শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

লালপুরে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে গাছিরা

| প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো: আশিকুর রহমান (টুটুল), লালপুর (নাটোর) : নাটোরের লালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মধুবৃক্ষ খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুর তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এ অঞ্চলের গাছিরা। বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও কম বৃষ্টিপাতের এলাকা হলো লালপুর থানা। শীতের আগমনে অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মধুবৃক্ষ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় গাছিদের যেন দম ফেলার সময় নেই। শুরু হয়েছে রস থেকে গুড় তৈরির কাজ। এই মধুবৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শীতের সকালে আমন ধানের মুড়ি আর খেজুরের সুমিষ্ট রস কে না পছন্দ করে। লালপুরের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রস ও নতুন ধানের চালের ক্ষির-পায়েশে পিঠাপুলি সবার পছন্দ।
গাছিরা মধুবৃক্ষ খেজুর গাছের মাথার কাছাকাছি জায়গা থেকে ডাল কেটে মাথা চেঁচে কয়েক দিন শুকিয়ে নেয়। তারপর ওই জায়গায় এক বিশেষ প্রক্রিরিয়াতে গাছ কেটে রস বের করে আর সেই রস হাঁড়িতে নেয়ার জন্য সেখানে গুজ-পাতাড়ি মারে। এই রস জ্বাল করে তৈরি করা হয় পাটালী, দানাদার ও ঝোলা গুড়। খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠাপুলি ক্ষির ও পায়েশ। এই নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে পিঠাপুলি, ক্ষির ও পায়েশ তৈরিকে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আসতে থাকে মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনী আত্মীয়স্বজন সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। আর এ আনন্দ উপভোগ করতে শহরের বাসিন্দারাও শীতের পিঠা খেতে গ্রামে চলে আসে। উপজেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে খেজুরের পাটালি গুড়।
মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও পাটালি উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালি রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে কতিপয় অসাধু মুনাফালোভী গুড় উৎপাদনকারীর কারণে উপজেলার এ ঐতিহ্য ¤øান হতে চলেছে। উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুরগাছের ওপর নির্ভরশীল। উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের গাছি মুনির ইসলাম, নাজমুল হোসেন, তয়জাল জানায়, এ বছর গাছিরা আগেভাগেই রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিল। এখন পুরোদমে রস সংগ্রহ ও রস থেকে পাটালি গুড় তৈরি করছি।
গ্রামবাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে এই খাত বিলুপ্তির পথে। তাই সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়ন আশা করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন