শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

বিস্মৃত মাওলানা কারামত আলী এবং উপেক্ষিত মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.)

| প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কে এস সিদ্দিকী
(৬ জানুয়ারি প্রকাশিতের পর)
মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.)
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর শাহ ইয়াছিন (রহ.) ফাজিল মাদ্রাসা ময়দানে দুই দিনব্যাপী ৭৩তম ইছালে ছওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ ও ২০ জানুয়ারি। পীরে কামেল হযরত মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.) স্মরণে প্রতিবছরই অনুরূপ ইছালে ছওয়াব ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তার স্মৃতি-বিজড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো তার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও তার জীবন ও কর্মের বিবরণ অনেকেরই জানা নেই। হযরত শাহ ইয়াছিন ওফাত প্রাপ্ত হন এখন থেকে ৭৩ বছর পূর্বে পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে. দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষ দিকে ব্রিটিশ শাসনের অন্তিমকালে। এরই কয়েক বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯৩৯ সালে ইন্তেকাল করেন শাহ ইয়াছিনের পীর হজরত শাহ সুফী আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.)। তার ওফাতের পূর্বেই ধর্ম প্রচারক তার খলিফা-মুরিদান সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিলেন এবং দেশের নানা স্থানে প্রচলিত বেদাত-কুসংস্কার ও পাপাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ছিলেন। মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.)ও ফুরফুরার পীর সাহেবের খলিফা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.) মাওলানা শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (রহ.) এবং মাওলানা ইমামুদ্দীন (রহ.)Ñ এ তিন সাধক ছিলেন তৎকালীন বাঙলায় হজরত সৈয়দ আহমদ বেরলভী (রহ.)-এর প্রধান খলিফা। গোড়াতেই সে কথা বলা হয়েছে। মাওলানা শাহ কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.) সম্পর্কেও কিছু আলোচনা করা হয়েছে। এদেশে তারা সবাই তরিকতের প্রচলিত চারটি তরিকা যথাক্রমে কাদেরিয়া, চিশতিয়া, নকশবন্দিয়া মোজাদ্দেদিয়া এবং সোহরাওয়ার্দিয়ার সাথে কিংবা প্রত্যেকেই একাধিক তরিকায় সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে সময় তাদের অনুসারী, ভক্ত মুরিদান এবং খলিফাদের সংখ্যাও ছিল বিপুল। তাদের ওফাত বিভিন্ন সন-তারিখে হলেও তারা একই পীরের খলিফা হিসেবে একই যুগে বাঙলার সর্বত্র ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত ছিলেন। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে এদেশের জন্য এটি ছিল এক গৌরবোজ্জ্বল দিক। পরবর্তীকালে তাদের মুরিদান-খলিফাগণও ছিলেন তাদেরই মতো সক্রিয়। মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.) ছিলেন তাদেরই একজন, যিনি তার নিজ এলাকা ও আশেপাশের অধিবাসীদের মধ্যে ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে বেদাত-কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তাবলিগ প্রচারে এবং ইসলামের সঠিক শিক্ষা বিস্তারে তার পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। অথচ লিখিত ও প্রকাশিত ইতিহাস পুস্তকগুলোতে এ মহান সাধকের নাম তেমন দেখতে পাওয়া যায় না। ফুরফুরার খলিফাদের নামের তালিকা দৃষ্টিগোচর হলেও শাহ ইয়াছিন (রহ.) উপেক্ষিত হয়েছেন। এ জন্য লেখকদের অবহেলা বা কার্পণ্যতাকে দায়ী করা অন্যায় হবে না। তবে এই বাস্তবতাও আমরা অস্বীকার করি না যে, এদেশ ওলামা-মাশায়েখ ও সুফী সাধকের দেশ, যাদের বদৌলতে এখানে ইসলাম প্রচার ও ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশ ও প্রসার ঘটেছে। এখন তা বহুগুণে বেড়ে চলছে। এসবের মূলে যাদের অবদান সবচেয়ে অধিক তাদের যুগে যুগে সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। তাদের সকলের কথা এক বা একাধিক পুস্তকে লিপিবদ্ধ করাও সম্ভব নয়। তবে আঞ্চলিক যেসব পীর-মাশায়েখের নাম উল্লেখ করা হয়ে থাকে সে তালিকা ব্যাপকভিত্তিক হওয়া উচিত বলে মনে করি।
এখানে আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, কথিত আছে, মাওলানা আবুল মজিদ (রহ.)ও ছিলেন ফুরফুরার পীর সাহেবের খলিফা। এমতাবস্থায় শ্বশুর-জামাই তরিকত ধারায় একই পীরের অনুসারী হওয়ায় ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিষয়ে তারা এক ও অভিন্ন মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী ছিলেন বলে ধরে নেয়া যায়, যা সচরাচর ধর্মীয় আলেম সমাজে বিরল। সুতরাং বলা যায়, সমাজে ফুরফুরার পীর সাহেবের এ দুই খলিফার প্রভাব গভীর ও ব্যাপকতর ছিল। এ সম্পর্কে লিখিত বিবরণের অভাব থাকায় তাদের পরিচিতি-অবদানের কথা যথাযথ মূল্যায়িত হতে পারেনি। মজীদিয়া মাদ্রাসা মাওলানা আবদুল মজীদের স্মৃতিধন্য। এ প্রাচীন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে মওলানা শাহ ইয়াছিনের নামও যুক্ত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব ও ঐতিহ্য অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এলাকার ধর্মীয় ঐতিহ্যও সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এখানে বলে রাখা দরকার, বাঙলায় হজরত সৈয়দ আহমদ বেরলভী (রহ.)-এর যে তিনজন প্রধান খলিফার নাম পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে হজরত শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ নিজাম পুরী (রহ.)-এর প্রধান খলিফা ছিলেন হজরত শাহ সুফী ফতহে আলী (রহ.) এবং তারই প্রধান খলিফা ছিলেন ফুরফুরার পীর হজরত শাহ আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.)। প্রথমোক্ত দুই পীরের মুরিদান ও খলিফাদের তুলনায় ফুরফুরার পীর সাহেবের মুরিদান, ভক্ত, অনুরক্ত এবং তার খলিফাদের সংখ্যা আন্দাজ করা কঠিন হলেও ‘ফুরফুরার পীর হজরত আবু বকর সিদ্দিকী’ নামক পুস্তকে বিশিষ্ট লেখক আবু ফাতেমা মোহাম্মদ ইসহাক পীর সাহেবের খলিফাদের নাম উল্লেখ না করলেও কোন স্থানে কতজন খলিফা, তার একটা তালিকা উপস্থাপন করেছেন। এ তালিকার প্রতি দৃষ্টিপাত করলে সহজেই অনুমান করা যায়, তার শত শত খলিফা ইসলামের তাবলিগ প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। আবু ফাতেমা মোহাম্মদ ইসহাক প্রদত্ত তালিকাটি নি¤œরূপ :
“তিনি তার শত শত খলিফার মাধ্যমে বাংলা, আসাম, ভারত ও এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে তাবলীগ তানযীমের কার্যাদি সূচারুরূপে সম্পন্ন করেন। সংক্ষেপে নি¤েœ তার খলিফাদের একটি মোটামুটি হিসাব প্রদান করছি :
তার খলিফা ছিলেন হুগলীতে ৩৪ জন, নোয়াখালীতে ৫৯ জন, ত্রিপুরায় ১০ জন, চট্টগ্রামে ২০ জন, বরিশালে ২৫ জন, নদীয়ায় ২৩ জন, ফরিদপুরে ১২ জন, পাবনায় ৩৮ জন, যশোরে ৫২ জন, খুলনায় ২০ জন, রংপুরে ১৩১ জন, মেদিনীপুরে ১১ জন, কলকাতায় ১১ জন, হওড়ায় ৮ জন, ময়মনসিংহে ৬ জন,  সিলেটে ৩ জন, পূর্ণিয়ায় ২ জন, মুর্শিদাবাদে ২ জন, বর্ধমানে ৩ জন, রাজশাহীতে ৭ জন, ঢাকায় ৩ জন, চব্বিশপরগনায় ৩১ জন, মালদহে ১ জন।” (পৃ. ৩৩)।
এ ছাড়াও দুনিয়ার অন্যান্য স্থানে বেশ কিছু খলিফার নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। একই পুস্তকে এ পর্যায়ে যাদের নাম স্থান পেয়েছে তারা হচ্ছেন, হযরত শাহ সুফী সদর উদ্দীন (রহ.), হযরত মাওলানা শাহ সুফী নেছারউদ্দীন (রহ.), হযরত মাওলানা রুহুল আমিন (রহ.), হযরত মাওলানা শাহ সুফী আবদুল খালেক এম এ (রহ.), রংপুরের হযরত মাওলানা শাহসুফী মফিজ উদ্দীন (রহ.), কলকাতার মাওলানা শাহ সুফী আলী হামিদ জালালী (রহ.), নদীয়ার মাওলানা শাহ সুফী তাজাম্মোল হুসেন সিদ্দিকী (রহ.), মাওলানা শাহ সুফী নজমল হক দোগাছি (রহ.), হুগলির মাওলানা শাহ সুফী কাজী আবদুল মোহায়মেন সিদ্দিকী (রহ.), হযরত মাওলানা শাহ সুফী হাতেম আহমদ শ্রী নদী (রহ.), মেদিনীপুরের হযরত মাওলানা শাহ সুফী আবদুল মাবুদ (রহ.), হযরত মওলানা শাহ সুফী শফিউদ্দীন (রহ.)। (পৃ. ৪০)।
(আলহাজ মাওলানা) এম ওবাইদুল হক (মরহুম) ফুরফুরার পীর সাহেবের খলিফাদের ৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন পীর সাহেবের দুই পুত্র এবং বাকি পাঁচজনের মধ্যে ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও মরহুম খান বাহাদুর আবদুর রহমান (অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রী)-এর নামও রয়েছে। বাকি তিনজনের নাম পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। (বাংলাদেশের পীর আউলিয়াগণ, পৃ. ৪০)। এ তালিকায় ফুরফুরার পীর সাহেবের অপর কোনো খলিফার নাম উল্লেখ নেই অথচ জনশ্রুতি অনুযায়ী মাওলানা আবদুল মজিদ ও মাওলানা শাহ ইয়াছিনও তার খলিফা ছিলেন। এ দুজন ছিলেন পরস্পর শ্বশুর-জামাতা। অর্থাৎ মাওলানা আবদুল মজিদের জামাতা ছিলেন মাওলানা শাহ ইয়াছিন। তারা দুজনই ফুরফুরার পীর সাহেবের খলিফা ছিলেন বলে লোকমুখে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। তবে তাদের কারো বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় না। মাওলানা আবদুল মজিদ সম্পর্কে মাওলানা নূর মোহাম্মদ আজমী যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিবেশন করেছেন তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি যা লিখেছেন তা নি¤েœ প্রদত্ত হলো :
মরহুম মাওলানা আবদুল মজিদ সাহেব কর্তৃক ১৮৯৫ইং উক্ত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মাওলানা আমিনুল হক সাহেব ১৯৩৫ইং উক্ত মাদ্রাসার সুপারেন্ট নিযুক্ত হয়ে যথাক্রমে আলেম ও ফাজিল পরীক্ষার অনুমতি এবং সরকারি সাহায্য লাভ করেন। অতঃপর মাওলানা আবদুল মান্নান সাহেবের চেষ্টায় ১৯৫৮ইং তথায় টাইটেল ক্লাস খোলা হয়। আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.) ফুরফুরার পীর সাহেবের খলিফা হিসেবে ‘কামালিয়াত’ লাভ করেছিলেন। অপরদিকে পারিবারিক জীবনে তিনি বৈবাহিক সূত্রে এমন এক সম্ভ্রান্ত বংশের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন, দ্বীন ইসলামের প্রচারক হিসেবে স্থানীয়দের মধ্যে যারা সুনাম খ্যাতির অধিকারী ছিলেন। মাওলানা আবদুল মজিদের কথাই বলছি, তিনি ছিলেন শাহ ইয়াছিনের শ্বশুর। তিনি এমন এক সময়ে ময়দানে অবতীর্ণ হন, যখন দ্বীনি শিক্ষার তীব্র অভাব ছিল।  তার স্বসমাজে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। মাওলানা আবদুল মজিদ ইসলামী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতিতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়েম করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্রের নাম মজীদিয়া মাদ্রাসা। বর্তমানে তথায় মাদ্রাসা বোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই লাইব্রেরিতে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা মূল্যের কিতাব মজুদ রহিয়াছে। (১৯৬৬ সালে প্রকাশিত হাদিছ তত্ত্ব ও ইতিহাস, পৃ. ৩৯২)
আজমী সাহেবের বিবরণ পর্যালোচনা করলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসে যায়। যেমনÑ মাওলানা আবদুল প্রতিষ্ঠিত (১৮৯৫ সালে) মাদ্রাসাটি এদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। ১৯৩৫ সালে এটি সরকারি অনুমোদন লাভ করে এবং ১৯৫৮ সালে মাওলানা আবদুল মান্নান সাহেবের প্রচেষ্টায় তাতে টাইটেল ক্লাস খোলা হয়। তাছাড়া মাদ্রাসার লাইব্রেরিও অতি সমৃদ্ধ। এটি অর্ধশতাব্দী কালের ও পূর্বের তথা বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি আরো বহু উন্নতি লাভ করেছে এটাই স্বাভাবিক। প্রতিষ্ঠানটির বয়স সোয়াশ বছরেরও অধিক। সেখান থেকে এ যাবত হাজার আলেম বের হয়েছেন এবং তারা ইসলামের এবং ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে অবদান রেখে চলছেন।
মাওলানা আবদুল মজিদ ও শাহ ইয়াছিন স্মরণে-
এই দুই সুফী সাধক সম্পর্কে সৎ সামান্য আলোচনা ওপরে স্থান পেয়েছে। লিখিত ও প্রকাশিত তথ্য-বিবরণীর অভাবে তাদের জীবন ও কর্মের ওপর আশানুরূপ আলোচনা করা সম্ভব নয়, সে ত্রুটি স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। কারো বিস্তারিত জানা থাকলে জানানোর অনুরোধ রইল।
বক্তব্য শেষ করার পূর্বে হজরত শাহ সুফী হাজী ইমদাদুল্লাহ মোহাজেরে মক্কী (রহ)-এর একটি প্রচলিত বিখ্যাত উক্তি উল্লেখ করতে চাই। বহুল প্রচলিত ইছালে ছওয়াব মাহফিল সম্পর্ক তার উক্তিটি উদ্ধৃত করা হয়ে থাকে। তিনি বলেছেন :
‘ইসালে ছওয়াব জায়েজ, কোনো মোছলে হাতে দিন-তারিখ নির্দিষ্ট করাও জায়েজ।” ফুরফুরা শরীফের পীর সাহেব হজরত শাহ সুফী আবু সিদ্দিকী (রহ.) ও তার খলিফা মুরিদগণ ইছালে ছওয়াব, ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। এ জাতীয় অনুষ্ঠানের সাথে পীর-মাশায়েখের জন্ম বা ওফাতের সম্পর্ক থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। দিন তারিখ নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। উদ্দেশ্য তাদের স্মরণে তাদের প্রতি বিশেষভাবে এবং সাধারণ মুমিন মুসলমানদের বিদেহি আত্মার প্রতি ইছালে ছওয়াব বা ছওয়াব পৌঁছে দেয়া, জিকির আজকার কোরআন খতম, দোয়া দরুদ তসবিহ তাহলিল ইত্যাদি এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে। তাই ইছালে ছওয়াব মাহফিলগুলোতে খ্যাতনামা পীর-মাশায়েখ এবং উলামায়ে কেরাম উপস্থিত হয়ে সকলকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছান ওয়াজ নসিহতের মাধ্যমের।’
হজরত মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.)-এর স্মরণেও প্রতিবছর ইছালে ছওয়াব ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং তার পীর-মুর্শিদের তরিকা তথা রীতিনীতি যথাযথভাবে অনুসৃত হয়ে থাকে। তবে তফাৎ এই যে, কোনো দিন তারিখ নির্ধারিত থাকে না। একেক বছর ভিন্ন ভিন্ন দিন-তারিখে এ ইছালে ছওয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এবারও এ মাহফিল অনুষ্ঠানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ১৯ ও ২০ জানুয়ারি। উল্লেখ্য, হজরত আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) ছিলেন মাওলানা শাহ ইয়াছিন (রহ.)-এর কৃতী সন্তান, যার ওফাত বার্ষিকী ৬ ফেব্রুয়ারি। (সমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
محمد علاء الدين الصالح ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৮:৪৭ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ! গত কিছুদিন আগে গিয়ে যিয়ারত করে আসলাম।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন