প্রভাবশালী থেকে শুরু করে অনেকেই ছিলেন তার ঘনিষ্ঠজন
মো. হাফিজুর রহমান মিন্টু নারায়ণগঞ্জ থেকে : নূর হোসেন ১৯৮৬ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকায় ইকবাল গ্রুপের ট্রাকের হেলপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৮ সালের দিকে শিমরাইলে আন্তঃজেলা ট্রাকচালক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যক্রম চালু করেন দাইমুদ্দিন নামের এক ট্রাকচালক। ১৯৮৯ সালের দিকে শ্রমিক ইউনিয়নের দখল নেন নূর হোসেন। যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে হয়ে যান বিএনপি নেতা। ১৯৯২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন নূর হোসেনসহ ১৩ জন। শক্তিশালী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলামকে পরাজিত করতে মাঠে নামেন সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন। ভোট জালিয়াতি করে দুই-আড়াইশ’ ভোটের ব্যবধানে নূর হোসেন জয়ী হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি প্রার্থী হিসেবে পরবর্তী ইউপি নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন নূর হোসেন। আওয়ামী লীগ থেকে শামীম ওসমান প্রার্থী দেন সাত খুনে নিহত নজরুল ইসলামকে। ওই সময়ে গিয়াসউদ্দিন জোরেশোরে নূর হোসেনের পক্ষে মাঠে নামলেও জয়ী হয়ে হাত মেলান শামীম ওসমানের সঙ্গে। হয়ে যান আওয়ামী লীগ নেতা।
নূর হোসেনের কর্মকা- যা ছিল : নুর হোসেন তার বাহিনীর মাধ্যেমে পরিবহনে চাঁদাবাজি, জায়গা-জমি দখল, শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি, শীতলক্ষ্যা নদীর তীর দখল করে পাথর-বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত। এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে তার উত্থান। ১৯৯২ সালে ও ১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে এপ্রিলে শিল্পপতি মোহাম্মদ আলীর সাথে আদমজিতে খালেদা জিয়ার জনসভায় যোগ দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। এর আগে কর্নেল অলি আহম্মেদের গাড়িতে বোমা মেরে আলোচনায় আসেন। ১৯৯৬ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে শিমরাইল মোড়ে তার বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় নিরীহ রিকশাচালক আলী হোসেন। ৯৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটলে ওই রাতেই এলাকা থেকে স্বপরিবারে পালিয়ে যান। পলাতক অবস্থায় শিমরাইলের মনিরকে দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি ও সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন। কালা শাজাহান, মনির, রাসেল, জুয়েল, ছানা, আলীসহ রয়েছে ২০/২৫ জনের ক্যাডার বাহিনী। এদের মধ্যে অনেকেই সাত খুনে অভিযুক্ত। নূর হোসেনের ভাই নূরুজ্জামান জজের নেতৃত্বে সোনারগায়ের আমান, ডেমরার সেলিম, বাতেনসহ ১৫/২০ জনের আলাদা বাহিনী রয়েছে। এ ছাড়া তার ভাতিজা শাহজালাল বাদলের নেতৃত্বে জসিম, লিটন, আসলাম, শামীম, সুরুজসহ দুইডজন সন্ত্রাসী রয়েছে।
কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর বেপোরোয়া নূর হোসেন : ২০১১ সালে নির্বাচনের পর সিদ্ধিরগঞ্জের এরশাদ শিকদার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন। যে মাদক ব্যবসা থেকে দিনে অন্তত ৩৫ লাখ টাকা লাভ আসত, সেই মাদকের কারণেই হারাতে হলো প্রথম সন্তান বিপ্লবকে। মাদকের কারণে নিজ সন্তান বিপ্লবকে নিজেই হত্যা করেছেন বলে গুঞ্জন রটেছিল। অন্যদিকে বিপ্লব গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহনন করেছে বলে নূর হোসেন দাবি করেন।
নূর হোসেনের শিমরাইল টেকপাড়া বাড়ির মাত্র ৫০০ ফুট দূরত্বের মধ্যেই হাজি আজিম উদ্দিন পেট্রোল পাম্পের গলিতেই রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বিক্রি হতো জীবন ধংসকারী সব ধরনের মাদক। ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন আগন্তুকদের আটকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা তার বাহিনীর নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। নূর হোসেন কাউন্সিলর ‘অসীম ক্ষমতাধর’ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা তো দূরের কথা, প্রতিবাদ করারও সাহস করত না। মিজমিজি মাদরাসা রোডের হাজি সাহাবুদ্দিনের জমি দখল করে ৬০ লাখ টাকা চাঁদা নেন। সিদ্ধিরগঞ্জের সেভেন সেভেন ইটভাটার মালিক মনির হোসেন বাবুলের ইটভাটা জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়ে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। নাসিক নির্বাচনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় আমির হোসেন ভা-ারীকে আটকিয়ে নির্বাচনের ব্যয় বাবদ ক্ষতিপূরণ ৬০ লাখ টাকা নেন। সড়ক ও জনপথের ঠিকাদার মাছুম তার নির্দেশ ছাড়া সানাড়পাড়-মৌচাক এলাকার ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ নেয়ায় তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা নেন। সানাড়পাড়ের ব্যবসায়ী সুলতানের কাছ থেকে দফায় দফায় ৩৮ লাখ টাকা চাঁদা নেন।
প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি, ট্রানজিট শিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ড : সিদ্ধিরগঞ্জ থানা থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার উত্তরে শিমরাইল আন্তঃজেলা ট্রাক টার্মিনাল। পূর্বাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী সব মাদক পরিবহনই এই টার্মিনালকে নিরাপদ ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’ হিসেবে ব্যবহার করেছে নূর হোসেন। প্রতিদিন হাতবদল হওয়া অন্তত ১০ ট্রাকের প্রতিটির বিপরীতে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত (মাদকের ধরন ও দাম অনুপাতে) চাঁদা আদায় করত নূর হোসেন। ট্রাক টার্মিনালে, কাউন্সিলরের অফিসের পেছনে (সাবেক জিহাদ হোটেল), টেকপাড়া, ডেমরা আদমজী রোডে ফজলুর রহমান ও আমিজ উদ্দিন পেট্রোল পাম্পের পেছনে প্রকাশ্যেই বিক্রি হতো ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, মদ, বিয়ারসহ সব ধরনের মাদক। এসব মাদক ব্যবসার মালিকানা সরাসরি হোসেন চেয়ারম্যানের ছিল। যা তদারকি করত নূর হোসেনের সহযোগী শাজাহান, সানাউল্লাহ, আজাহার, আলী মোহাম্মদ ও তারসিল।
প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার মাদক খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হতো। মাদক বিক্রির লাভ থেকে দিনে অন্তত ৩৫ লাখ টাকা পকেটস্থ করতেন নূর হোসেন। নূর হোসেন কাউন্সিলরের মাদক ব্যবসা প্রশাসনের সর্বস্তরেই জানা ছিল। টাকা দিয়ে প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিক সবই ‘ম্যানেজ’ করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে নূর হোসেন কাউন্সিলর অফিসকেই মাদকের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করেছিল। এজন্য অফিসের পেছনের দিকে রাখা হয়েছিল গোপন স্টিলের দরজা। যা দিয়ে মাদক আনানেয়া হতো।
এ ছাড়াও দুইবছর ধরে নূর হোসন শিমরাইল ট্রাকস্ট্যান্ডে অশ্লীল নৃত্যের যাত্রা আর জুয়ার আসর চালিয়েছিল। আর এসবের রসদ জোগাতে হাতের নাগালে জীবন ধ্বংসকারী সব ধরনের মাদক সরবরাহ করা হতো। বিনিময়ে হাতিয়ে নিতেন প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা। প্রতিদিনই মাইকিং করে যাত্রা-জুয়ার আসরে জনগণকে আমন্ত্রণ জানানো হতো। যাত্রা শুরুর আগ পর্যন্ত চলতো বিভিন্ন ধরনের জুয়া। মেলার মূল প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে প্রকাশ্যে বিক্রি হতো মদ, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক। রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলত হাউজি খেলা। যাত্রা প্যান্ডেলের পূর্ব পাশে বসানো চরকি, ছক্কা, তাস, মার্বেলসহ বিভিন্ন জুয়া খেলা। যা চলত রাতভর। সবচেয়ে বড় লেনদেনের খেলা ওয়ানটেন জুয়া রাত ১০টায় শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত চলত। এই খেলায় হাতবদল হতো লাখ লাখ টাকা। মেলা থেকে (পরিচালনা খরচ ও চাঁদা হিসেবে) প্রতিদিন তুলে দেয়া হতো ১০ লাখ টাকা নূর হোসেনের হাতে।
স্বজনদের কর্মকা- : নূর হোসেনের বড় ভাই হাজী নূর ইসলামকে সবাই ডাকে খান সাব বলে। সে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের বাড়ির সামনে মসজিদের ওয়াকফের জায়গায় স্থাপিত একটি মাছের আড়ত। এখানে ৪৭টি ভিটি আছে। প্রতিটি ভিটি থেকে এক লাখ টাকা করে সেলামি নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন প্রতি ভিটির ভাড়া ২শ’ টাকা। দ্বিতীয় ভাই নূর সালাম একজন ভূমিদস্যু। এলাকাবাসী তার নাম দিয়েছে বোবা ডাকাত। এলাকার জমিজমা কেনাবেচায় তাকে টাকা না দিলেই প্যাঁচ। মাদানীনগর, রসুলবাগ, মুক্তিনগর ও বাগমারা এলাকার জায়গা জমি ও বিচার-আচার তার নিয়ন্ত্রণে। তৃতীয় ভাই নরুল হক মোটা হারে সুদের ব্যবসা ও বর্তমানে নেপথ্যে থেকে একটি পরিবহন শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করে। চতুর্থ ভাই নূরুদ্দিন স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদার ও বর্তমানে নূরের অবর্তমানে তার সমস্ত কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করছে। ছোট ভাই নূরুজ্জামান জজ নিয়ন্ত্রণ করে বালি-পাথর ব্যবসা এবং চাঁদা তুলে টেম্পো, লেগুনা ও ফুটপাত থেকে। ভাতিজা কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল (নূর সালামের ছেলে) নেপথ্যে থেকে পিতার অবৈধ কর্মকা- ও মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। শিমরাইল মোড়ে যাতায়াতকারী যানবাহনে চাঁদাবাজিও তার নিয়ন্ত্রণে।
নূর হোসেনের আমলে সকলের দলপতি হোসেন চেয়ারম্যান ওরফে নূর হোসেন স্থানীয় ট্রাক টার্মিনাল, চুন ফ্যাক্টরির চাঁদাবাজি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করত। তার জ্ঞাত কোনো ব্যবসা না থাকলেও তিনি দু’টি দামি গাড়ি ব্যবহার ও বিলাসী জীবনযাপন করে এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের হিস্যা বণ্টন করত। নূর হোসেনের অধীনস্থ বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী যে কোনো সময় রাজধানী ঢাকাকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ক্ষমতা রাখত। গত ১৯৯৮ সালে নূর হোসেনই বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়ার চট্টগ্রাম অভিমুখী রোড মার্চের গাড়ি বহর আটকে দিয়েছিল।
নূর হোসেনের সঙ্গী-সাথিদের মধ্যে বরিশাইল্যা শাহজাহান, আলী মোহাম্মদ, সানাউল্লাহ, গিরিঙ্গি সেলিম ওরফে অঙ্ক সেলিম, বরিশাইল্যা কালাম, শিপন, তারছিল ও কাইলা শাহজাহানসহ প্রত্যেকের বিরুদ্ধে খুনসহ কমপক্ষে ১০টি করে মামলা রয়েছে।
গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল রেড ওয়ারেন্ট জারি করেছিল। বর্তমান সরকারের আমলে ওই রেড ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
যাদের ছত্রছায়ায় গডফাদার হয় নূর হোসেন : সরকারের ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাও ছিল নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠজন। নূর হোসেনকে দেখা যেত বিভিন্ন মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে। অন্যদিকে নূর হোসেনের উত্থানের পেছনে সাবেক জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল ও সাবেক পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামেরও সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও উঠে এসেছিল। নূর হোসেনকে ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার পেছনে ছিল ডিসি ও এসপির হাত। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসাও চলতো ডিসি এসপিকে টাকা দিয়ে। ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে তখনো নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড ওয়ারেন্ট ছিল। ওই সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওই সময়ের এএসপি জিয়াউল হাসানের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন নূর হোসেন। সেই বৈঠকে ছিলেন মজিবুর রহমানও। এ ছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই সময়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সারের সঙ্গে কয়েকটি অনুষ্ঠানে নজরুল যোগ দেয়ায় ওই সময়ে কায়সারের কয়েকটি অনুষ্ঠানও বয়কট করেন থানা আওয়ামী লীগের নেতারা। এক পর্যায়ে নেতারা বৈঠক করে নজরুলের সঙ্গ ত্যাগ করতে কায়সারকে আল্টিমেটাম দেয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই আল্টিমেটামের পেছনে কাজ করেছিল নূর হোসেন। এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ১৬ মে এক সভা করে নজরুলকে বয়কটের ঘোষণা দেন এমপি কায়সার। ওই সভাতে আওয়ামী লীগের কোনো পদধারী না হলেও উপস্থিত ছিলেন নূর হোসেন। সে সময়েই মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত নূর হোসেন কাউন্সিলরের আসল বড় নেতা মৃণাল কান্তি দাস এমপি। সে সময় তিনি বলেছিলেন, মুন্সীগঞ্জবাসীর আক্ষেপ, নারায়ণগঞ্জের সাত হত্যাকা-ের বিষয়ে নূর হোসেনকে ঘিরে মিডিয়ায় এত খবর আসে, কিন্তু তার আসল নেতা মৃণাল কান্তি দাসের নামে কেউ লেখে না। ২০১১ সালের ১০ জুলাই ইসলামী আন্দোলনের হরতাল চলাকালে সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ট্রাক টার্মিনালে নূর হোসেনের উপর হামলা চালায় হরতালকারীরা। তখন নূর হোসেন ছিলেন ট্রাক শ্রমিক নেতা। কিন্তু ওই ঘটনার পরে ১ আগস্ট নূর হোসেনের উপর হামলার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়, যেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন সরকারের অনেক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন