শামসুল ইসলাম : মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে ট্রাভেল পাশ আনতে প্রবাসী কর্মীদের গলদঘর্ম পোহাতে হচ্ছে। হাই কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চরম উদাসিনতা ও অবহেলার দরুন ট্রাভেল পাশ হাতে পেতে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রবাসী কর্মীরা। সাগরপথে অবৈধভাবে ট্রলার যোগে মালয়েশিয়ায় যাওয়া চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার অবৈধ কর্মীরা সব চেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছে। বৈধ জাতীয় পরিচয় পত্র, ইউনিয়ন পরিষদের জাতীয়তা সনদপত্র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যায়নপত্র থাকার পরেও অবৈধ কর্মীদের ঢালাওভাবে মায়ানমারের নাগরিক বলে মাসের পর মাস কাগজপত্র যাচাই –বাছাইলের নামে ট্রাভেল পাশ দিতে ঘুরানো হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের ভেতরে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার সাবরাং দক্ষিণ নয়াপাড়া গ্রামের মোকলেসুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আনু মিয়াকে মায়ানমারের লোক বলে অপবাদ দেয়া হলে তিনি টেনশনে হ্রদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাই কমিশনের ভেতরেই ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। এসময়ে উপস্থিত প্রবাসী কর্মীরা হতবাক হন। চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার অবৈধ কোনো কর্মী দেশে চলে আসার লক্ষ্যে ট্রাভেল পাশের জন্য হাই কমিশনে গেলে গণহারে মায়ানমারের লোক বলে র্দুব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কুয়ালালামপুর থেকে একাধিক সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
গত দু’সপ্তাহ যাবত বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়েও ট্রাভেল পাশের জন্য মৃত আনু মিয়া বাংলাদেশ হাই কমিশনে ধরণা দিয়ে চরম হয়রানির শিকার হন। মালয় পুলিশ মৃত আনু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুয়ালালামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তার মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়ী টেকনাফের সাবরং দক্ষিণ নয়াপাড়ায় পৌছলে স্ত্রী মনোয়ারা বেগমসহ সন্তানদের মাঝে মাতাম চলছে। মৃতু আনু মিয়ার চাচা ইসমাইল এতথ্য জানিয়েছেন। গত চার বছর আগে টেকনাফের প্রায় ২০জন যুবকের সাথে আনু মিয়া দালালকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ৮০ জনের একটি ট্রলার যোগে মালয়েশিয়ায় যায়। চাচা ইসমাইল বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ পরিবারের লোক সকল প্রকার বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা কি করে ট্রাভেল পাশ আনতে গেলেই মায়ানমারের লোক বলে তারিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে বাংলাদেশী বৈধ নাগরিকের কাগজপত্র মুহর্ুূতেই যাচাই-বাছাই করা সম্ভব তা’ না করে অসাধু কর্মকর্তারা গণহারে মায়ানমারের লোক বলে চরম হয়রানি করছে। তিনি বলেন, দেশে চলে আসার জন্য মৃত আনু মিয়া ট্রাভেল পাশের জন্য বৈধ কাগজপত্র হাই কমিশনে জমা দিয়ে মাসের পর মাস অহেতুক হয়রানির শিকার হন। তার অকাল মৃত্যুর জন্য যে সব কর্মকর্তারা দায়ী তাদের বিচার করতে হবে। তিনি মৃত আনু মিয়ার লাশ দ্রæত দেশে পাঠানোর জন্য হাই কমিশনারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কুয়ালালামপুর থেকে উখিয়া থানার প্রবাসী জাফর আলী টেলিফোনে ইনকিলাবকে বলেন, কক্সবাজার ও চট্রগ্রাম জেলার কর্মীরা কি বাংলাদেশের নাগরিক নয়। এ দু’টি জেলার অবৈধ কর্র্মীরা হাই কমিশনে ট্রাভেল পাশের জন্য গেলেই তাদের নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ট্রলার যোগে যাওয়া লক্ষাধিক অবৈধ কর্মী রয়েছে। এসব কর্মী দেশে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল পাশ নিতে হাই কমিশনে গিয়ে অহেতুক হয়রানির শিকার হওয়ায় অনেকে নকল কাগজ তৈরি করে বিমান বন্দর দিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি ট্রাভেল পাশ ইস্যু নিয়ে অহেতুক হয়রানি বন্ধের জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নিয়ের জন্য হাই কমিশনারের আশু হস্তক্ষেপ কামান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন