রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

পেরুতে বিশ্বকাপের বৃত্তপূরণ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

৩২তম ও শেষ দল হিসেবে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট হাতে পেয়েছে পেরু। গতকাল প্লে-অফের দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের চুড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। সর্বশেষ যাদের বিশ্বমঞ্চে দেখা গিয়েছিল ১৯৮২ সালে।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে পঞ্চম স্থানে থেকে প্লে-অফে খেলার সুযোগ পায় পেরু। প্রথম পর্বেই পেরুর বিশ্বকাপ ভাগ্য অনেকটাই লেখা হয়ে গিয়েছিল। ওয়েলিংটনে নিজেদের মাঠে পেরুকে পরাস্থ করতে পারেনি এশিয়া অঞ্চল থেকে প্লে অফের সুযোগ পাওয়া নিউজিল্যান্ড। পেরুর রাজধানী লিমায় উচ্চতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তারা যে পেরে উঠবে না তা অনুমিতই ছিল। হয়েছেও তাই। গোল তো দুরে থাক পেরুর গোলমুখ বরাবরই তারা শট নিতে পারেনি একটিও। অধিকাংশ সময় বলের দখল রেখে প্রত্যাশিত জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধে জোরালো শটে স্বাগতিক দলকে এগিয়ে নেন জেফারসন ফারফান। গোলের পরই সতীর্থ পাওলো গুয়েরেরোর জার্সি নিজের মাথায় পেচিয়ে উদযাপন করেন। ড্রাগ টেস্টে পজেটিভ হওয়ায় গত সেপ্টেম্বরে নিষিদ্ধ হন গুয়েরেরো। দ্বিতীয়ার্ধে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ক্রিশ্চিয়ান রামোস। ম্যাচ শেষে দলের মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান কুয়েভা উচ্ছ¡াস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ছোটবেলার স্বপ্ন। ইতিহাস গড়তে পারাটা সব সময়ই খুব আবেগঘন। দীর্ঘ সময় আমরা এমন কিছু অর্জন করতে পারিনি। এখন আমরা এটা উদযাপন করব।’
ফিফা র‌্যাঙ্কিয়ের দশম দল পেরু। সেই দলটিই কিনা প্রায় তিন যুগ অনুপস্থিত বৈশ্বিক ফুটবলের আসরে। এতদিন পর যাদের কল্যাণে আবারো বিশ্বমঞ্চে ফেরা টুইট বার্তাই তাদের অভিনন্দন জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পাবলো কুজিনস্কি, ‘বিশ্বকাপে ফিরতে আমরা ৩৫ বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করেছি। এমন আনন্দ উপহার দেয়ার জন্য যোদ্ধাদের ধন্যবাদ।’
পেরুবাসীর উদযাপনও ছিল চোখে পড়ার মত। ম্যাচ চলাকালীন সময়ে পুরো গ্যালারি ছিল লাল-সাদা জার্সিতে সজ্জিত। ম্যাচ শেষে মাঠের উদযাপন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী লিমার অলিগলি থেকে শুরু করে বড় বড় মল, রেস্টুরেন্ট সবখানে। আতসবাজি আর নাচাগানায় পুরো রাজধানী ছিল মাতোয়ারা। যেন বিশ্বকাপের মূলপর্বে নয়, বিশ্বকাপটাই জিতে নিয়েছে তারা। এই উপলক্ষে গতকাল দেশটিতে সরকারী ছুটিও পালন করা হয়।
টিম হোটেলের বাইরে আতশবাজির ঝলকানি ও শব্দের কারণে ভালভাবে ঘুমাতে পারেনি সফরকারী কিউইরা। দলের কোচ এন্থনি হাডসন বলেন,‘ পেরুর জাতীয় দলের অবস্থান থেকে একটু দুরে হোটেলটির অবস্থান হলে আমরা ভালবাবে ঘুমাতে পারতাম। তাহলে প্রতিপক্ষ দলকে হারানোর সুযোগ সৃস্টি হতো। আমরা পর্যাপ্ত ভাবে ঘুমাতে পারিনি। আগামীতে আমরা পেরুর হেটেল থেকে একটু দুরেই অবস্থান করব।’
বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ের ১২২তম অবস্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপের মূলপর্বে পা রাখার। কিন্তু সেই সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেনি। একমাত্র সুযোগটি তৈরী করেছিলেন দলের স্টাইকার ক্রিস উড। কিন্তু ম্যাচের অন্তিম মহূর্তে তার নেয়া শট গোল লাইনের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে কোচ হাডসন বলেন,‘ আমি আমার দলকে নিয়ে গর্বিত। যে কেউ এই খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্ববোধ করতে পারেন। কারণ তারা যা করেছে তা বলতে গেলে অসাধারণ। আজ রাতেও তারা দারুন খেলেছে। বেশ কয়েকজন গুরুত্বপুর্ন খেলোয়াড় ইনজুরিতে থাকা সত্তে¡ও ছেলেরা এখানে প্রতিপক্ষ দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল।’
পেরু ২ : ০ নিউজিল্যান্ড
(দুই লেগ মিলে পেরু ২-০ গোলে জয়ী)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন