দখল-দূষেণের শিকারে ঐতিহ্য হারানোর পথে মৎস্য প্রজননের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত মিঠাপানির হালদা নদী। জনশ্রুতি রয়েছে, পাহাড়ি অঞ্চলের সালদা গ্রামের সালদা নামক ছড়া থেকে হালদার নামকরণ। হালদা নদী পার্বত্য অঞ্চল খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি ক্রিক থেকে উৎপন্ন হয়ে পাহাড়ের বাঁক ধরে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম শহরের চাঁদগাঁও হয়ে পড়েছে কর্ণফুলীতে। হালদা নদীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ দেশেই উৎপত্তি হয়ে এ দেশেই শেষ হয়েছে। সে হিসেবে এ নদী সম্পূর্ণপরূপে আমাদের। প্রায় ১০০ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে হালদা নদীতে মিলিত হয়েছে ৩৬টি ছড়া। এর মধ্যে খালের সংখ্যা ১৯টি। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদা বাংলাদেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক জিন ব্যাংক। এ প্রাকৃতিক জিনপুল বাঁচিয়ে রাখার জন্য হালদা নদীর গুরত্ব অত্যাধিক। দেশের রুই কাতলা, মৃগেল, কালিবাউসসহ সব ধরনের কার্প জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস হালদা। হালদা নদী কেবল প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ঐতিহ্য নয়, এটি ইউনেস্কোর শর্ত অনুযায়ী বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের যোগ্যতাও রাখে।
হালদা নদী এবং এর পানির কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য এখানে মাছ ডিম ছাড়তে আসে যা বংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে ভিন্নতর। এ বৈশিষ্ট্যগুলো ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক। ভৌত কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে নদীর বাঁক, অনেকগুলো পাহাড়ি র্ঝণা বা ছড়া প্রতিটি ছড়ার উজানে এক বা একাদিক বিল, নদীর গভীরতা, কম তাপমাত্রা, খরস্রোত এবং অতি ঘোলাত্ব। রাসায়নিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কম কন্ডাক্টিভিটি, সহনশীল দ্রবীভূত অক্সিজেন ইত্যাদি। জৈবিক কারণগুলো হচ্ছে, বর্ষার সময় প্রথম বর্ষণের পর বিল এবং দুকূলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে নদীর পানিতে প্রচুর জৈব উপাদান মিশ্রিত হয়। ফলে পর্র্যাপ্ত খাদ্যের সংস্থান ঘটে। পাহাড়ি ঝর্ণা বিধৌত পানিতে প্রচুর ম্যাক্রো ও মাইক্রো পুষ্টি উপাদান থাকার ফলে নদীতে পর্যাপ্ত খাদ্যাণুর সৃষ্টি হয়। এই সব বৈশিষ্ট্যর কারণে হালদা নদীতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছকে বর্ষাকালে ডিম ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করে। যা বাংলাদেশের অন্যান্য নদী থেকে আলাদা। হালদা নদীর বাঁকগুলোকে অক্সেবো বাঁক বলে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো পানির প্রচন্ড ঘূর্ণন, যার ফলে গভীর স্থানের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে গভীর স্থানগুলোকে কুম বা কুয়া বলা হয়। উজান হতে আসা বিভিন্ন পুষ্টি ও অন্যান্য পদার্থ কুমের মধ্যে জমা হয়। ফলে পানি অতি ঘোলা হয়। মা মাছেরা কুমের মধ্যে আশ্রয় নেয় এবং ডিম ছাড়ে।
বছরের বিশেষ সময় বিশেষ আবহাওয়ায়, বিশেষ তাপমাত্রায় ও লবণসহনীয়তায় কার্প জাতীয় মাছ এখানে ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়টা হচ্ছে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে। এ সময় পূর্ণিমা তিথিতে অঝোর বৃষ্টি ও মেঘের গর্জনের সময় মা মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার এ বিশেষ সময়কে স্থানীয়রা জো বলে। এ জো এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আমবস্যা বা পূর্ণিমা হতে হবে। সেই সাথে প্রচন্ড বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে। এ বৃষ্টিপাত শুধু স্থানীয়ভাবে হলে হবে না, তা নদীর উজানেও হতে হবে। ফলে নদীতে পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। এতে পানি অত্যন্ত ঘোলা ও খরস্রোতা হয়ে ফেনাকারে প্রবাহিত হয়। জো এর সর্বশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, নদীর জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করা। পূর্ণ জোয়ার শেষে অথবা পূর্ণ ভাটার শেষে পানি যখন স্থির হয় তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে। মা মাছেরা ডিম ছাড়ার আগে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প ডিম ছাড়ে। ডিমের অনুকূল পরিবেশ না পেলে মা মাছ ডিম নিজের দেহের মধ্যে নষ্ট করে দেয়।
ডিম সংগ্রহের মৌসুমে হালদার দু’পাড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। দু’পাড়ে সমবেত হয় দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থী। অতীত কাল থেকে হালদা নদীতে উৎসবমুখর এ পরিবেশ চলে আসছে। বিশেষ করে স্থানীয় জেলে ও ডিম সংগ্রহকারীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তারা সারা বছর প্রতীক্ষায় থাকে আনন্দঘন এ সময়ের জন্য। জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি থেকে শুরু হয় ডিম ধরার প্রস্তুতি, এসময় পুকুর তৈরি, কুয়া খনন, নৌকা মেরামত ও পার্টনার সংগ্রহের কাজ চলতে থাকে। মে-জুলাই মাসে ডিম সংগ্রহের পর রেণুর পরিস্ফূরণ, পরিচর্যা, পোনা বিক্রয় চলতে থাকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা বছরের এ ৭/৮ মাস কর্মব্যস্ততায় দিন অতিবাহিত করে।
দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা একটি মা মাছের অবদান পর্যালোচনা করলে বুঝা যায়, হালদা আমাদের জন্য সৃষ্টিকর্তাপ্রদত্ত এক আশীর্বাদ। গবেষকদের মতে, একটি কাতলা মাছ তার তৃতীয় বছর বয়স থেকে পরিপক্বতা লাভ করে ডিম দেওয়া শুরু করে। কাতলা মাছের ডিমের সংখ্যা ১৫ লক্ষ থেকে ৩৫ লক্ষ (৫ কেজি থেকে ২০ কেজি ওজন) সুতরাং গড় সংখ্যা ২৫ লক্ষ।
একটি মা মাছ থেকে এক বছরে চার ধাপে আয় করা যায়। সে মতে, ৫ বছরে অর্থনীতিতে একটি মাত্র মাছের অবদান হিসাব করলে দেখা যায়, মাছটি মোট ১৯ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দান করছে আমাদের অর্থনীতিতে। হালদা নদীতে ১৯৯৮ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ১০ বছরে প্রাপ্ত রেণুর পরিমাণ হিসাব করলে দেখা যায়, গড় রেণু প্রাপ্তির পরিমাণ ৬০৪.৬৪ কেজি (পোনার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৩ লক্ষ ২০ হাজার)। একই পদ্ধতিতে এক বছরে চার ধাপে জাতীয় অর্থনীতিতে হালদার অবদান প্রায় ৮২১ কোটি ১০ লক্ষ ১১ হাজার ২শত টাকা, যা দেশের মৎস্য উৎপাদনের ৬%। সুতরাং সহজেই বুঝা যায়, ডিম সংগ্রহ করে শত শত লোকের জীবিকা অর্জনসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হালদা নদী।
এ নদী মিঠা পানির অন্যতম উৎস। কর্ণফুলীকে ভরা মৌসুমে পঞ্চাশ ভাগ পানি সরবারহ করে এ নদী। জোয়ার-ভাটার এ নদীর মিঠাপানি কর্ণফুলীর লবণাক্ততাকে সহনীয় পর্যায়ে রেখে জনমানবের কল্যাণ করছে শত শত বছর ধরে। এ নদীর পানিই চট্টগ্রাম ওয়াশার মাধ্যমে শোধন করে নগরবাসীর জন্য সরবারহ করা হয়ে থাকে। যে ২২ কোটি লিটার পানি ওয়াসা সরবারহ করে তার শতকরা ষাট ভাগ হলো হালদার পানি। তীরবর্তী কয়েক লাখ মানুষের যাতায়াত ও চাষাবাদ এবং পানি সেচের মধ্য দিয়ে হালদা এ অঞ্চলের মানুষের সুখ সমৃদ্ধির সাথে জড়িয়ে আছে। উভয় পাড়ের মানুষের কৃষিকাজ, জীবন-জীবিকা প্রভৃতি মিলিয়ে বছরে প্রায় ১০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা আয় হয় নদীকে ঘিরে। নদী হিসেবে এককভাবে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে হালদা।
এত গুরত্বপূর্ণ হওয়া সত্তে¡ও নদীটি আজ বিভিন্নভাবে তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে আমাদের খামখেয়ালীপনায় ও সচেতনাতার অভাবে। দখল-দূষণসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন আজ এ নদী। চট্টগ্রাম শহরের ট্যানারি ও বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত কালো বর্জ্য ও বিভিন্ন হাটবাজারের ময়লা আবর্জনা হালদায় গিয়ে পড়ছে এবং ফেলানো হচ্ছে। এতে নদীটি ভরাট হওয়ার পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এ অবস্থা রোধ করা না গেলে অচিরেই এ নদী মৃত নদীতে পরিণত হবে। এ ব্যাপারে হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরীয়া বলেন, ট্যানারি থেকে থেকে যেভাবে দূষিত বর্জ্য হালদা নদীতে পতিত হচ্ছে তাতে হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, হালদাকে রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
অবাধে বালু উত্তোলনে চরম ক্ষতি সাধিত হচ্ছে হালদার। এলাকাভিত্তিক সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট বালি পাচারের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ড্রেজিং মেশিন ও স্ক্যাবেটর দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এ আইনের তোয়াক্কা না করে কোন কোন স্পটে চলছে ড্রেজিং মেশিন ও স্ক্যবেটর দিয়ে বালু উত্তোলন। ফলে ওইসব স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে বড় বড় গর্ত। এ ছাড়া অবাধে বালি উত্তেলনে নদী-খাল নাব্যতা হারাচ্ছে। দু’পাড় ভেঙ্গে পড়ছে। বালু উত্তোলন করে ওইসব চক্র রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও প্রকৃত অর্থে হালদাকে হত্যা করা হচ্ছে।
নদী পাড়ের ইটভাটা, তামাক চাষ, নৌযান চলাচলে পুড়া তেল, নদীর পাড়ে খোলা পায়খানা, চা বাগানগুলো ও চরে চাষাবাদে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে নদীতে এসে পড়াসহ আরো বিভিন্নভাবে হালদা নদী চরম দূষণের শিকার হচ্ছে। হালদার সাথে যুক্ত ১৯টি খালের ১৮টিতে ¯øুইচ গেইট এবং কয়েকটি স্থানে রাবার ড্যাম বসিয়ে পানি প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ১০০ বছরে কাঁটা হয়েছে ১১টি বাঁক। ভালোর জন্য বাঁকগুলো কাটা হলেও তা নদীর জন্য হয়েছে ক্ষতিকর। এসব বাঁকের কারণে পানির ঘুর্ণন ও স্রোতের একটি সম্মিলিত প্রভাবে সৃষ্ট তাপমাত্রায় হালদার কুমে থাকা মা মাছ ডিম পাড়তো। উপরন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চরমভাবে পড়েছে হালদায়। ফলে দিন দিন হালদার পানিতে বাড়ছে লবণাক্ততা। যথাসময়ে বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছে না।
প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট এসব কারণে দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে মা মাছের ডিম দেওয়া। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৪৫ সালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে ৩২ কোটি ৬০ লাখ কেজি, ১৯৪৬ সালে ৫৪ কোটি ৪০ লাখ কেজি পর্যন্ত। ২০১২ সালের মা মাছ ডিম ছাড়ার পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ২৪০ কেজি। তা থেকে সংগ্রহিত রেণুর পরিমাণ ছিল ৩৫৪ কেজি। ২০১৩ সালে কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২০০ কেজি। তা থেকে সংগৃহীত রেণুর পরিমাণ ৭০ কেজি। ২০১৪ সালে বেড়ে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি। সংগৃহীত রেণুর পরিমাণ ২৭৫ কেজি। ২০১৫ সালে কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৮০ কেজি। সংগৃহীত রেণুর পরিমাণ ৪৭ কেজি। ২০১৬ সালে সামান্য পরিমাণে ডিম দিয়েছে মা মাছ। সংগৃহীত রেণুর পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ১২ কেজি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ১ হাজার ৬৮০ কেজি। এভাবে দিন দিন কমছে মাছের রেণু। গত শতকের পঞ্চাশের দশকে দেশে মোট চাহিদার ৭০ ভাগ পূরণ করত হালদা নদীর পোনা। হালদার সমস্যা ঠেকাতে না পারলে যেটুকু রেণু পাওয়া যাচ্ছে হয়তো সেটিও আর পাওয়া যাবে না। অতীতে মলা, কাতালা, চেপচেলা, মৃগেল, দারকিনা, রুই, কালিবাউস, ঘনিয়া, ভাজন, বাটা, কটি, তিতপুঁটি, জাতপুঁটি, তেরী পুঁটি, লেইজ্জা দারকিনা, বালিতোরা, বোয়ালী পাবদা, মধু পাবদা, কোরাল, সইল্লা বা নোনা টেংরা, গুলশা টেংরা, বুজুরী টেংরা, আইর, শিলং, কাজলী, বাচা, গাউরা, বাতাসী, দুই প্রজাতির মাছ বা কাঁটা ফলি, চিতল, কেসকী, চাপিলা, চিরিং, বেলে, ডাহুক, তিন প্রজাতির ফাসা, দুই প্রজাতির ফলে, নারী বা পুতুল, দুই প্রজাতির দারী, লাল চেওয়া, সাদা চেওয়া, বদু বাইদা কুলি, কালো মোরাবাইলা, কাটা মোরাবাইলা, প্রজাতির খংসী, দুই প্রজাতির কুকুর জীবসহ হালদা নদীতে ৭২ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। ইতোমধ্যে ৭২ প্রজাতির মাছের ১৫ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়ার পথে আরো অনেক প্রজাতি। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই নদীটি তার স্বভাবিক চরিত্র হারিয়ে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, হালদাকে বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
অনেক দেরিতে হলেও সরকার হালদাকে পরিবেশগত সংকটপন্ন এলাকা (ইসিএ) ষোষণা করতে যাচ্ছে। পরিবেশগত যদি কোন এলাকার অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়, তখন পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সে এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণার জন্য সুপারিশ করা হয়। ইসিএ ঘোষিত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকাটিকে রক্ষায় অনেকগুলো আইন হয়। সে আইনগুলো মেনে চললে এলাকাটি রক্ষা হয়।
মঞ্জুরল কিবরীয়া বলেন, হালদাকে ইসিএ ঘোষণা দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। দিন দিন মা মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। একই সাথে কমে যাচ্ছে ডিমের পরিমাণ। ইসিএ ঘোষণা হলে বিধি অনুযায়ী হয়তো নদীটি তার নিজস্ব রূপ ফিরে পাবে। আর কোথাও ইসিএ লংঘন হলেও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। শুধু ইসিএ ঘোষণা নয় এ নদীটি রক্ষায় নেওয়া হোক কার্যকর ব্যবস্থাপন পরিকল্পনা। সম্মিলিত পরিকল্পনায় রক্ষা করা হোক হালদাকে। সর্বাগ্রে দরকার আমাদের সচেতনতা। সৃষ্টি করা হোক জনসচেতনতা। তাহলেই হালদা রক্ষা হবে।
লেখক : সাংবাদিক ও গীতিকার, বাংলাদেশ টেলিভিশন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন