জামালপুরের সরিষাবাড়ি পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রুকনকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। রুকুনুুজ্জামান দাবি করেছেন, অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা গাড়িতে করে তাকে চা বাগান এলাকায় ফেলে গেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। দুই দিন নিখোঁজ থাকার পর তাকে উদ্ধার করা হয়। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করে জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের সামন থেকে বুধবার দুপুর সোয়া একটার দিকে রুকুনুজ্জামানকে পাওয়া যায়। তাকে একটি মাইক্রোবাস করে ৪/৫ জন অপরিচিত লোক নিয়ে এসে চোখ বাঁধা অববস্থায় ফেলে যায়। কিছুটা অস্বাভাবিক অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তার পরিচয় জানতে চান। তিনি পরিচয় দিলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে তাকে শ্রীমঙ্গল থানায় নিয়ে যায়। পরে শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রেস বিফিংয়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার জানান কে বা কারা তাকে অপহরন করেছে তা এখন জানা যায়নি। উদ্ধার হওয়া মেয়রও অসংলগ্ন ভাবে একেবার একেক কথা বলছেন। এসময় পুলিশ সুপার জানান তার পরিবারে লোকজন খবর পেয়েছেন উত্তরা থানায় যাওর পর আইনী পক্রিয়া শেষে তার পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ অশোক কানু জানান, তাদের এলাকায় সেনাবাহিনীর মহড়া চলছিল। সকালে একজন লোক এসে বলে, আমাকে বাঁচান। আমি ওই লোকটিকে জিজ্ঞেস করি, আপনি কে? তিনি নিজেকে মেয়র হিসেবে পরিচয় দেন। কোন জায়গার মেয়র জানতে চাইলে তিনি নিজের নাম বলেন। পরে সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা পত্রিকার সাথে ছবি মিলিয়ে নেন। পরে উনাকে নিয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদে বসাই। ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারে বসে থাকা মেয়র মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান রুকনকে খুব অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারিছিলেন না। তিনি শুধু বলেন, আমাকে চোখ বেঁধে কালো হাইএস গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম রোডের বাসা থেকে স্থানীয় পার্কে হাঁটতে যাচ্ছেন বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর থেকে তার খোঁজ মেলেনি। সঙ্গে থাকা তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায় বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।
মেয়র রুকনের স্ত্রী কামরুন্নাহার জানান, ব্যবসায়িক ও অফিসের কাজে ঢাকায় গেলে মেয়র রুকন উত্তরায় ভাড়া নেওয়া ওই বাসায় থাকতেন। সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে বের হওয়ার পর তিনি আর বাসায় ফেরেননি। ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত রুকন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।
নিখোঁজের খবর সরিষাবাড়িতে ছড়িয়ে পড়লে তার সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। সোমবার সন্ধ্যায় মেয়র রুকনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম টুকন উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন (নম্বর-১৬১১)। তিনি বলেন, সরিষাবাড়িতে রাজনীতি, পৌর নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তীতে নানা বিষয় নিয়ে তার অনেক শত্রæ সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে রুকন নিখোঁজ হয়েছে তা বুঝতে পারছি না। তিনি তার ভাইকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত পাওয়ার দাবি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন