শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

নওগাঁয় কালবৈশাখী : শিলাবৃষ্টিতে ইরি-বোরোর ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : বৈরি আবহাওয়ায় নওগাঁয় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ইরি-বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি আর বাতাসে ধানের গাছগুলো পড়ে গিয়ে মাটি আর পানিতে একাকার হয়ে গেছে। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বলেছেন ফসলের ক্ষতি হলে ফলনের তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। তবে জেলায় কি পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা এখন নিরুপণ করতে পারে কৃষি অফিস।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬২ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি অর্জিত হয়েছে। তুলনামূলক কমছে ধানের আবাদ। ভ‚পৃষ্টে পানিস্তর দিন দিন কমে যাওয়ায় ফলে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প পানিতে ফসল উৎপাদনে কৃষকদের রবি শষ্যের প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে। ফলে ধানের আবাদ এ বছর কমে যাওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে রবি শষ্য। সোনালী ধানে ছেঁয়ে গেছে সারা মাঠ। কৃষকদের বুক ভরা আশা। আর কয়েকদিন পর মাঠের ফসল ঘরে তোলা। কৃষকদের সেই আশা যেন গুড়ে বালি হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। আর সাথে হালকা শীলা বৃষ্টি। গত বুধবার থেকে ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে ধানখেতে জমেছে পানি। বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে খেতের কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ধানগাছগুলো মাটিতে শুয়ে পড়ে একাকার হয়ে গেছে।
জেলার অন্যান্য উপজেলার তুলনায় সদর উপজেলা, আত্রাই, রাণীনগর, মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ধানের ক্ষতি হয়েছে। ধান পরিপুষ্ট হয়ে পাকার আগেই মাটিতে পড়ে যাওয়া ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের। সময়ের আগে ধান কাটার ফলে ফলনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। আবহাওয়ার এই অবস্থায় একই সাথে মাঠে ফসল কাটায় শ্রমিকও সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের।
সদর উপজেলার দুবলহাটি গ্রামের বয়জেষ্ঠ্য কৃষক আফসার আলী বলেন, ৪ বিঘা জমিতে আঠাস ধানের আবাদ করেছেন। ধান কাটতে এখনও ১০/১৫ দিন বাকী। বাতাসের কারণে ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে জমিতে এক গিরা পরিমাণ পানি জমে যাওয়ায় পড়ে যাওয়া ধানগাছ পানিতে ভাসছে। ধান শুয়ে পড়ায় ফলনের বিপর্যয়সহ লোকসানে আশঙ্কা করছেন। প্রতি বিঘায় প্রায় ৪/৫ মণ ধান কম হবে।
চকগ্রাণ গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, জিরা ও আঠাস ধান লম্বা হওয়ার কারণে বাতাসে মাটিতে পড়ে গেছে। আবহাওয়া খারাপের কারণে ২/৩ দিন আগেই কাঁচা ধান কেটে নিলাম। এছাড়া শ্রমিকও সংকট। তিনবেলা খাবার দিয়ে জনপ্রতি ৩৫০-৪৫০ টাকা মজুরি দিতে হয়েছে। মজুরি আরো বাড়তে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কিছু পরিমাণ জমিতে বোরো ধান হেলে পড়েছে। এখন বোরো ধান পাকা ও শক্ত অবস্থায় আছে। আশা করা যায় ফলনের তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করছি ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে অতিসত্ত¡র তারা যেন ধান কেটে নেয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন