বিভাগ ৩টির ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে অন্য বিভাগের অফিস কক্ষে। এছাড়া গত শিক্ষাবর্ষে চালুকৃত শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট এবং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শুধুমাত্র অফিস কক্ষ থাকলেও নেই নিজস্ব কোনো ক্লাসরুম। এ দু’টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত পোগোজ স্কুলে।
নতুন ওই পাঁচটি বিভাগেরই নেই নিজস্ব কোনো লাইব্রেরি ও সেমিনার রুম। এমনকি শিক্ষকদের আলাদা বসার জন্য নেই কোনো কক্ষ। ফলে বিভাগীয় প্রধানসহ সব শিক্ষক একই রুমে বসে চালান অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। এ যেন শিক্ষকদের সেমিনার কক্ষ।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩৬টি বিভাগ থাকলেও সে তুলনায় নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম। প্রতিটি বিভাগের যে পরিমাণ ক্লাসরুম রয়েছে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এক ব্যাচের ক্লাস শেষ হতে না হতেই অপর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ওই ক্লাসরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন। এতে ক্লাসরুমে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোসংযোগে যেমন ব্যাঘাত ঘটে, তেমনি অপেক্ষমাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও বিব্রতবোধ করেন।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ৪টি বিভাগ ছাড়া বাকি সব বিভাগেই রয়েছে ক্লাসরুমের তীব্র সঙ্কট। এর মধ্যে আইন এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৫টি করে ব্যাচ চলমান থাকলেও উভয় বিভাগের জন্য ক্লাসরুম রয়েছে দু’টি করে। এ জন্য কোনো ব্যাচের ক্লাস চলাকালে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। আবার কোনো ব্যাচের পরীক্ষা থাকলে সেদিন ক্লাসও হয় না অন্যান্য ব্যাচের। আর ক্লাসরুমগুলোও অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকে পরীক্ষার হল হিসেবে। যার ফলে শিক্ষকদের পক্ষে যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এছাড়া নৃ-বিজ্ঞান, ফার্মেসি, মাইক্রোবায়োলজি ও সিইসই বিভাগগুলোর পাঁচটি করে ব্যাচ চলমান থাকলেও ক্লাসরুম রয়েছে একটি করে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান রিপন বলেন, ক্লাসরুম সঙ্কটের কারণে প্রায়ই আমাদের ক্লাসের ব্যাঘাত ঘটে। ক্লাসরুম মাত্র দুইটি হওয়ার কারণে একই সময়ে একাধিক ব্যাচের ক্লাস থাকলে কোনো একটি ব্যাচের ক্লাস বাতিল করা হয়। ফলে সময়মতো ক্লাস শেষ হয় না এবং নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ক্লাসরুমের সঙ্কট এখন অনেকটাই কম। নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলেই ক্লাসরুম সঙ্কট দূর হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন