ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করেছেন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিন পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেশটির কৃষ্ণাজ্ঞ নাগরিকরাই বেশি। অভিবাসনবিরোধী বলে পরিচিত ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের রোষানলে পড়তে পারেন আন্দোলনকারীরা। এতে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই দেশটিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগমুহূর্তে ওয়াশিংটন ডিসিতে সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়েছে শনিবার। এতে যোগ দিয়েছেন কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল দেশটির অনেক অঙ্গরাজ্যে। শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ফের ট্রাম্পবিরোধী স্লোগানে মুখর হলো রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। ট্রাম্পের শপথ অনুানকে সামনে রেখে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে।
যদিও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ভাঁড় হিসেবে উল্লেখ করে তার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে চরম মাত্রায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিক্ষোভকারীরা। সুশীল সমাজের সদস্যদের পাশাপাশি ডেমোক্র্যাট দলের নেতাকর্মীরাও এই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা ট্রাম্পের কাছে কোনও দাবি নিয়ে আসিনি। কারণ তিনি যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাদের পরিচয়েই প্রমাণ হয়েছে তার নীতির কোনও পরিবর্তন হবে না। দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ট্রাম্প তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। তিনি সব মার্কিনকে সমান দৃষ্টিতে দেখেন না। তাই নাগরিক অধিকার রক্ষার এই আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওয়াশিংটনের মার্টিন লুথার কিং মেমোরিয়ালে প্রায় দুই হাজার মানুষ সমবেত হন। বক্তারা সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্যনীতি ওবামা কেয়ার বাতিল হওয়া রোধে লড়াই করার আহ্বান জানান। সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা ও অধিকারকর্মী আল শার্পটন মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটদের শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা এই তীব্র বৃষ্টির মধ্যেও এখানে সমবেত হয়েছি দেশের মানুষকে বোঝাতে যে, আমরা এতোদিনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যা অর্জন করেছি, তা একটি নির্বাচন জয়ের চেয়ে অনেক বেশি। আর তা আমরা হারাতে চাই না।
প্রায় ৩০টি ট্রাম্প-বিরোধী গ্রুপ ওই সমাবেশের আয়োজন করে। তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বহু বিক্ষোভকারী ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের অনুষ্ঠানে বাধা দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে ওয়াশিংটন পুলিশ ও সিক্রেট সার্ভিস অতিরিক্ত প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা এবং পাঁচ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মজুদ রেখেছে। ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পরদিন সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির সবচেয়ে বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। যার নাম দেয়া হয়েছে উইম্যানস মার্চ। ওই সমাবেশে প্রায় দুই লাখ মানুষের জমায়েত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন