১। উরদুন (এশিয়া): উরদুনে পবিত্র ইসলামের অভ্যুদয় ঘটে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর যামানায়ই। ৬২৬ খ্রিস্টাব্দে হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ-এর নেতৃত্বে মুসলিম সেনাবাহিনীর হাতে এ দেশটি বিজিত হয়।
২। আরটেরিয়া (আফ্রিকা): বৃহত্তর আফ্রিকা মহাদেশের অঙ্গরাজ্য আরটেরিয়াকে প্রথমে আবিসিনিয়ার একটি উপকূলীয় প্রদেশ মনে করা হতো বলে তখন মুসলিম সৈন্যরা সেই আরটেরিয়া হয়েই আবিসিনিয়ায় আক্রমণ করেন। হিজরী ৮ম সালের দিকে সেখানকার মানুষ মুসলিম পরিচিতি লাভ করে।
হযরত উসমান (রা.) এর নেতৃত্বে মুসলমানদের এক বিরাট বাহিনী মক্কাবাসীর অবর্ণনীয় জুলুম-অত্যাচার হতে আশ্রয় গ্রহণের উদ্দেশ্যে আবিসিনিয়ার বাদশাহ নাজ্জাশীর নিকট গিয়ে উপস্থিত হন। তখনই নাজ্জাশী পবিত্র ইসলাম গ্রহণে ধন্য হন। পরবর্তী সময়ে খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান আরটেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বিজয় লাভ করেন।
৩। উজবেকিস্তান (এশিয়া): এদেশে হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর যামানায়ই সর্ব প্রথম ইসলামের সূর্য উদিত হয়। উমাইয়া যুগে খোরাসানের গভর্নর সাঈদ ইবনে উসমান উজবেকিস্তানের কিছু কিছু এলাকা দখল করেন। পরবর্তী সময়ে হযরত কুতাইবা ইবনে মুসলিম গোটা দেশটিকে দখল করতে সক্ষম হন।
৪। আজারবাইজান (এশিয়া): এ দেশটি সর্ব প্রথম হযরত উমর ফারুক (রা.) এর খিলাফতকালে মুসলিম আয়ত্বাধীন হয়।
৫। আফগানিস্তান (এশিয়া): ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ফারুক (রা.) এর খিলাফাতকালে আফগানিস্তানের কান্দাহার, শাসান প্রভৃতি এলাকা মুসলিম সেনাবাহিনী দখল করেন। এরপর পরই শাসানী রাজত্বের পতন ঘটে। অতঃপর ইসলামের ৩য় খলীফা হযরত উসমান (রা.) এর খিলাফতকালে আফগানিস্তানের পুরাতন শহর কাবুলসহ মুসলিম সেনাদের আয়ত্বাধীন হয়ে যায়।
৬। আলবেনিয়া (ইউরোপ): খ্রিস্টীয় এগার শতাব্দীর মধ্যে এ দেশে আরব নাবিকদের মাধ্যমে সর্ব প্রথম ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে, পরে তুর্কী খলীফা দ্বিতীয় মাহমুদ এর যামানায় সেখানে মুসলমানদের আধিপত্য স্থাপিত হয়।
৭। মাল জাজায়ের (আফ্রিকা): হিজরী ৬৩ সাল মোতাবিক ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দে হযরত উকবা ইবনে নাফে (রা.) সর্ব প্রথম আফ্রিকার প্রসিদ্ধ এলাকা আল জাজায়ের দখল করতে সক্ষম হন। অতঃপর কালক্রমে সেখানে অধিকাংশ মুসলমানই স্থায়ী অধিবাস গ্রহণ করেন।
৮। আমিরাত (এশিয়া): আজ থেকে প্রায় চৌদ্দশত বছর পূর্বে রাসুল (সা.) এর যামানায়ই আমিরাত নামক এলাকাটি সম্মানিত সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রা.) এর হাতে ইসলামের গÐীভুক্ত হয়ে যায়। ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ফারুক (রা.) এর খিলাফতকালে বৃহত্তর ইরানের বিরুদ্ধে সংগঠিত যুদ্ধে এদেশের লোকজন হযরত উসমান ইবনে আবিল আস (রা.) এর নেতৃত্বে মুসলিম সৈন্যদের সাথে হয়ে অত্যন্ত বীরত্বের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
৯। ইন্দোনেশিয়া (এশিয়া): হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীতে গুজরাটের বণিকদের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ায় পবিত্র ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে, যারা গরম মসলা ইত্যাদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষ হতে ইন্দোনেশিয়ায় যাতায়াত করতেন। খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত এদেশের কিছু কিছু এলাকায় ইসলামী হুকুমতের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, এভাবে খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এসে সারা ইন্দোনেশিয়ায় দ্বীনে ইসলাম ব্যাপক প্রসারতা লাভ করে।
১০। ইরান (এশিয়া): ৬ হিজরী সনে রাসুল (সা.)-এর সময়ে ইরান সম্রাটের নিকট পবিত্র ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পত্র লিখেন। অতঃপর ১৪ হিজরী মোতাবেক ৬৩৫ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সৈন্যরা সেখানে বিজয় লাভ করেন।
১১। বাহরাইন (এশিয়া): রাসুল (সা.) নিজেই বাহরাইনের তৎকালীন শাসক প্রধানকে ইসলামের দাওয়াত প্রদান করে চিঠি লিখেন। পরে তিনি ইসলাম গ্রহণে ধন্য হন এবং সেই সাথে বাহরাইনের বিপুলসংখ্যক মানুষ দ্বীনে ইসলাম কবুল করেন।
১২। বসনিয়া হারজো গোভিনিয়া (ইউরোপ): খ্রিস্টীয় এগার শতাব্দীর মধ্যে আরব নাবিকদের মাধ্যমে সর্বপ্রথম এদেশে ইসলামের আবির্ভাব হয় এবং ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে সেখানে উসমানী রাজত্বের স্বায়ত্বশাসন চলে। পরে উনবিংশ শতাব্দীতে পূর্ব ইউরোপের সাথে এদেশটিও তুর্কী হুকুমতের কবল হতে নিষ্কৃতি লাভ করে এবং পরে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে দেশটি পুনরায় স্বাধীনতা লাভ করে।
১৩। তাজিকিস্তান (এশিয়া): এ দেশে সর্ব প্রথম হিজরী প্রথম শতাব্দীতে ইসলামের অভ্যুদয় ঘটে। তখন মধ্য এশিয়ায় আব্বাসী খিলাফত ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন