শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

আসহাবে কাহ্ফের গুহায় মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কে এস সিদ্দিকী
(২০ জানুয়ারি প্রকাশিতের পর)
বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিস্ময়কর ঘটনা আসহাবে কাহফের কাহিনীর বিবরণ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হওয়ায় এর গুরুত্ব তাৎপর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) বাগদাদের সফর শেষ করে প্রত্যাবর্তনের পথে জর্দানের রাজধানী আম্মানে অবতরণ করেন। সেখান থেকে তার সফরসঙ্গীরাসহ হারামাইন শরীফের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা। কাজেই আম্মানে মাত্র কয়েক ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করতে হবে। মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) তার প্রতিনিধিদলসহ এ স্বল্প সময়ের জন্য আম্মান কর্তৃপক্ষের সরকারি মেহমান। দুপুরের খাওয়ার দাওয়াতও কর্তৃপক্ষের। এ সময়ের পূর্বে হাতে সময় আছে দুই-আড়াই ঘণ্টার বেশি নয়। আম্মান কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী, এ স্বল্প সময়ের সবচেয়ে নিকটস্থ দর্শনীয় স্থান আসহাবে কাহফের গুহা দেখে আসা যেতে পারে। প্রস্তাবটি মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) পছন্দ করলেন। কর্তৃপক্ষ যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ির ব্যবস্থা করে দিলেন। দুপুরে খাবারের আগেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তাই কালবিলম্ব না করে মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রওনা দেন।
আম্মান শহর থেকে শত কিলোমিটার দক্ষিণ এবং আকাবা উপসাগর থেকে আম্মানগামী রাজপথ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এ ঐতিহাসিক স্থানে পৌঁছাতে খুব বেশি বিলম্ব হলো না। গুহাটি খনন কার্যের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হওয়ার কুড়ি বছর পর এলাকাটির প্রাকৃতিক পরিবেশ জঙ্গলাকৃতির হলেও তখন তাতে জনবসতি ছিল বলে মনে হয় না। পাহাড়ি এ গুহায় প্রবেশের পথ করা হয়েছিল এবং মুখের কাছে সমতল ভূমিতে নামাজের একটি ছোট্ট খোলাঘর ছিল। টিনের ছাদ এবং চতুর্দিকে খোলা নিচে বালি দিয়ে ভরাট করা। রোদবৃষ্টি হতে বাঁচার জন্য আশ্রয়ের স্থান। তখনো ঘরটি নির্মাণ পর্যায়ে ছিল, প্রবেশ করলে বাতাসে বালি উড়ে চোখ-মুখ বন্ধ, বালি রাশিতে নামাজের সেজদা দিলে কপাল বালি মিশ্রিত হয়ে যেত। কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য এই যে, তখনো স্থানটি আবাদ হয়নি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষে হতে গুহার পরিচিতিমূলক আরবি প্রচারপত্র পর্যটকদের মধ্যে পরিবেশন করা হতো, যাতে আসহাবে রাকীম সম্পর্কিত ও প্রচারপত্রও ছিল।
মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর নেতৃত্বে সফরকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের যারা আসহাবে কাহফের গুহা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তাদের সকলের নাম এখন মনে পড়ছে না, তবে প্রথমে যারা গুহায় প্রবেশ করেন তারা হচ্ছেন : ছারছিনা শরীফের পীর মাওলানা শাহ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ (রহ.), মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.), মাওলানা নিয়াজ মোহাম্মদ মাখদুম খোতানী (রহ.), মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন শাহীন, (সাহেবজাদা মাওলানা এম এ মান্নান রহ.) এবং এই লেখক। গুহায় একসঙ্গে চার-পাঁচজন লোকের বেশি সংকুলান হয় না। সে জন্য উপস্থিত সবাই পর্যায়ক্রমে প্রবেশ করেন। গুহার অভ্যন্তরের অবস্থা সকলে গভীর ভক্তি সহকারে ও গভীর মনোযোগের সাথে প্রত্যক্ষ করেন এবং গুহায় সংরক্ষিত কংকাল তথা মানুষের মাথার খুলি ও এক পাশে কুকুরের মাথার খুলিও পর্যবেক্ষণ করেন। তারা কোরআনে বর্ণিত আসহাবে কাহফের সংখ্যা ও কিতমির নামক কুকুরের বিষয় নিয়ে বলাবলি করতে থাকেন এবং কংকালগুলো সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করতে থাকেন। গুহার ভেতরে তাদের আলোচনায় এ কথাও উঠে আসে যে, বোখারীতে বর্ণিত ‘হাদিসুল গাড়ে’ যে তিন ব্যক্তির কাহিনী বর্ণিত তারা ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, যাদের আসহাবে রাকীম বলা হয়েছে, তারা ভিন্ন ব্যক্তিত্ব না হলে এ গুহায় তাদের নাম নিদর্শন নেই কেন। তবে মনে হয়, আসহাবে কাহফ আসহাবে রাকীমের অপর নাম। যেমন বিভিন্ন তফসিরে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত সংশয়যুক্ত আলোচনা আমিও উপভোগ করছিলাম। এ সময় গুহার তলদেশে ছড়িয়ে-ছিটানো ইটকণিকাগুলো হতে কয়েকটি টুকরা কুড়িয়ে আমি জামার পকেটে ভরছিলাম। ছারছিনার পীর সাহেব দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবারা এসব মাটির টুকরো দিয়ে কী করবে? বললাম, আসহাবে কাহফের নাম লিখে যদি বিভিন্ন উপকারে তাবিজ লেখা যায়, তাদের এ খাটি মাটি দ্বারা ‘মাটি পড়া’র কাজ করা যাবে। সবাই এ কথায় হেসে ওঠেন।
গুহা হতে বের হয়ে আসার পর গুহার তত্ত্বাবধায়করা আমাদেরকে আসহাবে কাহফ ও রাকীম সংক্রান্ত কিছু আরবি কাগজপত্রও বুকলেট প্রদান করেন। কোরআনের বরাতে আসহাবে কাহফ ও রাকীমের কথা তাতে উল্লেখ ছিল। মাওলানা খোতানী হুজুর বোখারীতে বর্ণিত হাদিসুল গাড়ে এর ঘটনা বর্ণনা করে বললেন, বোখারির সহি বর্ণনাকে অস্বীকার করা যায় না। সুতরাং দুই ঘটনাকে এক ও অভিন্ন করার উপায় নেই। পীর সাহেব ও মাওলানা মান্নানও একই মত পোষণ করেন। তবে বলেন, আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভালো জানেন।
আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রাকীম বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়। এ দুটি দল সম্পর্কে প্রাচীন তফসিরবিদগণ যেমন সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি, আধুনিকগুলোতেও কল্পনা-ধারণার ফানুস পরিলক্ষিত হয়। ১৯৬১ সালে জর্দানের আলোচিত স্থানে আসহাবে কাহফের কথিত গুহা আবিষ্কৃত হওয়ার পর এ ঘটনা দুটির স্থান সম্পর্কে বিভক্তিমূলক মতামতই বিদ্যমান এবং নানা স্থানের নাম পাওয়া যায়। এসব বিরোধের উপস্থিতি বহুকাল পরে আবিষ্কৃত জর্দানের রাজধানী আম্মানের নিকটবর্তী স্থানে কথিত আসহাবে কাহফের গুহায় প্রাপ্ত মানব কঙ্কালগুলো ও কুকুরের কঙ্কালকে কোরআনে বর্ণিত আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রাকীমকে নিশ্চিত রূপে এক করে দেখার বিষয়টি কতটুকু সমর্থনযোগ্য সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বর্ণিত স্থানে অর্থাৎ গুহায় আবিষ্কৃত এসব কঙ্কাল আসহাবে কাহফের বলে নির্ণীত ও নিশ্চিত করার পদ্ধতি কোরআনে বর্ণিত ব্যাখ্যার আলোকে করা হয়ে থাকলে ওই কঙ্কালগুলো যে আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রাকীমের মাথার খুলি, তা নির্ণয় করার প্রচলিত আধুনিক পদ্ধতির অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায় না।
বোখারি শরিফের প্রথম খ-ে ৪৯২ পৃষ্ঠায় শেষ চার লাইনে আসহাবে কাহফের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। কোরআনের আয়াতের প্রথমাংশ ‘আম হাসিবতা আন্না আসহাবাল কাহফে ওয়ার রাকীম’ প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। সম্ভবত এ প্রসঙ্গে কোরআনে বিস্তারিত বর্ণিত হওয়ায় ইমাম বোখারি আসহাবে কাহফের কাহিনী বর্ণনা করা হতে বিরত থেকেছেন। কোরআনে আসহাবে রাকিম সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। ইমাম বোখারি আসহাবে কাহফের পর পর হাদিসুল গাড় শিরোনামে আসহাবে রাকীমের বিস্তারিত কাহিনী বর্ণনা করেছেন, যা পরবর্তী ৪৯৩ পৃষ্ঠার অধিকাংশেই এ কাহিনীর বিবরণ রয়েছে। এতে অনুমিত হয় যে, কোরআনে আসহাবে কাহফের বিবরণ থাকায় ইমাম বোখারি তার পুনরাবৃত্তি করেননি। পক্ষান্তরে কোরআনে আসহাবে রাকীমের বর্ণনা না থাকায় ইমাম সাহেব ‘হাদিসুল গাড় শিরোনামে যে ঘটনাটির বিশদ বিবরণ প্রদান করেছেন এবং দুটি ঘটনাই ভিন্ন ভিন্ন এবং বিভিন্ন সময়কালে সংঘটিত হয়েছিল। আসহাবে কাহফের সময়কালে তফসিরবিদগণের মতভেদ পরিলক্ষিত হলেও সময়কাল নির্ণয় করা হয়েছে, কিন্তু হাদিসুল গাড়ের ঘটনা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) তিন ব্যক্তির কথা বলেছেন, তারা কোন যুগের কিংবা কোন শাসনামলের, তা উল্লেখ করেননি এবং হাদিসের ভাষ্যকারগণের বিবরণাদিতেও সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার অভাব রয়েছে। সুতরাং দুটি ঘটনার ব্যক্তিত্ববর্গকে এক ও অভিন্ন প্রতিপন্ন করা এবং উভয়কে একই ঘটনা প্রতিপন্ন করার যৌক্তিকতা মেনে নেয়া সমীচীন হবে কিনা সে প্রশ্ন পূর্বে যেমন ছিল এখনো রয়েছে। আসহাবে কাহফের স্থান সম্পর্কেও প্রশ্ন থেকে যায়।
মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের মধ্যে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বেশ কিছু ওলামা সদস্যসহ বিশিষ্ট আলেম এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিও ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আসহাবে কাহফের গুহায় প্রবেশ করে কঙ্কালগুলো দেখেছিলেন। যাদের এ বিষয় জানা ছিল না, তারা অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে আসহাবে কাহফের পরিচয় তাদের ঘটনা জানতে চান। যেহেতু ঘটনা-কাহিনী সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে তাই তা খোলাসা করে জানানো হলো।
তাদের সংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। ৭ হতে ৯ পর্যন্ত বর্ণিত হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশের মতে, তারা ৭ জন। তাদের সঙ্গে কিতমিরও ছিল। তারা মূর্তি পূজা ত্যাগ করে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তারা অত্যাচারী রোমান বাদশাহ দুকয়ানুসের জুলুম হতে আত্মরক্ষার জন্য পালিয়ে যান এবং একটি গুহায় আত্মগোপন করে। সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন এবং সুদীর্ঘকাল পর জাগ্রত হয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। বলা হয়ে থাকে, কেয়ামতের সময় আবার জাগ্রত হবেন। কোরআনের সূরা কাহফে আল্লাহতায়ালা তাদের কাহিনী বর্ণনা করেছেন।
আসহাবে কাহফের পরিচয় সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নানা মত রয়েছে। কেউ কেউ তাদেরকে আরেফ ও বাতেন বা গুপ্ত জ্ঞানের অধিকারী মনে করেন। তারা কোন নবীর অনুসারী এবং কোন শরিয়ত মেনে চলতেন, এ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, আসহাবে কাহফ হজরত ঈসা (আ.)-এর দ্বীনের অনুসারী ছিলেন। কারো কারো মতে, তার পূর্বে তাদের জন্ম হয়েছিল এবং তারা হজরত মুসা (আ.)-এর শরিয়তের অনুসারী ছিলেন। তবে তাদের শরিয়ত যেটাই হোক না কেন তারা তওহীদবাদী ছিলেন বলে অনেকের অভিমত। আসহাবে কাহফের সংখ্যা সম্পর্কেও মতভেদ রয়েছে। তাদের সংখ্যা ৭ এবং ৭-এর অধিক এবং অষ্টম হচ্ছে তাদের সঙ্গী কুকুর যার নাম কিতমির বলা হয়েছে।
বর্ণিত হয়ে থাকে যে, আসহাবে কাহফ রোম সা¤্রাজ্যের এক বাদশাহর পুত্র ছিলেন। তাদের যুগ ছিল হজরত ইউসুফ (আ.) পর এবং হজরত শোয়েব (আ.) ও হজরত ইউনুস (আ.)-এর প্রথম দিকে। দুকিয়ানুস নামক বাদশাহ তাদের পিতার দেশে আক্রমণ চালায় এবং তাদের পিতা নিহতের পর ৭ রাজপুত্রকে দুকিয়ানুস গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পরে যাদের নাম আসহাবে কাহফ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। গ্রেফতারকৃত এ রাজপুত্রগণ দুকিয়ানুস বাদশাহর অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের কুকুর কিতমিরকে নিয়ে রোমের একটি গুহায় আত্মগোপন করেন। যেহেতু তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন, তাই ঘুমিয়ে পড়েন। আল্লাহতায়ালা তাদের একশত বছর ঘুমন্ত রাখেন এবং গুহাকে ভয়ঙ্কর ও ভীতিকর করে রাখেন, যাতে লোকেরা তাকে তামাশাও প্রদর্শনী করতে না পারে। দুকিয়ানুসের তিনশ নয় বছর পর রোমের বাদশাহ ‘ওলিয়ামের’ যুগে আসহাবে কাহফ জাগ্রত হয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন এবং কেয়ামত পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকবেন।
এখানে একটি ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ করতে হয়। ঘটনাটি হচ্ছে, মক্কার কাফের-মোশরেকরা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নবুওয়াতকে অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হয়নি, তাঁর ওপর নানাভাবে নিষ্ঠুর নির্যাতন এমনকি হত্যা করার ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত থাকে। অবশেষে তারা নযর ইবনে হারেস ও উকবা ইবনে আবি মুঈতকে মদিনায় এই উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে যে, আহবারে ইহুদের কাছে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াতের দাবি ও তাঁর অবস্থা সম্পর্কে ইহুদি প-িতদেরকে অবহিত করবে এবং তাঁর দাবিগুলোর সত্যতা সম্পর্কে কী কী প্রশ্ন করা যায়, তা জিজ্ঞাসা করবে। ইহুদি প-িতগণ তিনটি প্রশ্ন বলে দিলেন এভাবেÑ (১) আসহাবে কাহফ (২) জুলকার নাইন এবং  (৩) রূহ। এ তিনটি প্রশ্নের সঠিক জবাব মোহাম্মদ (সা.) দিতে পারলে তার নবুওয়াতের প্রতি তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করতে পারো।
ইহুদি আহবারের বাতলানো সবক তিনটি নিয়ে কাফের নেতৃদ্বয় মক্কায় প্রত্যাবর্তন করে এবং একটি বিরাট সমাবেশ করে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্নগুলো করে। এর আগেও তারা কিছু প্রশ্ন করেছিল। এসব প্রশ্নের জবাবে আল্লাহতায়ালা সুরা কাহফের সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলো নাজিল করেন। তফসিরবিদ ও ঐতিহাসিকগণ আরবি ছাড়াও বহু ভাষায় এতদ সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা করেছেন এবং কাফেরদের তিনটি প্রশ্নের জবাব রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে আল্লাহতায়ালা কোরআনের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও কাফের-মোশরেকরা হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়নি, তারা জাহান্নামী হয়ে রয়ে গেছে।
সূরা কাহফে বর্ণিত আসহাবে কাহফের গুহার অবস্থান সম্পর্কে মতভেদের অন্ত নেই। ইতিহাসের এ বিস্ময়কর ঘটনার সঠিক স্থান যদি জর্দানের বর্ণিত স্থান হয়ে থাকে, তাহলে সৌভাগ্য বলতে হবে মরহুম মাওলানা এম এ মান্নানের নেতৃত্বে আসহাবে কাহফের গুহা প্রদর্শনকারী প্রতিনিধি দলকে যারা জীবনের একটি দুর্লভ সুযোগ লাভ করেছেন। এ সুযোগ কীভাবে ঘটল তা আরেক কাহিনী, যার সাথে জড়িত রয়েছে প্রতিনিধি দলের হারামাইন-শরীফাইন জিয়ারতের অপূর্ব সুযোগের ঘটনা। আসহাবে কাহফের গুহা প্রদর্শনের এ স্মরণীয় ঘটনা ১৯৮১ সালের জুন মাসের প্রথম দিকের। পরবর্তীকালে হয়তো স্থানটির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। (সমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন