শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিবন্ধ

চিঠিপত্র

| প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পর্যটন শিল্পের সমস্যাবলী
সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশ যেমন মাটির নিচে খনিজ সম্পদে ভরপুর, তেমনি মাটিরে উপরে প্রাকৃতি সম্পদেও ভরপুর, যা দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। সুন্দর এই দেশে পরিচিত অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করে যুগে যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন, এখনও হচ্ছেন। মুগ্ধতার উপাদানের মধ্যে প্রত্মতাত্তি¡ক নিদর্শন- পাহাড়পুর বিহার, বৌদ্ধ বিহার, মহাস্থানগড়; ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার- ষাট গম্বুজ মসজিদ, বড় কাটরা, ছোট কাটরা; পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত- কক্সবাজার; পাহাড়- তাজিওডং, কেওকাডং; অরণ্য- সুন্দরবন; বিল- বৃহত্তর চলনবিল ইত্যাদি অন্যতম। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের শুধু মুগ্ধই করে না, বরং দেশকে ভালবাসতেও শেখায় ।
বাংলাদেশে পর্যটক আকর্ষক এত উপাদান থাকা সত্তে¡ও; প্রতিনিয়ত ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পরেও দেশের জিডিপিতে পর্যটন শিল্প ১.৫ শতাংশের বেশি অবদান রাখতে পারছে না। কিন্তু পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা থাকার পরও জিডিপিতে এত কম অবদান কেন? এর কারণগুলো কি ক্ষতিয়ে দেখা উচিৎ নয়? হ্যাঁ, কারণগুলো ক্ষতিয়ে দেখলে পাওয়া যায়- পর্যটন শ্রম আইন না থাকা। শ্রমিকরা ১০/১২ ঘণ্টা কাজ করে মাসে ৮/১০ হাজার টাকার বেশি বেতন পায় না। ফলে সম্ভাবনা থাকার সত্তে¡ও এ খাতে দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে না। বিসিএস-এ পর্যটন খাতে বিষয়ভিত্তিক দক্ষ নতুন লোক নিয়োগের ব্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটন বোর্ডের কর্মকতারা আগের যুগের চিন্তা-ভাবনা নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু তারা এ খাতে উন্নয়নের কোন সুরাহা করতে পারছেন না। প্রায়ই দেখা যায়, হোটেল-মোটেল কর্মচারীদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। অপরদিকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ আর হরতাল তো আছেই। আরকেটি বিষয় হলো, অনেক হোটেল আছে, যেখানে পর্যটন বিষয় নিয়ে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের ইন্টার্নি করার বিনিময়ে টাকা নেয়। এটা কেমন কথা, হোটেলগুলো আমাদের দেশে ব্যবসা করবে আর আমাদের ছাত্রছাত্রীদের খাটিয়ে নিবে আবার টাকাও দিতে হবে? পর্যটন শিল্পে উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে আরও কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যেমন দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত অসুবিধা, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে পর্যটকরা উদ্বিগ্ন থাকেন, পর্যটন শিল্পের প্রচার এবং প্রসারের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের অভাব, বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকরা ছিনতাইসহ নানা রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। বিশেষত নারী ও বিদেশি পর্যটকরা বেশি সমস্যায় পড়েন। দিনের বেলায় হকারদের উৎপাত ছাড়াও পর্যটন স্পটে জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যের কারণে পর্যটকেরা অনুৎসাহিত হচ্ছেন; যা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে দিন দিন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এসব সমস্যা হতে উত্তরণের জন্য এখনই কাজ করতে হবে, নতুবা পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা আমাদের জন্য কোনো কাজেই আসবে না।
মোহাম্মদ অংকন
লেখক: শিক্ষার্থী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন