প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরল হুদা বলেছেন, ব্যক্তি হিসেবে এবং দলনেতা হিসেবে জিয়াউর রহমান ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। তার হাত দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি প্রায় ৯ বছর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছে। পরে ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। গতকাল রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে বিএনপির সাথে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ইসি বলেন, জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়। তাতে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যুক্ত হন। এর মধ্য দিয়ে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বেলা ১১টায় সিইসির সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে বিএনপির সঙ্গে বসে দলটির নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সংলাপের শুরুতে লিখিত সূচনা বক্তব্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপির ভ‚মিকা তুলে ধরেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে ২১০ আসনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। সংলাপে অংশ নেয়া বিএনপি নেতাদের সম্পর্কে সিইসি বলেন, আজকের সংলাপে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের অনেকেই সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে সংসদ পরিচালনা করেছেন। অনেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনার ভ‚মিকা রেখেছেন। বিএনপি সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে নূরুল হুদা বলেন, দেশ পরিচালনাকালে বিএনপি সরকার দেশে বহুবিদ নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলককরণ, পৃথক প্রাথমিক গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, আইন কমিশন গঠন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরে উন্নীতকরণসহ অনেক উন্নয়ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম বিএনপি সরকার করেছে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাদের সফল রাষ্ট্রপরিচালনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দল পরিচালনায়ও তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আজকের সংলাপের দিকে জাতি তাকিয়ে রয়েছে। নির্বাচন কমিশন অধীর আগ্রহ অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে, অতি ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করছে। কমিশন বিএনপির সঙ্গে সফল সংলাপ প্রত্যাশা করে বলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মন্তব্য করেন। রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে বিএনপি সরকার দেশে প্রকৃত নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি এখন সংসদের বাইরে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হলে তা মেনে না নেয়ার কথা বলে আসছেন বিএনপি নেতারা। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলে আসছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে, এ বিষয়ে তিনি আশাবাদী। সংলাপের সূচনায় বিএনপিকে সফল রাষ্ট্রপরিচালনার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকা একটি বৃহৎ’ রাজনৈতিক দল হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, জমিরউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, তরিকুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আব্দুর রশিদ সরকার, এম আব্দুল হালিম এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন