শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

চিঠিপত্র : টাকা আর তদবিরই কি সব?

| প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বর্তমানে বাংলাদেশে যে কোনো সরকারী-বেসরকারী চাকরি, ডিফেন্সে চাকরি, বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরিসহ ইত্যাদি বেশ কিছু চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে চলছে টাকা ও তদবিরের ব্যাপক তোরজোড়। বেশির ভাগের ঘুষ দেওয়ার টাকা ও তদবির করার লোক না থাকাতে যোগ্যতা থাকা শর্তেও চাকরি পাচ্ছে না। অনেকের প্রতিটি স্থানে প্রতারিত হতে হচ্ছে উর্দ্ধতন কেউ পরিচিত নেই বলে। ঘুষ বাণিজ্যে অনেকে হাত না দিতে পেরে চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। শিক্ষার্থীদের কখনো ৩/৪ বছরের চাকরির যোগ্যতা থাকে না। অথচ চাকরি ক্ষেত্রে তারা পূর্ব যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে সদ্য পাসকৃত প্রার্থীকে হার মানিয়ে তদবিরকৃত প্রার্থীকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিচ্ছে। একই কারণে, পরীক্ষায় টিকার পরও শতভাগ নিশ্চিত চাকরি অনেকে পাচ্ছে না। পরিবারের একমাত্র আশার প্রদ্বীপ হয়ে নিজেরই হাজারো হতাশা আর দুশ্চিন্তায় ভুগতে হচ্ছে এসব ভুক্তভূগি চাকরি প্রার্থীকে। অনেকের জীবনের চাকা স্থবীর হয়ে যাচ্ছে এই টাকা ও তদবিরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে। অবশেষে শিক্ষিত বেকারের খাতায় নাম লিখিয়ে আলোর মুখ আর দেখা হচ্ছে না। পরিবারের কারো মুখে হাসি ফুটানোও আর হচ্ছে না। এই ঘুষ বাণিজ্য আর মামা-খালুর তদবির আমাদের শিক্ষিত যুব সমাজকে ধ্বংস করছে, মেধার অবমূল্যায়ন করছে, যোগ্যস্থানে অযোগ্যের স্থান করে দিচ্ছে যা ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ধারাকে সমুলে ধ্বংস করবে এতে কোনো ভুল নেই। অতঃএব সর্বত্র টাকা ও তদবির ব্যবসা বন্ধ করা হোক।
 মোহাম্মদ অংকন
শিক্ষার্থী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং,
ঢাকা।

 
ভেজাল ঠেকাতে হবে
খাদ্যে ভেজালের অন্যতম কারণ নৈতিকতাহীনতা। যারা এ রকম ভেজাল দ্রব্য বাজারজাত করে তারা বিবেকবর্জিত পশু সমতুল্য।
ন্যূনতম নৈতিকতাবোধ থাকলে তারা মানুষের মুখে স্বহস্তে বিষ তুলে দিতে পারত না। ভেজালের মতো জঘন্যতম অপরাধ রোধ করতে সরকারসহ ক্রেতা-বিক্রেতা সবারই ভূমিকা থাকা আবশ্যক।
খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে বিএসটিআই কর্তৃক নিয়মিত খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর খাদ্যদ্রব্যের মান পরীক্ষা করতে হবে। ঘন ঘন মোবাইল কোর্ট কর্তৃক ভেজাল খাদ্যবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে হবে। ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। রেডিও-টেলিভিশনে ভেজালের বিরুদ্ধে ঘন ঘন প্রচারণা চালিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আমাদের দেশে কখনো কখনো সরিষার মধ্যে ভূত খুঁজে পাওয়া যায়। ভেজাল প্রতিরোধে দায়িত্বরত কর্মকর্তারাও কখনো কখনো সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা না করে ভেজালদাতা অসাধুদের সঙ্গে আঁতাত করে থাকেন। ভেজাল প্রতিরোধে সবার চিন্তাধারা পরিবর্তন আবশ্যক।
মাজহারুল ইসলাম লালন, নকলা, শেরপুর।



উপবৃত্তিতে দুর্নীতি
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে সরকার উবৃত্তির মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যয় করছে। তবে অনেক শিক্ষপ্রতিষ্ঠান একাধি প্রকল্পের সুযোগ নিচ্ছে। কোথাও কোথাও ভুয়া ও দ্বৈত উপবৃত্তির মাধ্যমে সেই অর্থ লুটে নেওয়া হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার নির্দিষ্ট ফরমে স্বাক্ষর করিয়ে শিক্ষার্থীকে কম টাকা দিচ্ছে। বেশ কয়েকটি শ্রেণিতে উপবৃত্তি দেওয়া হয়: শিক্ষার্থীদের ক্লাসে গড় উপস্থিতি, পিতা-মাতার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবারের বার্ষিক আয়, পরিবারে উপার্জনক্ষম লোকের সংখ্যা, নির্দিষ্ট পরিমাণ ভূমির মালিকানা, ছাত্রীদের অবিবাহিত হওয়া, পার্বত্য, হাওর ও মঙ্গাপীড়িত এলাকার শিক্ষার্থী, দুস্থ-অসহায় গোষ্ঠী, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, উপার্জনে অসমর্থ বা বিকলাঙ্গ বাবা-মায়ের সন্তান ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা।
কিন্তু দেখা গেছে, উল্লিখিত সব শর্ত মেনে উপবৃত্তি দেওয়া হয় না। কারও ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের আয় না থাকলেও নির্ধারিত শর্তের বেশি জমি রয়েছে। আবার সচ্ছল শিক্ষার্থীদেরও অসচ্ছল উল্লেখ করে শিক্ষকেরা উপবৃত্তি দেন। স্কুলে না এসে বিবাহিত ছাত্রীরা উপবৃত্তি পাচ্ছে। এ রকম চলতে থাকলে সরকারের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। সবকিছু দুর্নীতির কবলে পড়লে আমাদের থাকবে কী?
 মেনহাজুল ইসলাম
দিনাজপুর।

বিচার ও আত্মহত্যা!
বাবা–মেয়ের আত্মহত্যাসংক্রান্ত সংবাদ এবং প্রথম আলোর সম্পাদকীয় বেশ কয়েকবার পড়লাম। বাবা-মেয়ে প্রতিকার চেয়ে দরজায় দরজায় ঘুরেছেন, কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। উল্টো বাবা হজরত আলীকে মানুষের গালমন্দ শুনতে হয়েছে, অপরাধীরা তাঁর গরু চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ¯েøাগান দিয়েছে। হজরত আলী কূলকিনারা না পেয়ে ভয়ে সারা রাত মেয়েকে নিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। তার পরের দিন মেয়ের হাত ধরে খুব স্বাভাবিকভাবে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি।
তাঁদের এই মৃত্যুতে থানা-পুলিশ, চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা–কর্মীসহ অনেকেই নড়েচড়ে বসেছেন। এখন হজরত আলীর বাসায় গিয়ে তাঁরা হাহুতাশ করছেন। শুধু ঠিক সময়ে বিচার ও বিবেচনার অভাব ছিল। এখন সবকিছু উপচে পড়ছে, শুধু নেই হজরত আলী এবং তাঁর শিশুকন্যা। তাঁরা যাঁদের কাছে গিয়েছিলেন বিচারের জন্য, এখন তাঁরাই হজরত আলীর ঘরে আসেন!
মুনিয়া মুন, চট্টগ্রাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন