সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

জাল স্মার্টকার্ড ও ভুয়া ভোটার তৈরির কর্মকর্তারা আবারো নিয়োগ পাচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে গুঞ্জন

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভোটার আইডি কার্ড জালিয়াতি এবং ভুয়া ভোটার তৈরিসহ নানা দুর্নীতির দায়ে দুইবার চাকরিচু্যুত মোস্তফা ফারুক ও রাজবাড়ী আইডিয়া প্রকল্পের জাকির হোসেনকে আবারো স্মার্টকার্ড প্রকল্পে নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়াও কয়েকজন র্কমকর্তাকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ মোস্তফা ফারুক চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে নিয়োগ পান। সে সময় তার বিরুদ্ধে জাল ভোটার তৈরি, ভুয়া জন্ম সনদ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন বাণিজ্যসহ বেপরোয়া দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় ভোটারদের লিখিত অভিযোগের ফলে থানা নির্বাচন অফিসার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগে লিখিত পত্র প্রেরণ করে কমিশনের কাছে। বিষয়টি নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ডাটা এজ-আইপিপল কনসোর্টিয়ামের দৃষ্টিগোচর হয়। এর পরে আইডিইএ/এইচআর ০২০-২০১২-৫৭২ স্মারকে মোস্তফা ফারুককে ২০১৬ সালের ২২ জুন চাকরিচ্যুত করা হয়। স্থানীয় কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার তদবিরের মাধ্যমে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নতুন সার্কুলারে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট/সাপোর্ট পদে নিয়োগ পায় মোস্তফা ফারুক এবং মো. মহিউদ্দিন। তখন এ পদটি তাদের নিয়োগের জন্য সৃষ্টি করা হয়। পরে তাদের কোনো প্রকার পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেয়া হয়। এদিকে ভুয়া ভোটার তৈরির অভিযোগে রাজবাড়ী জেলার আইডিয়া প্রকল্পে চাকরিচ্যুত অপারেটর জাকির হোসেনসহ কয়েকজনকে স্মার্টকার্ড প্রকল্পে আবারো নিয়োগ দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে চাকরিচ্যুত হয় নিয়োগের জন্য অপেক্ষমান থাকা জাকির হোসেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরপর কিভাবে তারা নিয়োগ পাচ্ছে এ নিয়ে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, স্মার্টকার্ড বিতরণে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছে কমিশন। তারপর দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিলে কমিশনের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে। চিহ্নিত এসব অপরাধীকে নিয়োগ দিলে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি আরো বাড়বে।
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, স্মার্টকার্ড প্রকল্পের বিষয়ে জাতীয় পরিচয়ত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকে জানেন। অপনি তাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা ইসি সচিবালয়ের কোনো বিষয় হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। দুর্নীতিবাজদের কোথাও নিয়োগ দেয়া আমাদের কাম্য নয়। আমি সম্ভব হলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের সাঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবহিত ছিলাম না। আপনি জানালেন, আমি কালকের ভেতর তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমরা বিতর্কিত কাউকে নিয়োগ দিতে চাই না, দেশে অনেক যোগ্য জনবল আছে। তাদের স্থানে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হবে। গত বছরের ৩ অক্টোবর থেকে নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে নির্বাচন কমিশন। ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ১৮ মাসের মধ্যে ৯০ মিলিয়ন (৯ কোটি) স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেয়ার জন্য ফ্রান্সের ‘অবার্থার টেকনোলজিস’ নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সালের জুনে নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়ার কথা ছিল ইসির। কিন্তু সময়মতো না দিতে পারার আশঙ্কা ইসি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ব্যয় না বাড়ানোর শর্তে এ প্রকল্পে আরো ১৮ মাস সময় বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন