সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাসাবাড়িতে আর গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হবে না। বিষয়টি অনেকের মাথাব্যথার কারণ হলেও সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে বলতে হয়। আমরা অনেকেই জানি, উন্নত দেশগুলোতে প্রাকৃতিক গ্যাসের এতটা অপব্যবহার হয় না, যতটা আমরা করে থাকি। আমরা দেখেছি, একটি ম্যাচের কাঠি বাঁচাতে সারা রাত গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা হয়, যা আমাদের ও দেশের ক্ষতি।
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। এটাও আমাদের দেশের গ্যাস ব্যবহারকারীদের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
আবাসিক ক্ষেত্রে যদি এলপি গ্যাস ব্যবহার করা হয়, তবে সরকার শিল্পকারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে। তাই গ্যাস-সংকট দূরীকরণে সরকারকেই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার যদি চাহিদামাফিক ও সাশ্রয়ী দামে এলপি (তরল) গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা করে, তাহলে বড় বড় শহরের বাসিন্দারা এলপি গ্যাস ব্যবহারে উৎসাহিত হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়িতে সিএনজি সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। এতে ঢাকা নগরের যানজট যেমন কমবে, তেমনি গ্যাসেরও সাশ্রয় হবে। এটাই হবে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ বাড়ানোর বাংলাদেশের জন্য ভালো ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সিদ্দিকা ফেরদৌস
গাইবান্ধা।
হকারের দৌরাত্ম্য
আজকাল পথেঘাটে বের হলেই হকারদের মহাউৎপাতে পড়তে হয়। কি ফুটপাত, কি ওভারব্রিজ, কি বাস-গাড়িÑ কোথাও যেন তাদের হাত থেকে রেহাই নেই। এই হকাররা সবাই হকার নয়, সবাই জীবিকার তাগিদে এ কাজ করে না। এই হকারদের মাঝে ঘাপটি মেরে আছে বিশাল এক ভয়ংকর অপরাধী চক্র। এই অপরাধীরা হকারের রূপ ধরে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে ক্যান্ডি, লজেন্স, চানাচুর, আচার, জুস, পানি, ডাবের পানি ইত্যাদির সঙ্গে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে বিক্রি করে। আর মানুষ তা খেয়ে জ্ঞান হারালেই এই অপরাধীরা তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়।
যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এদের ধরার কথা, তারাও অনেক সময় এদের সঙ্গে পেরে ওঠে না। কিছু দিন আগে এক পুলিশ কনস্টেবল বাসের মধ্যে এক হকারের কাছ থেকে কিছু কিনে খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান এবং পরে সবকিছুর সঙ্গে তার প্রাণও হারান। অর্থাৎ তারা ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশের চেয়েও চৌকস।
বিদেশি পর্যটকরাও আমাদের দেশে বেড়াতে এসে তাদের তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সবকিছু হারিয়েছেন। ফলে এদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়ার বিকল্প নেই।
মিলন সরকার
চাঁদপুর।
বেহাল সড়ক
রাজধানীতে বড় বড় অনেক প্রকল্প হচ্ছে, দুই মেয়র আমাদের নানা রকম আশার বাণী শোনাচ্ছেন। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, সবাই বড় বড় কাজে ব্যস্ত হলেও ছোট ও গুরুত্বপূর্ণ কাজে কারোরই তেমন মনোযোগ নেই।
পাড়া-মহল্লার সড়ক সংস্কারের লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বহুদিন ঢাকা নগর কর্তৃপক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিল না। ফলে ওয়ার্ডের দিকে নজর দেওয়ার কেউ ছিল না। নির্বাচনের পর আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম, এবার বুঝি আমাদের ভোগান্তি দূর হবে। কিন্তু আমাদের সে আশায় গুড়েবালি। এখন পর্যন্ত ঢাকার ওয়ার্ড পর্যায়ের সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আবার গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে রাস্তার অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়েছে। শীতও শেষ হয়ে গেল, ফলে ভাঙা সড়ক থেকে এখন প্রচুর ধুলাবালি উড়ছে, যার কারণে মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
নগরপিতাদের কাছে আহ্বান, আপনারা বড় কাজ করছেন, সে জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু দয়া করে ছোট কাজেও একটু নজর দিন। ভাঙা সড়ক মেরামত এবং নতুন অবকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করুন।
এডওয়ার্ক গৌতম
ঢাকা।
দূষণ রোধের পদক্ষেপ
বায়ু, পানি, মাটি, শব্দদূষণসহ নতুন একটি দূষণ সারা বিশ্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে সামনে আসছে, আর তা হলো সমুদ্রদূষণ। আন্তর্জাতিক একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, সারা বিশ্বে পরিবেশ দূষণের জন্য যত ধরনের উপকরণ দায়ী, তার প্রায় ৪২ শতাংশ উপকরণ কোনো না কোনোভাবে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। এতে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য নষ্ট হওয়া ও সমুদ্রতলে অপচনশীল বস্তুর স্তর তৈরি হচ্ছে। এটা পরোক্ষভাবে সমুদ্রসীমার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্যও দায়ী।
সমুদ্রদূষণের পূর্ববর্তী ধাপ হলো নদীদূষণ। ২০১১ সালের বুড়িগঙ্গা নদীর বর্জ্য অপসারণ প্রকল্প থেকেই আমরা উপলব্ধি করতে পারি সমুদ্রদূষণের তীব্রতা কত। ওই সময় নদীর তলদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পলিথিন, পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী, টিনের কৌটা, লৌহজাত দ্রব্য, কাঠের টুকরা ইত্যাদি উঠে আসে।
এসব পরিত্যক্ত অপচনশীল পদার্থের উৎস আমাদেরই প্রতিদিনের ব্যবহার্য বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের মোড়ক। আমাদের দেশে ভোগ্যপণের মোড়ক হিসেবে অপচনশীল পদার্থ যেমন : পলিথিন, প্লাস্টিক, টিন ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে যথেচ্ছভাবে। সুষ্ঠু ও পদ্ধতিগতভাবে পুনঃপ্রতিক্রিয়ার ব্যবস্থা না থাকায় এসব অপচনশীল দ্রব্য বিভিন্নভাবে নদনদী ও খাল-বিলে গিয়ে পড়ছে। ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘিœত হচ্ছে, যা জলসম্পদের প্রতি হুমকি। শহরাঞ্চলের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে এসব অপচনশীল পদার্থ।
কথা হচ্ছে সাবান, তেল, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট ইত্যাদির মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। কাগজ বা দ্রুত পচনশীল দ্রব্যের মোড়ক ব্যবহারে উৎসাহ দিতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে না পারলে পরিবেশের প্রতি সুবিচার করা কখনই সম্ভব নয়।
সাজ্জাদ হোসেন
ঝিনাইদহ।
কবে ফল বেরোবে?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭তম ব্যাচের ¯œাতকোত্তর পরীক্ষার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করে রেকর্ড গড়েছিল অর্থনীতি বিভাগ। কিন্তু সেই বিভাগই ৩৮তম ব্যাচের ¯œাতকোত্তর পরীক্ষার পর দীর্ঘ সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি। এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ¯œাতকোত্তর শ্রেণির চূড়ান্ত পর্বের লিখিত পরীক্ষা গত বছরের ৭ আগস্ট শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো ফল পাননি তারা। এ জন্য বিভাগের শিক্ষকদেরই দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষকদের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কিছু ত্রুটিপূর্ণ খাতা পাওয়ার কারণে ¯œাতকোত্তর পরীক্ষার ফল প্রকাশ হতে বিলম্ব হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাধারণত পরীক্ষা হওয়ার আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফল দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু শিক্ষকরা যথাসময়ে খাতা মূল্যায়ন করে না দেওয়ায় সময়মতো ফল দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর যথাসময়ে ফল প্রকাশিত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এই ব্যাচের প্রায় সবাই বেকার। কিন্তু সাত মাসেও তারা জানতে পারেননি, আদৌ ¯œাতকোত্তর পরীক্ষায় পাস করেছেন কিনা। এ জন্য কেউ চাকরিতে আবেদন করতে পারছেন না। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ, যত শিগগিরই সম্ভব পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিন।
খোরশেদ আলম
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন