শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিবন্ধ

বিলাতে ইসলাম প্রচারে মোজাহিদ উদ্দিন দুবাগী

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কে,এস সিদ্দিকী : বাংলাদেশের সিলেট জেলার অন্তর্গত দুবাগ গ্রামে ১৯২৯ সালে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আল্লামা মোজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী। ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারিতে তিনি ব্রিটেনের লেস্টার শহরে গমণ করেন এবং স্থায়ীভাবে সেখানকার অধিবাসী হয়ে যান। বিগত প্রায় চার দশকে তিনি সেখানে উল্লেখযোগ্য বেশ কটি বাগান করেছেন, যেখানে শুধু ইসলামেরই ফুল ফোটে, যার সৌরভ-গৌরব লক্ষ করার মতো। এই সঙ্গে তার দোধারী তরবারি জবান ও কলম একই সাথে চলছে ইসলামের প্রচার-প্রসারে এবং পশ্চিমা অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে। মসজিদ-মাদ্রাসা খানকাহ প্রতিষ্ঠা, ওয়াজ-ইরশাদ-তলকী এবং গ্রন্থাবলি রচনার মাধ্যমে তিনি ইসলামের অসাধারণ সেবায় নিবেদিত আছেন। সে খবর অনেকেই জানে না।
আল্লামা দুবাগী সাহেবের কর্মবহুল জীবনের প্রায় অর্ধেক ইউরোপের মাটিতে অতিবাহিত হচ্ছে। দেশের অধ্যয়ন জীবনে তিনি অসাধারণ মেধা ও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন প্রতি স্তরে, প্রতিটি ক্ষেত্রে। ছাত্র জীবনে তার সবচেয়ে কৃতিত্ব ও সাফল্য হচ্ছে বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত। পবিত্র মক্কায় কেরাতে সাবআ অর্থাৎ সাত কেরাত শিক্ষা করেন তিনি যা এক অসাধারণ বিরল কৃতিত্ব। তার এ দুর্লভ অর্জন তাকে বিশুদ্ধ এবং ‘তাজবীদ’ শাস্ত্রবিদ হিসেবে শ্রেষ্ঠ কারীর মর্যাদা দান করেছে। তাই দেখা যায়, ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল হোক কিংবা রাজনৈতিক মঞ্চ হোক কোরআন তেলাওয়াতের জন্য তার ডাক পড়ত। উল্লেখ্য, সিলেটে বিশুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা হতে তিনি পূর্ণ উপকৃত হন এবং এ পর্যায়ে তিনি শ্রেষ্ঠ তেলাওয়াতকারী হিসেবে বহু পুরস্কারও লাভ করেন। তার ধীশক্তি খোদাপ্রদত্ত বলেই তিনি নামাজ ইমামের কেরাত শুনে শুনে কোরআনের বহু আয়াত আত্মস্থ করেন, যার কোনো তুলনা হয় না। তার তেলাওয়াতের বৈশিষ্ট্য সমসাময়িকদের মধ্যে তাকে অতি উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠা করেছে।
একজন মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্র হিসেবে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে, শ্রেণিতে তিনি বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করে বহু পুরস্কার, বৃত্তি লাভ করেন এবং অতি মেধাবী ও প্রতিভাবান ছাত্র হিসেবে সহপাঠীদের মধ্যে সেরা বলে গণ্য হন। অসাধারণ মেধার পাশাপাশি তিনি কঠোর পরিশ্রম-সাধনাকেও নিত্য সঙ্গী করে রেখেছিলেন। তার ছাত্রজীবনের সেই পরিশ্রম-সাধনা বৃথা যায়নি। বাস্তব কর্মজীনে তার সাফল্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় তার অধ্যাপনা জীবনের নানা ক্ষেত্রে। আল্লামা মোজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী দক্ষতা-পারদর্শিতার দৃষ্টান্ত রেখেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হতে অধ্যক্ষের পদ পর্যন্ত অলংকৃত করেছেন এবং অভিজ্ঞ দক্ষ পরিচালক হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনাম কুড়িয়েছেন। প্রখ্যাত মোহাদ্দেস ও রাজনীতিবিদ মওলানা মোশাহেদ আলী (রহ.) ও সুবিখ্যাত আধ্যাত্মিক সাধক আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেব কেবলা (রহ.) ছিলেন তার বুজুর্গ ওস্তাদ। আল্লামা মোজাহিদ উদ্দিন দুবাগী সাহেবের স্বদেশের কর্ম জীবন শুরু হয় সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা সিলেট হতে হাদিস শাস্ত্রে কামেল (টাইটেল) কৃতিত্বের সাথে পাস করার পর। স্বদেশে অবস্থানকালীন এ দীর্ঘ সময় সিলেট জেলার বহু মাদ্রাসায় নানা পদে এবং প্রধান মোহাদ্দেস হিসেবে শিক্ষকতার পবিত্র পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এ সময় তার হাজার হাজার ছাত্র-ভক্ত ছিল এবং মুফতি হিসেবে তার নাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং তরিক ও সিলসিলায় তিনি ফুলতলী ছাহেব কেবলার হাতে বয়াত হন। তিনি একজন মোহাদ্দেস, মুফতি এবং আধ্যাত্মিক সাধক হিসেবে স্বদেশে পরিচিতি লাভ করেন। বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতার অধিকারী আল্লামা দুবাগীর কর্মজীবনের এটি একটি খ-চিত্র।
কোন পরিস্থিতিতে এবং কী কারণে আল্লামা দুবাগী সাহেব প্রবাস জীবন অবলম্বন করেন তার সঠিক কারণ বলা না গেলেও ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি তিনি লেস্টার শহরে গমন করেন বলে জানা যায়। উক্ত শহরের মুসলমানদের জন্য বিশেষভাবে বাংলাদেশি মুসলমানদের জন্য সে সময় তার আগমন সৌভাগ্যের হয়েছিল। তখন থেকে এ যাবৎ প্রায় চার দশক মুসলমানদের জন্য একটি সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে তিনি ইসলামী শিক্ষা, ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও ইসলামী সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য এককভাবে জবান ও কলমের সাহায্যে যে অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলছেন তা উল্লেখ করার মতো। তার এ নীরব ভূমিকা পশ্চিমা কালচার অপসংস্কৃতি কবলিত তথা ইসলাম বৈরী শহরে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ তা ভেবে দেখার বিষয়। তিনি সে দেশের প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতিতে ইসলামের ঝা-াকে উড্ডীন করে রেখেছেন এবং ইসলাম প্রচারের নানা উপায় অবলম্বন করে চলছেন তা সম্যকরূপে অবহিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
আল্লামা মোজাহিদ উদ্দিন দুবাগী সাহেবের প্রবাস জীবন এখন প্রায় চল্লিশ বছর এবং তিনি ব্রিটেনেরই স্থায়ী অধিবাসী হয়ে গেছেন। বলা যায়, তার নিবাসটি সিলেট বাংলাদেশি উলামা-মাশায়েখ ও বিশিষ্টজনদের মিলন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিশেষত ব্রিটেনে অবস্থানকারী বাংলাদেশি মুসলমানদের জন্য আল্লামা দুবাগী একজন ধর্মচিন্তাবিদ হিসেবে সকলের আশা-ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন এবং তার সেখানে উপস্থিতি ও ইসলামী তৎপরতা মুসলমানদের জন্য যে অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে তা জানার আগ্রহ অনেকেরই।
ব্রিটেনের লেস্টারে গমনের পর আল্লামা দুবাগী দেখতে পান যে, সেখানে বাংলাদেশি যারা বসবাসরত তাদের যেমন কোনো স্মৃতি-নিদর্শন নেই, মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্যেরও কোনো প্রতীক চিহ্ন নেই। অথচ মুলসমানগণ সেখানে পূর্ব হতেই বসবাস করে আসছিল। ইসলামী শিক্ষা-দীক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সেখানে মুসলমানদের এ অভাব অনুভব করে আল্লামা দুবাগী সাহেব প্রথমে মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের অন্যতম প্রধান রোকন নামাজ অভ্যাস ও জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য একটি মসজিদ কায়েম করার প্রয়োজন বোধ করেন। তিনি ভাবলেন, একটা মসজিদ কায়েম করা গেলে সেখানে মক্তব-মাদ্রাসার প্রাথমিক কাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানাদির কাজ চালানো সহজ হবে। এ জন্য তিনি মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহের সৃষ্টি করতে থাকেন। মসজিদ-মাদ্রাসা স্থাপনে যে অর্থের প্রয়োজন তা তার কাছে ছিল না বিধায় তিনি জনগণের কাছ থেকে চাঁদা গ্রহণের উপায় অবলম্বন করেন এবং এ কাজে অচিরেই তিনি সফলতা লাভ করেন। তিনি সকলের চাঁদা-সাহায্য ও সহযোগিতায় একটি মসজিদের জন্য ভবন খরিদ করে তাকে দারুছ ছালাম নাম দিয়ে মসজিদ কায়েম করেন এবং তাতে নিজেই নামাজ পড়াতে শুরু করেন। তার এ মসজিদ থেকেই সূচনা লেস্টার শহরে ইসলাম প্রচারের অগ্রযাত্রা। নতুন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে সেখানে এরূপ একটি ধর্মীয় শুভ কাজ আরম্ভ করা যত সহজ মনে করা হোক না কেন, তত সহজ ছিল না। আল্লামা দুবাগী সাহেবের ত্যাগী মনোভাব ও তীব্র ধর্মীয় আশা-আকাক্সক্ষা এ কঠিন কাজকে সহজ করে দিয়েছিল এবং এ দারুছ ছালাম মসজিদই সেখানে মুসলমানদের প্রথম ধর্মীয়-ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র হওয়ার মর্যাদা লাভ করে, যা তারই অমর কীর্তি।
আল্লামা দুবাগী সাহেব এ মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও তার উন্নতি কল্পে যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাধনা করেছেন তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি প্রায় সভা-সমিতিতে ওয়াজ-বয়ানের মাধ্যমে মসজিদে চাঁদা দান করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করতেন। বিশেষ করে প্রত্যেক ঈদের জামাতে উপস্থিত জনতার নিকট তিনি মসজিদে চাঁদার জন্য উদার আহ্বান জানাতেন। এতে মসজিদের চাঁদা বাবদ হাজার হাজার পাউন্ড জমা হয়ে যায় এবং তার সমূদয় মসজিদের  উন্নয়নে ব্যবহার করতে থাকেন। তিনি মসজিদের ইমাম-খতিব হওয়া সত্ত্বেও তার স্বীয় টাউন লেস্টার ছাড়াও তিনি বিলাতের বিভিন্ন শহরে গিয়ে মানুষকে হেদায়েতের পথ দেখান এবং মসজিদের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করেন। এ মসজিদকে তিনি মাদ্রাসা হিসেবেও ব্যবহার করেন। তিনি এ মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ইসলামী শিক্ষা দিতে থাকেন। এ শিক্ষার মধ্যে বিশুদ্ধভাবে কোরআন পাঠ ছিল অন্যতম।
এ সময় তার কাছে সরাসরি শিক্ষালাভ করে অনেকে সুযোগ্য কারী হয়েছেন। তার কেরাতের বিশুদ্ধতায় মুগ্ধ হয়ে মসজিদের অনেক মুসল্লিও তার কেরাত-দরসে অংশগ্রহণ করে বিশুদ্ধভাবে কোরআন পাঠ শিখেছেন। তিনি একটানা ১৭ বছর পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠিত এ মসজিদে ইমামতি ও শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করে ১৯৯৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তার এ কীর্তিময় জীবন ব্রিটেনের লেস্টারবাসী মুসলমানদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। কেননা আল্লামা দুবাগী সাহেব সেখানে উপস্থিত না হলে সেখানে অবস্থানরত মুসলমানদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার বাহ্যত কোনো উপায় ছিল বলে মনে হয় না। জানা যায়, তার কাছে যারা বিশুদ্ধভাবে কোরআন পাঠ শিখেছেন তারা প্রত্যেকে নামাজের ইমামতি করার যোগ্যতাও অর্জন করেছেন।
মসজিদের ইমাম-খতিব-প্রতিষ্ঠাতা এবং বিলাতে এখন পর্যন্ত মুফতি পদের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন তিনি। সেখানে সুদীর্ঘকাল অবস্থানকালে ইসলামের নানা বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করার সৌভাগ্য তার হয়েছে। ইসলামী বিষয়াবলির অগাধ পা-িত্য না থাকলে ফতোয়া প্রদান সহজ নয়। আল্লামা দুবাগী সাহেব শরিয়ত বিশেষজ্ঞ হওয়ার সাথে সাথে একজন তরিকত বিশারদও। এ পর্যায়েও তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরিকত পন্থিদের তালীম-তারবিয়াতের জন্য বিভিন্ন শহরে বহু খানকাহ স্থাপন করেছেন। বলা হয়ে থাকে, বিলাতে তার আগমনের পূর্বে জৈনপুরী মছলকের কোনো আলেম ছিলেন না। তিনিই সেখানে এ মছলকের সর্বপ্রথম। তিনি শুরু থেকে এ মছলক প্রতিষ্ঠা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। এ জন্য প্রচার মাধ্যম হিসেবে ওয়াজ-বক্তৃতা ছাড়াও অব্যাহতভাবে লেখনী পরিচালনা করেন এবং লিফলেট প্রচারপত্র আকারে জরুরি মছলা-মাছায়েল বিতরণ করেন এবং সুন্নি ভাইবোনদেরকে ভ্রান্ত মতবাদ অনুসরণ হতে বিরত ও নিরাপদে রাখার জন্য সাধ্যমতো প্রয়াস চালাতে থাকেন। তিনি মুসলিম উৎসব পর্বগুলো যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য উৎসাহিত করেন এবং এসব উৎসবের তাৎপর্য মাহাত্ম্য লিফলেট আকারে প্রকাশ করে মুসলমানদের সামনে তুলে ধরেন। বিলাতের মতো এক পশ্চিমা দেশে একজন বাংলাদেশি আলেমের এরূপ দ্বীনি ইসলামী তৎপরতার গুরুত্ব অপরিসীম। তরিকতে এরূপ প্রচার তৎপরতা ইসলামের বিস্তার-প্রসারে যথেষ্ট কার্যকর বিবেচিত হয়ে থাকে। পীর-মাশায়েখ তথা সুফিয়ায়ে কেরামের প্রচার পদ্ধতি এদেশে যারা চালু করেছিলেন তাদের অনেকের মধ্যে মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.) অন্যতম। আল্লামা মোজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী তরিকতে এ সিলসিলার অনুসারী হওয়ায় বিলাতে গিয়ে তিনি তরিকতের ধারা প্রচার করেন এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। মাজহাবের দিক থেকে হানাফী পীর মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রহ.)-এর তরিকতপন্থি ফুলতলী সাহেব কেবলা (রহ.)-এর অনুসারী আল্লামা দুবাগী সাহেব। তারই বদৌলতে বিলাতে তরিকতের জৈনপুরী তরিকার প্রসার ঘটছে বলা যায়।
(আগামীবারে সমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন