শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

খুলনায় বেপরোয়া সড়ক দুর্ঘটনায় শঙ্কিত পথচারী

| প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : মহানগরীর খালিশপুর বিআইডিসি রোডে জুটমিল শ্রমিক আল মামুন সিমান্ত (৪১) গতকাল (বুধবার) সকাল পৌন ৬টায় বাসের চাপায় নিহত হয়েছেন। বাসা থেকে বাইসাইেকেলযোগে কর্মস্থল ক্রিসেন্ট জুট মিলে যাওয়ার পথে পিপলস গোলচত্বরে এলে বরিশালগামী সৈয়দ পরিবহন তাকে চাপা দেয়। অন্যদিকে, খুলনা-যশোর মহাসড়কে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রের সামনে মাহেন্দ্রার ধাক্কায় যাত্রীসহ একটি রিকশা উল্টে যায়। তাতেও গতি বেগ না কমিয়ে চম্পট দেয় মাহেন্দ্রাটি। গতকাল (বুধবার) দুপুর ২টার দিকের আকস্মিক এ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা হতবিহ্বাল হয়ে পড়েন। গত মঙ্গলবার বিকেলে একই রোডের নিউমার্কেটের সামনে মহেন্দ্রার চাকায় পিষ্ট হয়ে অজ্ঞাত রিকশাচালক (৫০) নিহত হন। এরআগে, গত ৩ এপ্রিল বিকেলে নগরীর বৈকালী পেট্রোল পাম্পের সামনে মাহেন্দ্রা ও জিপ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও চালকসহ দু’জন গুরুতর আহত হন। এখানেই শেষ নয়; নগরীতে প্রতিদিন এমনি ছোট-বড় দুর্ঘটনায় ঘটছে অহরহ। সব ঘটনা জানাজানি না হলেও বেপরোয়া সড়ক দুর্ঘটনায় শঙ্কিত পথচারীর।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন (নিসচা) খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বিপব বলেন, “বিভাগীয় শহর খুলনায় প্রতিদিন বাড়তি জনসংখ্যার যানবাহন যাতয়াত বাড়ছে। সে অনুযায়ী সড়ক প্রশস্তকরণ, যানবাহনের সংখ্যা ও রুট নির্ধারণ কার্যত হয়নি। ট্রাফিক সিস্টেমও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারছে না। শহরের কোথাও না কোথাও প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে রাস্তায় নামলে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কে কাটে নগরবাসীর।”
কেসিসি’র সূত্রমতে, মহানগরীতে ৬৪০ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ছোট-বড় এক হাজার ২১৫টি সড়ক রয়েছে। ব্যস্ততম মহাসড়ক, মেইন রোড থেকে শুরু করে শহরের প্রতিটি অলিগলিতে চলে ২৫ সহস্রাধিক ইজিবাইক, দশ সহস্রাধিক মাহেন্দ্রা, অসংখ্য অটোরিকশা ও ৪০ হাজারের অধিক রিকশা।
ওয়াসার সূত্র বলছে, পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৬৫০ কিলোমিটার ডিস্ট্রিবিউশন লাইন এবং ৩১ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন বসানোর কাজ চলছে। এজন্য কেসিসি’র আওতাধীন ৩১ কিলোমিটার রাস্তা খনন করা হচ্ছে। ফলে নগরীর অধিকাংশ সড়কের অবস্থা অবস্থা সিজারিয়ান রোগীর মতোই। এটিও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
একাধিক পথচারী ও যাত্রীর অভিযোগ, কেএমপি কমিশনার যাতয়াতের সময়টুকুই তার নির্ধারিত সড়কে ট্রাফিক পুলিশকে খুব বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখা যায়। অন্য সময় দেখা যায় না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে স্বীকার করে কেএমপি’র সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, তবে বাড়ছে কি না তা পরিসংখ্যান না দেখে বলা সম্ভব নয়। আর কেএমপি কমিশনার যাতয়াত রুটে ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেন, এ অভিযোগ সঠিক নয়। আজ (বুধবার) শহরের ১৭টি ভিআইপি ডিউটি ছিল। বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা জজসহ রাষ্ট্রের কাজে নিয়োজিত দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের একটু আগে ছেড়ে দিলে ক্ষতি কি? আর সকালেও কেএমপি কমিশনার দু’মিনিট রাস্তায় আটকে ছিলেন। ট্রাফিক সিস্টেম উন্নয়নের জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন, সচেতনতা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন