ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই ওবামা-কেয়ার বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পর এবার ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের আদেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সোমবার তিনি এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্য দিয়ে আরেকটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করলেন তিনি। টিপিপির বদলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করার পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশ টিপিপি চুক্তি স্বাক্ষর করে। গত সোমবার মার্কিন বাণিজ্যনীতি পুনর্নির্ধারণে ট্রাম্পের নেয়া বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশের একটি হলো টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার।
এ সময় ট্রাম্প বলেন, এই চুক্তি বাতিল করাটা মার্কিন শ্রমিকদের জন্য এক মহান সিদ্ধান্ত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে এই বাণিজ্যচুক্তির কড়া সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, এটি আমাদের দেশের পণ্য উৎপাদন খাতের জন্য ধ্বংস বয়ে আনবে। এই চুক্তির লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও শক্তিশালী করা এবং পারস্পরিক শুল্ক কমানো। এছাড়া এর মধ্যে শ্রম ও পরিবেশগত মান নির্ধারণ, কপিরাইট-পেটেন্ট ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওবামা টিপিপি চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও তা মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন পায়নি। ফলে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিপরীতে কংগ্রেসে তার অনুমোদন দরকার হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়ে সোমবার ট্রাম্প বলেন, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, তাদের জন্য বিশাল শুল্কছাড় দেয়া হবে। আর তার বিপরীত কিছু করলে কোম্পানিগুলো কাঁধে চাপানো হবে বিশাল শুল্কের বোঝা। চুক্তিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনা শুল্ক সুবিধার কথা বলা হয় এবং চুক্তির লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি বাড়ানো। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও মেক্সিকোসহ অন্য আরও দেশের দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৫ সালে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ট্রাম্প কলমের এক খোঁচায় এ চুক্তি বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, আমরা এই মাত্র যা করলাম সেটি আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য একটি বিরাট ব্যাপার। তিনি টিপিপি বাণিজ্য চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপর্যয় ঘনিয়ে আসার সংকেত বলেই বর্ণনা করেন। এ চুক্তির কারণে দেশের উৎপাদন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সমালোচনা করেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করে আসা কোম্পানিগুলোর কর এবং নিয়মের কড়াকড়ি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন। লকহিড মার্টিনসহ বড় বড় কয়েকটি কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প একথা বলেন। ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে এও বলেন যে, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে পণ্য উৎপাদন করবে তাদের ওপর বড় ধরনের সীমান্ত কর আরোপ করবেন তিনি। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন