রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনিকে ধরতে ইন্টারপোল নোটিশ জারি

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বন্দিদের মাথাপিছু খাবার খরচ ৫৬ টাকা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গের হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক ৬ জন আসামির বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। তারা হলেন-লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এ এম রাশেদ চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) আব্দুর রশীদ, লে. (বাধ্যতামূলক অবসর প্রাপ্ত) আবদুল মাজেদ, রিসালদার (অব:) খান মোসলেমউদ্দিন। একইসঙ্গে খুনিদের দেশে ফিরিযে আনা ত্বরান্বিত করতে টাস্কফোর্স হতে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পলাতক অন্যান্য আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করতে ইন্টারপোল সদস্যভুক্ত দেশসমুহের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে মানিকগঞ্জ-২ আসনের এমপি মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ তথ্য জানান। মন্ত্রী জানান, জাতির পিতার খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করতে ২০১০ সালের ২৮ শে মার্চ আইনমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। ২০১৩ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত দন্ডপ্রাপ্ত খুনিদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে টাস্কফোর্স সর্বাত্বক কার্যক্রম গ্রহণ করে।
মন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে বর্তমান সরকার নতুনভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই টাস্কফোর্সটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত টাস্কফোর্স ইতিমধ্যে একাধিক সভায় মিলিত হয়েছে। তারা জাতির পিতার হত্যা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত খুনিদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপুর্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ছবি সংবলিত তথ্য পাঠিয়ে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও জানান, আসামি লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এ এম রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং আসামি লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীর অবস্থান কানাডাতে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের আইনী জটিলতার কারণে তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে চট্রগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে বিভিন্ন মেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৮৬ জন। তাদের মাথাপিছূ গড়ে ৫৬ টাকা হারে প্রতিদিন খাবার বাবদ ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬শ টাকা ব্যয় হয়।
পুলিশ বাহিনীর নৈতিক মুল্যবোধ নিয়ে বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীর নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানকল্পে পুলিশ সদস্যদের আরও সেবাভাবাপন্ন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশে ও বিদেশে তদন্ত,আইন-শৃংখরা রক্ষা,তথ্য প্রযুক্তিসহ িৈনতকতা বিষয়ে বিভিন্নমুখী প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বরেণ, দেশের অভ্যন্তরিন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী,সারদা পুলিশ স্টাফ কলেজ, ৫টি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাড়াও ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে নৈতিকতা ও শুদ্ধাচার বিষযে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এদিকে নুরুল ইসলাম সুজনের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৮৬ জন। তাদের খাবারের জন্য মাথাপিছু গড়ে ৫৬ টাকা হারে প্রতিদিন আট লাখ ৩৩ লাখ ৬১৬ টাকা ব্যয় হচ্ছে। দেশের কারাগারগুলোতে একেকজন কয়েদির প্রতিবেলার খাবারে সাড়ে ১৮ টাকা ব্যয় হয়।প্রতিদিন কয়েদিদের খাবারে মাথাপিছু ৫৬ টাকা ব্যয় হচ্ছে।
৯০ ভাগ রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গা নারী বাংলাদেশে এসেছে তাদের মধ্যে ৯০ ভাগ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমি সেখানকার অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। গতকাল বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইম্পালস হাসপাতাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ সব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের (বাংলাদেশ) অনেকেও প্রতিবেশী দেশ ভারতে গিয়ে অবস্থান নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ হাজার একর জমিতে এসব রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে দিতে কূটনীতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া ওই সব এলাকার বাসযাত্রীদের পরিচয়পত্র চেক করা হবে। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন জনের সঙ্গে অনিবন্ধিত সিমে যোগাযোগ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সিম দিয়ে সীমান্ত এলাকায় যোগাযোগ করছে। এসব সিমের ব্যাপারে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন