বিশেষ সংবাদদাতা : ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট বাজেভাবে হেরে ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং ভুল শট সিলেকশনের দায়টা নিজের উপরই নিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন টেস্ট অধিনায়ক তামীম ইকবাল। নিজেকে অপরাধী বলে গণ্য করে কৃত অপরাধের জন্য দলের পক্ষ থেকে চেয়েছেন ক্ষমা। তবে নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতায় একটু বেশিই চটেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সফরের প্রতিটি ম্যাচ আশা জাগিয়ে হেরে যাওয়ার কারণ হিসেবে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে করেছেন অভিযুক্ত। গতকাল মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে বিসিবি সভাপতির কণ্ঠে এই অভিযোগÑ ‘প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুই দল ১ হাজারের বেশি রান করেছে। সেই ম্যাচ জেতার কোন সম্ভাবনা আমাদের ছিল না। আমাদের উচিত ছিল ক্রিজে থেকে সময়টা একটু নষ্ট করবো। এরপর হয় আমরা জিতবো নয়তোবা ড্র হবে। তার জন্য এক থেকে দেড়ঘণ্টা আমাদের আরো ব্যাটিং করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা যেভাবে খেলেছে, তা দেখে মনে হয়েছে, তারা যেনো হারের জন্যই খেলছে। প্রথম ইনিংসে ৬০০ রান করা দল দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫০ করতে পারবে না। এটা ভাবাটাইতো বোকামি।’
ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে সাকিবের ২১৭ কে বাহাবা দিতে পারছেন না বিসিবি সভাপতিÑ ‘ওই দু’শ রান এক ইনিংসে না করে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ম্যাচগুলোতে যদি ৩০ রান করে করতো, তাহলেও আমরা ম্যাচ জিততাম। টেস্টে ওই ইনিংসে ২শ’ না করে যদি দেড়শ’ সে করতো, পরের ইনিংসে অবশিষ্ট ৫০ করতো, তাহলেও হতো। রান কম করে উইকেটে যদি সময়টা বেশি কাটাতে পারতো তাহলে কিন্তু আমার দলের জন্য লাভ হতো।’
শুধু সাকিব একা নন, অন্য সিনিয়র ক্রিকেটারদের উপরও বিরক্ত তিনিÑ ‘এটা শুধু একজন দুইজন খেলোয়াড় নয়, বেশিরভাগ সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যেই এই সমস্যা ছিল। ওরা যেভাবে খেলেছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। অনেকের হয়তো খেলার স্টাইলই এই রকম। তারা হয়তো বলবে এভাবেই খেলে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু এই ধরনটা টেস্টের জন্য সহায়ক নয়। দলের গুরুত্বপূর্ণ তিন খেলোয়াড় যখন ইনজুরিতে, তখন যদি আপনি এসে মেরে বসেন। পরে বলেন, এই শটেই তো আমি রান পেয়েছি। অথচ তার উপরই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব। বারবার একই শটে ওরা আউট হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’
বাংলাদেশ দলের বাজে ফিল্ডিং, ভুরি ভুরি ক্যাচ মিসকেও আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছেড়েছেন বিসিবি সভাপতিÑ ‘হাত থেকে সহজ সব ক্যাচ ছুটেছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। টেস্টে রান আউট হওয়া, রান আউট থেকে বাঁচতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়া- এ বিষয়গুলোও খুব দুঃখজনক।’
দলের সঙ্গে আছেন ইংলিশ ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসল, মাসে প্রায় ১২ হাজার ডলার মাইনে পান। অথচ এই ফিল্ডিং কোচ থাকতে ফিল্ডিংয়ের এই দশা মানতে পারছেন না বিসিবি সভাপতি। ক্রিকেটারদের ফিল্ডিংয়ের উন্নতির প্রয়োজনে বাজে ফিল্ডিংয়ের অপবাদ থেকে তাদেরকে মুক্তি দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা ফিল্ডার সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার জন্টি রোডসকে বিশেষজ্ঞ ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা ভাবছেন বিসিবি সভাপতিÑ ‘আমরা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি বিষয়টা। জন্টি রোডসের মতো ফিল্ডিং কোচ নিয়ে আসছি বাংলাদেশে। ফিল্ডিং ও ফিটনেসের ওপর জোর দেয়া লাগবে। কেননা আমাদের অনেক খেলা রয়েছে সামনে। ভালোমানের ফিজিও ট্রেনারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সবাই আসবে কি না বলতে পারছি না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন