ঈশ্বরদী উপজেলা সংবাদদাতা : ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের স্ত্রী গ্রাম্য বধূ নুরুন্নাহার চার দেয়ালের গন্ডির মধ্যে যার নিরিবিলি জীবন-যাপন করার কথা-তিনি আজ রীতিমত একজন সমাজ উন্নয়ন কর্মীর দায়িত্ব পালন করছেন। নিবিড় সবজি, ফলমূল, পোল্ট্রি ও গাভীর খামার করে এলাকার নারীদের কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করেছেন। দেশের সকল নারী কৃষককে ডিঙ্গিয়ে ২০১০ সালে সিটি গ্রæপ জাতীয় পুরস্কার, ২০১১ সালে দেশের সেরা নারী কৃষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি ব্রোঞ্জ পদক ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি স্বর্ণ পদক পেয়ে তিনি দেশের মানুষকে তাক লাগিয়ে দেন। জয়বাংলা নারী উন্নয়ন মহিলা সমবায় সমিতি ও এনসিডিপি গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সভানেত্রী নারী উদ্যোক্তা নুরুন্নাহার ১ হাজারের বেশি নারীদের সংগঠিত করে তাদের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
নুরুন্নাহার জানান,স্বামী কাজে বেরিয়ে গেলে একদম অলস বসে থাকা তার ভালো লাগতো না। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শায়েখ সিরাজের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান দেখে তারও ইচ্ছে জাগে বসতবাড়ির আশপাশে শাক-সবজি ও ফলমূলের বাগান গড়ে তোলার। এর পর আর থেমে থাকেনি নুরুন্নাহার। লালশাক, পুঁইশাক, বেগুন, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ, যা কিছু তিনি বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করেন তা দিয়েই সারা বছরের সবজির চাহিদা মিটে যায়। এমনকি বাড়তি কিছু আয়ও হয়। প্রথম প্রথম স্বামী তার এহেন কর্মকান্ডে কিছুটা বিরক্ত হতেন। তিনি আরও বলেন, এবার তার খামারে ৪ বিঘা জমিতে লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। গাছজুড়ে ঝুলে আছে শুধু লাউ আর লাউ। তিনি বলেন, খামারের উৎপাদিত লাউ ইতোমধ্যে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। এছাড়া এখনো গাছে অসংখ্য লাউ ঝুলে আছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রওশন জামাল বলেন, নুরুন্নাহার বেগম পরিশ্রম, ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়, সাহস ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে সংগ্রাম করে সাহসীকতার মধ্য দিয়ে কৃষি খামার করে তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা ও খামারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। দেশের সকল নারী কৃষককে ডিঙ্গিয়ে ২০১০ সালে নুরুন্নাহার সিটি গ্রæপ জাতীয় পুরস্কার পেয়ে যান। ২০১১ সালে দেশের সেরা নারী কৃষক হিসেবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি ব্রোঞ্জ পদক ও ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি স্বর্ণ পদক পেয়ে তিনি দেশের মানুষকে তাক লাগিয়ে দেন। পরিশ্রম মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায় তার বাস্তব প্রমাণ হলো নুরুন্নাহার কৃষি খামারের স্বত্বাধিকারী কৃষাণী নুরুন্নাহার বেগম। কঠোর পরিশ্রম করে নুরুন্নাহার বেগম একজন মডেল খামারী হিসেবে ইতোমধ্যে ঈশ্বরদীতে পরিচিতি লাভ করেছেন। নুরুন্নাহার বেগমের সফলতা দেখে ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের নারীরাও রীতিমতো প্রতিযোগিতামূলক কৃষি কাজে এগিয়ে এসেছেন। পরিশ্রম, ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়, সাহস ও মেধাকে কাজে লাগাতে পারলে নুরুন্নাহার বেগমের মতো সকলেই এক সময় ক্রমান্বয়ে উপরে উঠতে থাকবে। তিনি বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে সবজি, ফলমূল, পোল্ট্রি ও গাভী চাষি নুরুন্নাহার বেগমের খামারটি পরিপাটিভাবে সাজানো গোছানো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন