দেশের একমাত্র জলা বন বা সোয়াম্প ফরেস্ট সিলেটের রাতারগুল। বনের ভেতর দাপিয়ে বেড়ানো মেছো বাঘ, কাঁঠবিড়ালি, বানর, সাপসহ মোট ২৫ প্রজাতির বন্য প্রাণীর বাসস্থল এই জলাবন হারাতে বসেছে তার বৈশিষ্ট্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দর্শনার্থীদের অবাধ বিচরণ, আর দূষণের কারণে উজাড় হচ্ছে বন, হারিয়ে যাচ্ছে পশুপাখির কলকাকলি। পরিবেশবিদদের মতে, বনটি সংরক্ষণ করে প্রাকৃতিক যাদুঘর ঘোষণা করলে টিকে থাকবে ঐতিহ্য, তৈরি হবে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা।
সিলেট শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দেশের একমাত্র স্বাদুপনির বন রাতারগুল। উত্তরে মেঘালয় থেকে নেমে আসা ¯্রােতস্বিনী গোয়াইন নদী, দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে জলা বন রাতারগুল। যা বিশ্বের ২২টি সোয়াম্প ফরেস্টের একটি। ৩হাজার ৩শ ২৫ দশমিক ৬১ একর আয়তনের এই বনের ৫শ’ ৪ একর এলাকাকে ১৯৭৩ সালে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। অনিন্দ্যসুন্দর বিশাল এ বনের সঙ্গে তুলনা চলে একমাত্র অ্যামাজনের। গাছগাছালির বেশিরভাগই বছরের ৪ থেকে ৭ মাস বা বর্ষা মৌসুমে থাকে পানির নিচে। এখানে প্রাকৃতিক বন হলেও বেত, কদম, হিজল, মুর্তাসহ নানা জাতের পানি সহিষ্ণু গাছ লাগিয়েছে বন বিভাগ।
পরিবেশকর্মী আশরাফুল কবীর বলেন, এই বনে একসময় দাপিয়ে বেড়ানো মেছোবাঘ, বানর, বনবিড়াল, মাছরাঙা, টিয়া, বুলবুলির কলকাকলি, নানা প্রজাতির সাপের বিচারণ এখন আর চোখে পড়েনা। মারা যাচ্ছে বনের নানা প্রজাতির গাছও। তবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বনের বৈশিষ্ট্য দিন হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই পরিবেশকর্মী। পাশাপাশি বনটিকে সংরক্ষণের জন্য দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দেন পরিবেশবাদীরা।
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, রাতারগুল সংরক্ষণের জন্য যা যা করণীয় তার সব উদ্যোগ নেয়া হবে। বন সংরক্ষণের পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে পারলে এ অঞ্চলটি পর্যটন শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন